লোকসভায় তাৎক্ষণিক তিন তালাক নিয়ে বিল পাশ হয়েছে সবে। নতুন বছরের গোড়ায় রাজ্যসভাতেও তা পাশ করিয়ে নিতে চাইছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। তার আগে আজ মুসলিম মহিলাদের পাশে দাঁড়িয়ে নতুন ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানালেন, পুরুষ অভিভাবক তথা ‘মেহরম’ ছাড়াই ৪৫ বছরের বেশি বয়সের যে সব মহিলা হজ যাত্রায় যেতে চান, তাঁদের সকলের আবেদন মঞ্জুর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর সরকার।
এ বছর এমন আবেদনকারীর সংখ্যা প্রায় ১,৩০০। কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়েছে, চারটি দলে পাঠানো হবে তাঁদের। একাধিক মুসলিম সংগঠনের দাবি, সৌদি এই সংক্রান্ত নিয়ম আগেই বদলেছে। মোদী এখন এটাকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে মাঠে নেমেছেন।
রেডিওয় মাসিক ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে আজ মোদী বলেন, ‘‘প্রথম বার যখন শুনলাম পুরুষ অভিভাবক ছাড়া মুসলিম মহিলারা হজ যাত্রায় যেতে পারেন না— ভাবলাম, এটা কী করে হতে পারে? এই বৈষম্য কেন? খতিয়ে দেখলাম, স্বাধীনতার সত্তর বছর পরেও আমরাই এই নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে রেখেছি। অনেক ইসলামিক দেশেও এই নিয়ম নেই।’’ এর পরেই মোদীর সংযোজন, ‘‘সাধারণত লটারির মাধ্যমে বাছা হয় যাত্রীদের। সংখ্যালঘু মন্ত্রককে আমি সুনিশ্চিত করতে বলেছি, যে মহিলারা পুরুষ অভিভাবক ছাড়া যাওয়ার আবেদন করেছেন, তাঁদের যেন বিশেষ শ্রেণিতে ফেলে হজে যাওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হয়।’’
আরও পড়ুন: চলতে হবে সঙ্ঘের পথে, বার্তা মোদীকে
এর কিছু আগেই, সকালে দিল্লি থেকে কেরলের এক মঠে ভিডিও বার্তায় তাৎক্ষণিক তিন তালাক নিয়ে বলেন মোদী। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘মুসলিম মা-বোনেরা দীর্ঘ সময় ধরে কষ্ট করেছেন, সেটি কারও কাছে লুকোনো নেই। অনেক বছরের লড়াইয়ের পর এখন তাঁদের তাৎক্ষণিক তিন তালাক থেকে মুক্তি পাওয়ার পথ মিলেছে।’’
বিরোধীরা মনে করছেন, মোদীর এই সব মন্তব্যের আড়ালে রয়েছে পাল্টা চাপের কৌশল। রাজ্যসভায় সরকার সংখ্যালঘু। সেখানে বিল পাশ করাতে বেগ পেতে হবে কংগ্রেস ও অন্য বিরোধীরা বেঁকে বসলে। সে কারণে আগে থেকেই এই পাল্টা চাপ মোদীর। বিজেপির এক নেতার কথাতেও ইঙ্গিত মিলেছে, কেন তাঁরা কংগ্রেসকে চাপে রাখতে চাইছেন। ওই নেতার কথায়, ‘‘মঙ্গলবার রাজ্যসভায় তালাক সংক্রান্ত বিলটি তোলা হবে। কংগ্রেস যদি লোকসভার মতোই শুধু কিছু প্রশ্ন তুলে বিলটিকে সমর্থন করে, তা হলে সেটিকে সিলেক্ট কমিটির কাছেও পাঠানোর দরকার নেই। সংসদের দুই সভাতেই বিল পাশ হয়ে সেটি কার্যকর হয়ে যাবে।’’