হিন্দুস্তানের নাগরিক হিন্দু- এই মন্তব্যে ক’দিন আগে ঝড় তুলেছিলেন মোহন ভাগবত। এ বার এক ধাপ এগিয়ে হিন্দুদের সংগঠিত করার কথা বললেন তিনি। সামনেই কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে হিন্দু ভোটকে সংগঠিত করতে আরএসএস প্রধান উদ্যোগী হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
কাল মুম্বইয়ের এক অনুষ্ঠানে ভাগবত বলেন, “হিন্দুত্ব আমাদের দেশের প্রতীক। পাঁচ বছরে হিন্দুদের মধ্যে সাম্য আনতে আমাদের কাজ করতে হবে।” তাঁর কথায়, “এক জায়গায় সব হিন্দুকে জল খেতে হবে। একই ধর্মস্থলে তাঁদের প্রার্থনা করা উচিত। এমনকী মৃত্যুর পর একই জায়গায় সকলের শেষকৃত্য হওয়া উচিত।” নিজের মন্তব্যে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ভাগবত। কিন্তু তিনি যে আপাতত হিন্দু ভোট সংগঠিত করার কৌশল থেকে সরছেন না তা সাফ বুঝিয়ে দিয়েছেন সঙ্ঘ প্রধান।
মুসলিম ভোট অনেক ক্ষেত্রে সংগঠিত হলেও হিন্দু ভোট জাতপাতের ভিত্তিতে ভাগ হয়ে যায় বলে দীর্ঘ দিন ধরেই মনে করে বিজেপি ও সঙ্ঘ। মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানার বিধানসভা ভোটে জাতপাতের ভিত্তিতে হিন্দু ভোট ভাগ রুখতেই ভাগবত আসরে নেমেছেন বলে জানান এক বিজেপি নেতা। তাঁর কথায়, “কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী উন্নয়নের কথা বলছেন। কিন্তু কেবল সেই কৌশলে হিন্দু ভোট বিভাজন আটকানো যাবে না। তাই সঙ্ঘকে হিন্দুদের মধ্যে সাম্যের কথা বলতে আসরে নামতে হয়েছে।”
বিজেপি নেতাদের মতে, সংখ্যালঘু ভোট বিজেপি প্রত্যাশা করে না। কিন্তু লোকসভা ভোট দেখিয়েছে, হিন্দুদের ভোটেই কেন্দ্রে ক্ষমতা দখল সম্ভব। তাই সঙ্ঘ এখন হিন্দু ভোটকে সংগঠিত করতে চাইছে। দলিতদের মন জয় করতে চাইছে। উত্তরপ্রদেশে অমিত শাহ ঠিক এই কাজটিই করতে পেরেছিলেন। ভোটের সময়ে এক বার এই ধরনের মন্তব্য করে কমিশনের কোপে পড়েছিলেন। এখন অমিত বিজেপি সভাপতি। ফলে তাঁর পক্ষেও বিতর্কিত মন্তব্য করা কঠিন। তাতে মোদীর উপরে আঁচ পড়বে। তাই হিন্দু ভোট বিভাজন আটকানোর ভার নেন সঙ্ঘ প্রধান।
বিজেপি-সঙ্ঘের এই কৌশল নিয়ে সুর চড়াচ্ছেন বিরোধীরা। কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহের কথায়, “আগে একজন হিটলার তৈরি হচ্ছিল। এখন আর একজন হিটলারও তৈরি হচ্ছেন। রাজনীতিতে ধর্ম এনে নির্দোষ মানুষকে বোকা বানানো বন্ধ করা উচিত আরএসএসের।” উত্তরপ্রদেশের সাম্প্রতিক গোষ্ঠী সংঘর্ষের পিছনে বিজেপিরই হাত রয়েছে বলে অভিযোগ সপার। দলের মুখপাত্র রাজেন্দ্র চৌধুরী বলেন, “বিভাজনের রাজনীতি উস্কে দিতেই এমন বলছেন আরএসএস প্রধান।” সিপিএম একই অভিযোগ করেছে।