অপহরণকারী যুবক রোহিত আর্য। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হল অপহরণকারী যুবকের। মুম্বইয়ের পওয়াইের একটি স্টুডিয়োয় ১৭ শিশুকে পণবন্দি করে রেখেছিলেন রোহিত আর্য নামে ওই যুবক। পুলিশ সূত্রে খবর, শিশুদের উদ্ধার করতে গেলে তাদের লক্ষ্য করে এয়ার গান থেকে গুলি চালান রোহিত। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশও। তাতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন অভিযুক্ত যুবক। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় অপহরণকারী ওই যুবকের।
পুলিশ সূত্রে খবর, পওয়াইয়ের ওই স্টুডিয়োয় অভিনয়ের ক্লাস হত। অডিশনও চলত। বৃহস্পতিবারও অডিশন দিতে এসেছিল প্রায় একশো শিশু। বেশির ভাগকেই চলে যেতে বলেন রোহিত। তবে ১৭ জন শিশুকে আটকে রাখেন। তার পর ভিডিয়োবার্তায় হুমকি দেন, তাঁর দাবি না মানা হলে পরিণতি ভয়াবহ হবে। শিশুদের মৃত্যুর জন্য তিনি দায়ী থাকবেন না। গোটা স্টুডিয়োয় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ পণবন্দির খবর পায় তারা। তার পরই অপহরণকারীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তাঁর দাবিদাওয়া শুনতে চাওয়া হয়। তাঁকে অনুরোধ করা হয়, শিশুদের যেন অবিলম্বে মুক্তি দেন। কিন্তু অপহরণকারী শিশুদের মুক্ত করতে রাজি হননি বলে পুলিশের দাবি। পাল্টা তিনি শিশুদের ক্ষতি করার হুমকি দেন। শেষমেশ পুলিশ কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে স্টুডিয়োর ভিতরে ঢোকে। পুলিশকে দেখেই এয়ার গান থেকে গুলি চালাতে শুরু করেন অপহরণকারী। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশও। তখনই গুলিবিদ্ধ হন অভিযুক্ত যুবক।
শিশুদের পণবন্দি করার পর ভিডিয়োবার্তা দেন রোহিত। তিনি বলেন, ‘‘আমি জঙ্গি নই। টাকাপয়সার চাহিদাও নেই। তবে সাধারণ কয়েকটি দাবি রয়েছে। আর সেই দাবি পূরণের জন্য আমাকে এই শিশুদের পণবন্দি করতে হল।’’ এর পরই তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘আমি আলোচনা চাই। তাই এ কাজ করেছি। পরিকল্পনা করেই শিশুদের বন্দি বানিয়েছি। যদি আমি বাঁচি ভাল কথা। যদি না বাঁচি, তা হলে অন্য কেউ এই কাজ করবে। কেউ চালাকি করার চেষ্টা করবেন না। যদি করেন, তা হলে আটকে থাকা শিশুদেরই ক্ষতি হবে। আর তার জন্য আমাকে দায়ী করতে পারবেন না। গোটা স্টুডিয়োয় আগুন ধরিয়ে দেব।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের কাছ থেকে একটি এয়ার গান এবং বেশ কিছু রায়াসনিক উদ্ধার হয়েছে। ওই স্টুডিয়োতেই তিনি কাজ করতেন। নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেলও ছিল। রোহিত অভিযোগ তোলেন, স্বচ্ছতা অভিযানের জন্য একটি প্রকল্প চালু করা হয়েছিল। সেই প্রকল্পের জন্য দু’কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। তিনি কাজ করার পরেও টাকা দেওয়া হয়নি। দু’বার অনশনেও বসেছিলেন। কিন্তু তাঁকে কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। শিক্ষামন্ত্রী দীপক কেসরকর তাঁকে আশ্বাস দিয়েছিলেন। তাঁকে দু’দফায় ৭ এবং ৮ লক্ষ টাকাও দিয়েছিলেন। বাকি টাকা মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েও তা পূরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন রোহিত।