পাকিস্তান দিবস নিয়ে নরম-গরম নীতি দিল্লির

পাকিস্তান দিবসের অনুষ্ঠান ঘিরে ফের কিছুটা পারদ চড়ল ভারত-পাক সম্পর্কের। কিন্তু আপাতত একই সঙ্গে নরম ও গরম কূটনীতির পথে চলার নীতি নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। আগে পাক হাইকমিশনার আব্দুল বাসিতের সঙ্গে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতাদের বৈঠকের পরে ভারত-পাক সম্পর্ক ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছিল মোদী সরকার। বন্ধ হয়েছিল দু’দেশের বিদেশসচিব পর্যায়ের বৈঠক। সম্প্রতি সার্ক যাত্রার অঙ্গ হিসেবে পাকিস্তান যান বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৫ ০৩:৫১
Share:

পাকিস্তান দিবসে অনুষ্ঠান প্রাঙ্গনে আসছেন পাক প্রেসিডেন্ট মামনুন হুসেন। ইসলামাবাদে। ছবি: এএফপি।

পাকিস্তান দিবসের অনুষ্ঠান ঘিরে ফের কিছুটা পারদ চড়ল ভারত-পাক সম্পর্কের। কিন্তু আপাতত একই সঙ্গে নরম ও গরম কূটনীতির পথে চলার নীতি নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

আগে পাক হাইকমিশনার আব্দুল বাসিতের সঙ্গে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতাদের বৈঠকের পরে ভারত-পাক সম্পর্ক ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছিল মোদী সরকার। বন্ধ হয়েছিল দু’দেশের বিদেশসচিব পর্যায়ের বৈঠক। সম্প্রতি সার্ক যাত্রার অঙ্গ হিসেবে পাকিস্তান যান বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর। ফলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ফের কিছুটা আদানপ্রদান শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহে পর পর দু’দিন জঙ্গি হামলা হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরে। কিন্তু পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিলেও এখনই সম্পর্ক ফের ঠান্ডা ঘরে পাঠাতে রাজি নয় নয়াদিল্লি। তাই আজ দিল্লির পাক হাইকমিশনে পাকিস্তান দিবসের অনুষ্ঠানে হুরিয়ত নেতাদের উপস্থিতিকে প্রকাশ্যে খুব বেশি গুরুত্ব দেয়নি তারা। বরং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মর্যাদা রাখতে ওই অনুষ্ঠানে মিনিট পনেরোর জন্য যান বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ও প্রাক্তন সেনাপ্রধান ভি কে সিংহ।

পাশাপাশি পাকিস্তানকে সন্ত্রাসও কাশ্মীর প্রশ্নে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়েনি ভারত। পাকিস্তান দিবসেসে দেশের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে শুভেচ্ছা বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, “পাকিস্তানের সঙ্গে বকেয়াদ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলি আলোচনার মাধ্যমে মেটানো তখনই সম্ভব যখন চারপাশে হিংসা এবং সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হবে।” কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ জানান, পাকিস্তান দিবসে তারা কাকে আমন্ত্রণ করবে তা ইসলামাবাদের ব্যাপার। কিন্তু কত দিন সন্ত্রাসের জন্য সীমান্ত রক্তে লাল হবে সেই প্রশ্নের জবাব দিক পাকিস্তান।

Advertisement

গত কাল রাতেই পাক হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেন সৈয়দ আলি শাহ গিলানি, মিরওয়াইজ ওমর ফারুকের মতো বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা। সম্প্রতি সন্ত্রাসের মামলায় অভিযুক্ত হুরিয়ত নেতা মাসরাত আলমকে মুফতি মহম্মদ সঈদ সরকার মুক্তি দেওয়ায় দেশ জুড়ে বিতর্ক শুরু হয়। সেই আলমকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিল পাক হাইকমিশন। আলম অবশ্য আসেননি। তার পরেই আব্দুল বাসিত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বলেন, “হুরিয়ত নেতাদের আসা নিয়ে ভারতের কোনও সমস্যা রয়েছে বলে আমার মনে হয় না।” কাশ্মীর প্রসঙ্গও খুঁচিয়ে দেন পাক দূত। দু’দেশের মধ্যে কাশ্মীরই যে বকেয়া সমস্যা তা মনে করিয়ে দেন তিনি।

পাক দূতের বিবৃতিরকড়া জবাব দেয় সাউথ ব্লক। বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ভারত নিজের কথা নিজেই বলতে পারে। হুরিয়ত নিয়ে দিল্লির অবস্থান এত ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছেযে ভুল বোঝার অবকাশ নেই। হুরিয়তের সঙ্গে বৈঠকের পরেকাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলেছেন পাক দূত। সেই বক্তব্যকে কটাক্ষ করে বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, “ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বকেয়া বিষয়গুলি মেটাতে কোনও তৃতীয় পক্ষের (হুরিয়ত) প্রয়োজন নেই। সিমলা চুক্তি ও লাহৌর ঘোষণার কাঠামোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই সেগুলি মেটানো সম্ভব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন