সন্তানকে নিয়ে গাড়ির পিছনের আসনে বসে জ্যোতি মালে। ছবি: টুইটার।
গাড়ির পিছনের আসনে বসে সাত মাসের সন্তানকে স্তন্যপান করাচ্ছিলেন এক মহিলা। সেই সময় মুম্বই ট্রাফিক পুলিশের টোয়িং ভ্যান মহিলা ও তাঁর সন্তান-সহ গাড়িটিকে তুলে নিয়ে যায়। মুম্বইয়ের মালাডের এই ঘটনার ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। মুম্বই ট্রাফিক পুলিশের এই কর্মকাণ্ডের জেরে নানা মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০২২-এ মধ্যেই দেশে ‘রাম রাজ্য’, দাবি আদিত্যনাথের
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ মালাড (পশ্চিম)-এর ব্যস্তবহুল এস ভি রোডে গাড়ি পার্ক করেছিলেন জ্যোতি মালে নামে ওই মহিলার স্বামী। গা়ড়ির পিছনের আসনে বসে সন্তানকে স্তন্যপান করাচ্ছিলেন জ্যোতি। অভিযোগ, সেই সময় মুম্বই ট্রাফিক পুলিশের এক কনস্টেবল শশাঙ্ক রানে গাড়ির কাছে আসেন। নো-পার্কিংয়ে গাড়ি পার্ক করার অভিযোগ তুলে গাড়িটিকে তুলে নিয়ে যান। গাড়ির পিছনের আসনে তখনও সন্তানকে নিয়ে বসেছিলেন জ্যোতি। বলেন, “জরিমানা দিয়ে গাড়িটিকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ওই কনস্টেবলকে অনুরোধ করে আমার স্বামী। শুধু তাই নয়, সন্তানের অসুস্থতার কথাও জানাই। প্রেসক্রিপশনও দেখাই। কিন্তু কোনও কথাই শোনেননি ওই কনস্টেবল।”
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জ্যোতি জানান, গাড়ি থেকে তাঁকে নামতেও বলেননি ওই ট্রাফিক পুলিশ। সন্তানকে স্তন্যপান করাচ্ছেন, সেটা বলা সত্ত্বেও গাড়িটিকে টোয়িং ভ্যানে আটকে নিয়ে যাওয়া হয়। পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, ওই জায়গাতেই আরও দুটো গাড়ি পার্ক করা ছিল। সেগুলোকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়নি। তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের গাড়িটাকেই বেছে নেন ট্রাফিক কর্মীরা। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েক জন এই ঘটনার প্রতিবাদও করেন। সন্তানকে স্তন্যপান করানো অবস্থায় এ ভাবে গাড়ি তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রাফিক পুলিশকে প্রশ্নও করেন তাঁরা। কিন্তু কোনও কথাই শোনেননি ওই ট্রাফিক পুলিশকর্মী।
আরও পড়ুন: কর কমলেও ভোটের আগে সুর চড়া কংগ্রেসের
মুম্বই ট্রাফিক পুলিশ পাল্টা অভিযোগ এনেছে মালে দম্পতির বিরুদ্ধে। তাদের অভিযোগ, ব্যস্ত এস ভি রোডের নো-পার্কিং জোনে গাড়িটিকে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন ওই দম্পতি। ট্রাফিক পুলিশ সেটা দেখতে পেয়েই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়। মালাডের ট্রাফিক পুলিশ ইন্সপেক্টর বিশ্বনাথ শেলার আবার অভিযোগ তুলেছেন, মালে দম্পতির গাড়িটিকে যখন টোয়িং ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছিল, তখনই জ্যোতি মালে গাড়ির পিছনের আসনে সন্তানকে নিয়ে বসে পড়েন। শুধু তাই নয়, ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে তর্কও করেন।
গোটা ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দি করেন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পড়ে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে মুম্বই ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। ঘটনাটি প্রসঙ্গে মুম্বই পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) অমিতেশ কুমার বলেন, “পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তের দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে ডেপুটি পুলিশ কমিশনারকে।” শনিবার অভিযুক্ত ওই ট্রাফিক পুলিশকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রে খবর।