আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানি। —ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদী নাম করেননি। হার্ট অব এশিয়া সম্মেলনে সন্ত্রাস প্রসঙ্গে তিনি ঘুরিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন পাকিস্তানকে। কিন্তু আফগান প্রেসডিনেট আশরফ ঘানি কোনও রাখঢাক করলেন না। অমৃতসরে আয়োজিত সম্মেলনে উপস্থিত পাক প্রতিনিধি সরতাজ আজিজকে নাম ধরে সম্বোধন করে প্রেসিডেন্ট ঘানির পরামর্শ, আফগানিস্তানকে অর্থসাহায্য দিতে হবে না, সে টাকা সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযানে খরচ করুন।
তালিবান হানায় আফগানিস্তান অবিরাম আক্রান্ত হচ্ছে। তালিবানদের শিবিরগুলি সে দেশের মাটি থেকে উৎখাত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানে ঘাঁটি গেড়ে তালিবানরা আফগানিস্তানে ক্রমাগত নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে। পাকিস্তানের সেনা আমেরিকার চাপে কয়েক বছর আগে তেহরিক-এ-তালিবান অর্থাৎ পাক তালিবানদের বিরুদ্ধে অভিযান চালালেও, আফগান তালিবানদের বিরুদ্ধে তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে পাক ভূখণ্ডকে আফগান তালিবানরা নিরাপদ আশ্রয়ই মনে করছে। প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানি রবিবার অমৃতসরে এ বিষয়টি নিয়ে ফের পাকিস্তানকে সতর্ক করলেন। তিনি এ দিন জানান, গত এক বছরে আফগানিস্তানেই সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ঘানি এর পর বলেন, ‘‘এটা মেনে নেওয়া যায় না। অনেকে এখনও সন্ত্রাসবাদীদের নিরাপদ আশ্রয় দিচ্ছেন। এক জন তালিবান নেতা সম্প্রতি নিজেই বলেছেন, পাকিস্তান তাঁদের নিরাপদ আশ্রয় না দিলে, তাঁদের পক্ষে এক মাসও টিকে থাকা সম্ভব হত না।’’
হার্ট অব এশিয়া সম্মেলনে উপস্থিত বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সামনেই পাকিস্তান সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ঘানির এই মন্তব্য পাক প্রতিনিধি সরতাজ আজিজের পক্ষে নিঃসন্দেহে অস্বস্তিকর ছিল। কিন্তু আজিজের অস্বস্তি সেটুকুতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। কারণ আফগান প্রেসিডেন্ট এ দিন সরাসরি তাঁকে নাম ধরে সম্বোধন করেই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ঘানি বলেন, ‘‘সীমান্ত পেরিয়ে কী ভাবে সন্ত্রাস আসছে, সেটা আমাদের চিহ্নিত করা দরকার এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য তহবিল দরকার। আফগানিস্তানের উন্নয়নের জন্য পাকিস্তান ৫০ কোটি ডলার দেবে বলেছে। মিস্টার আজিজ, এই টাকাটা জঙ্গি বিরোধী অভিযানে খরচ করলেই ভাল হবে।’’
আরও পড়ুন: নিশানা শুধু জঙ্গিরা নয়, মদতদাতারাও, হার্ট অব এশিয়ায় বার্তা মোদীর
আফগান প্রেসিডেন্ট এ দিন বলেন, তিনি দোষারোপের খেলায় মাততে চান না। কিন্তু সীমান্তের অন্য পার থেকে যে ভাবে সন্ত্রাস রফতানি করা হচ্ছে, তা নিয়ে স্পষ্ট আলোচনা হওয়া উচিত বলেই তিনি মনে করেন।