Married

১৬ বছরে বিয়ে, দু’বছর পরেই বিচ্ছেদ, ২৩-এর খুশবুর গল্প সুপারহিরোর মতোই রোমাঞ্চকর

প্রতি দিন গায়ে বেল্টের দাগ বা লাঠির আঘাত নিয়ে স্কুল যেতে লজ্জা করত তাঁর। ওই বয়সেও একেক সময়ে মনে হত এর থেকে মরে যাওয়া ভাল।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২১ ১৬:২৫
Share:
০১ ২১

সুপারহিরোদের কার্যকলাপ দেখতে নিশ্চয়ই সিনেমা হলে যান। একটু খেয়াল করে দেখলে কিন্তু বাড়ির পাশেও তাঁদের দেখা পেতে পারেন। মুম্বইবাসী ২৩ বছরের খুশবু গয়াল তেমনই এক ‘ওয়ান্ডার উওম্যান’। এক অতিমানবী।

০২ ২১

গেল গ্যাডট অভিনীত ওই অতিমানবীর চরিত্রটির মতো কবচ কুণ্ডল তাঁরও আছে। তবে ধাতব মুকুট বা মণিবন্ধে নয়। খুশবুর শিরোস্ত্রাণ এবং বর্ম তাঁর হার না মানা জেদ আর মনের জোর।

Advertisement
০৩ ২১

২৩ বছরের খুশবুর ৬ বছরের একটি ছেলে আছে। ১৬ বছরে বিয়ে হওয়ার ৮ মাসের মধ্যেই অন্ত্বঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিলেন তিনি।

০৪ ২১

তার কিছু দিন পরেই আবার সদ্য মা হওয়া খুশবু ও তাঁর সন্তানকে ছেড়েও দেন তাঁর স্বামী।

০৫ ২১

১৮ বছর বয়সে ছেলেকে নিয়ে মায়ের কাছে চলে আসেন খুশবু। তখন থেকেই তার লড়াই শুরু। ছেলেকে মানুষ করে তোলার জন্য যে নিজেকে গড়ে তোলা জরুরি তা তখনই বুঝেছিলেন তিনি।

০৬ ২১

আর্থিক অসচ্ছল পরিবারে জন্ম খুশবুর। প্রতি মুহূর্তে বাবা-মায়ের অশান্তি দেখে বড় হয়েছেন। মত্ত বাবা প্রায়শই মাকে মারধর করতেন। কখনও সেই মার এসে পড়ত তাঁর গায়েও।

০৭ ২১

খুশবু জানিয়েছেন, প্রতি দিন গায়ে বেল্টের দাগ বা লাঠির আঘাত নিয়ে স্কুল যেতে লজ্জা করত তাঁর। ওই বয়সেও একেক সময়ে মনে হত এর থেকে মরে যাওয়াও ভাল।

০৮ ২১

তা-ও পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ক্লাস টেন পাশ করার আগেই তাঁর বিয়ে দিয়ে দেন বাবা-মা।

০৯ ২১

বয়সে ১০ বছরের বড় মাসির ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয় খুশবুর। শর্ত ছিল খুশবুর হাইস্কুলের পড়াশোনার ব্যবস্থা করবেন তিনিই। যদিও শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে ওঠেনি।

১০ ২১

অনেক আশা নিয়েই বেঙ্গালুরুতে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে চলে আসেন খুশবু। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই বুঝতে পারেন, তাঁর পড়াশোনায় কারও কোনও আগ্রহ নেই। বরং খুশবুকে বুঝিয়ে দেওয়া হয় শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের খুশি করাই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত।

১১ ২১

স্বামীও তাঁর পাশে দাঁড়াননি। বিয়ের প্রথম দিকে তাঁকে পড়াশোনায় উৎসাহ দিলেও পরে খুশবু বুঝতে পারেন স্বামীর কাছে তিনি শুধুই একখানি শরীর।

১২ ২১

এর মধ্যেই খুশবু অন্তঃসত্ত্বাও হয়ে পড়েন। ২০১২ সালের মে মাসে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। ২০১৩-র অগস্টে ছেলের জন্ম দেন তিনি। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৭।

১৩ ২১

১৮-এ তাঁর জীবনে আরও একটি ঘটনা ঘটে যায়। ছেলে হওয়ার পর মায়ের কাছে থাকছিলেন খুশবু। হঠাৎই খবর পান তাঁর স্বামী অন্যত্র বিয়ে করেছেন। সেই খবর খুশবু বা তাঁর পরিবারকে নিজে জানানোরও প্রয়োজন বোধ করেননি তিনি।

১৪ ২১

ওই বয়সে নিজের খরচ চালানোর ক্ষমতা বা অভিজ্ঞতা কোনওটাই ছিল না সদ্য মা হওয়া তরুণীর। তবে ছেলের জন্য শুরু হয় তাঁর লড়াই।

১৫ ২১

খুশবু বুঝতে পারেন, ছেলেকে মানুষ করতে হলে তাঁরও উন্নতির প্রয়োজন। তাই পড়াশোনা শুরু করেন।

১৬ ২১

মা তাঁকে সাহায্য করছিলেন। তবে ছেলেকে সামলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সহজ ছিল না। সব দিক সামলেই দ্বাদশ পাশ করেন খুশবু।

১৭ ২১

এর সঙ্গেই ছেলের খরচ চালানোর জন্য নানারকম কাজ করতে শুরু করেন। কয়েক জন বন্ধু প্রায় জোর করেই তাঁকে গ্রাফিক ডিজাইনিংয়ের একটি কোর্সে ভর্তি করিয়েছিলেন। সেই শিক্ষাই কাজে আসে। গ্রাফিক ডিজাইনের দক্ষতার জন্য একটি চাকরিও পেয়ে যান খুশবু।

১৮ ২১

এখন অবশ্য তিনি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হয়ে কাজ করছেন। স্নাতক হয়ে এ বার স্নাতকোত্তরের পড়াশোনা করছেন খুশবু।

১৯ ২১

খুব শিগগিরই সমাজসেবায় তাঁর স্নাতকোত্তর সম্পূর্ণ হবে। সেই ডিগ্রি তাঁর আত্মবিশ্বাসকে আরও বাড়াবে বলে মনে করেন খুশবু।

২০ ২১

খুশবুর ছেলেন নাম আজান। মানে প্রার্থনা। তবে জীবনের কাছে কোনও প্রার্থনা নেই খুশবুর।

২১ ২১

বরং তিনি মনে করেন, নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতেই নেওয়া উচিত। অতীত যতই যন্ত্রণাদায়ক হোক না কেন নতুন শুরু করার কোনও শেষ নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement