বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় ভারতের অবস্থান ফের এক বার স্পষ্ট করল নয়াদিল্লি। সংখ্যালঘুদের অত্যাচারের অভিযোগের ক্ষেত্রে কোনও ভেদাভেদ না-করে প্রতিটি ঘটনায় বিশদ তদন্ত করুক বাংলাদেশের প্রশাসন। শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জওসওয়াল। ভারতের বক্তব্য, সে দেশে হত্যা, অগ্নিসংযোগ এবং হিংসার প্রতিটি ঘটনায় সব অভিযুক্তকে বিচারের আওতায় আনা হোক। একই সঙ্গে কিছু ‘হিংস্র কট্টরপন্থী’র জেলমুক্তি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের বেশ কিছু অভিযোগ উঠে এসেছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, গত বছরের ৫ অগস্ট থেকে চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মোট ২৩৭৪টি অভিযোগ উঠেছে। তার মধ্যে ১২৫৪টি অভিযোগ সে দেশের পুলিশ যাচাই করে দেখেছে। ওই যাচাই করা অভিযোগগুলির মধ্যে ৯৮ শতাংশই রাজনৈতিক কারণে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের বক্তব্য, ঘটনাগুলিকে এই ভাবে আলাদা না-করে বিশদ তদন্ত করে দেখা হোক। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের। এ কথা আমরা বার বার বলে আসছি।”
সম্প্রতি বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি যৌথ ভাবে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছে। নতুন দলের নাম দেওয়া হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বাংলাদেশের ওই নতুন দলের প্রসঙ্গও ওঠে জয়সওয়ালের সাংবাদিক বৈঠকে। নতুন দল প্রসঙ্গে প্রশ্নে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জানান, ভারত সবসময় স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রগতিশীল বাংলাদেশের পক্ষে, যেখানে গণতান্ত্রিক উপায়ে এবং নির্বাচনের মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হবে। তবে সে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিল্লির উদ্বেগের কথাও জানিয়েছেন তিনি। বিশেষ করে গুরুতর অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত কিছু ‘হিংসাত্মক কট্টরপন্থী’র ছাড়া পাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও মনে করছেন তিনি।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত যে কূটনৈতিক স্তরে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায়, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন জয়সওয়াল। সম্প্রতি বাংলাদেশের এক প্রতিনিধিদল ভারতে এসেছিল। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে ওই সময়ে। জয়সওয়াল জানান, বাংলাদেশবাসীর সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের জন্য উন্নয়নমূলক ক্ষেত্রে সহযোগিতা একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে কিছু প্রকল্পের গতিতে প্রভাব পড়েছে। সেগুলি নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে বলেও জানায় বিদেশ মন্ত্রক।