—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
আমেরিকার স্বল্পমেয়াদি ভিসা পাওয়ার বিষয়টি এ বার আর একটু কঠিন হল। আমেরিকার নন-ইমিগ্রান্ট ভিসা (এনআইভি) চাইলে আবেদনকারীদের নিজের দেশে বসেই ইন্টারভিউ দিতে হবে। অর্থাৎ আবেদনকারী যে দেশের নাগরিক, সেই দেশে বসেই ভিসার ইন্টারভিউ দিতে হবে। মনে করা হচ্ছে, এই নিয়মে বিপাকে পড়তে পারেন ভারতীয়েরা। তাঁরা দ্রুত আমেরিকার বি১ (বিজনেস) বা বি২ (পর্যটন) ভিসা চাইলে অনেক সময়ই দেশের বাইরে কোনও শহর থেকে ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতেন। কারণ এ দেশের বিভিন্ন শহরে ইন্টারভিউয়ের অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে গেলে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু নতুন নিয়মের কারণে অন্য দেশে গিয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া আর সম্ভব হবে না। ফলে আমেরিকার স্বল্পমেয়াদি ভিসা পেতে এখন আরও বেশি অপেক্ষা করতে হবে ভারতীয়দের।
আমেরিকায় ব্যবসা করতে, পড়তে, বেড়াতে গেলে, সাময়িক কাজের জন্য গেলে বা আমেরিকার নাগরিককে যাঁরা বিয়ে করেন, তাঁদের এনআইভি ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে বিভিন্ন ভিসার নীতিতে বদল এসেছে। এ বার এনআইভি ভিসার নীতিতেও বদল এল। শনিবার আমেরিকার বিদেশ দফতর জানিয়েছে, ‘‘এনআইভি ভিসার আবেদনকারীদের জন্য নির্দেশিকায় বদল আনা হয়েছে। যে দেশের তারা নাগরিক, সেখানকার দূতাবাস এবং কনসুলেট থেকে ভিসার জন্য ইন্টারভিউ দিতে হবে।’’
এখন বি১ বা বি২ ভিসার আবেদন করলে আবেদনকারীকে ভারতের হায়দরাবাদ, মুম্বইয়ে মার্কিন দূতাবাসে বসে ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয় সাড়ে তিন মাস। দিল্লিতে সেই সময়টা সাড়ে চার মাস। কলকাতায় পাঁচ মাস এবং চেন্নাইয়ে নয় মাস অপেক্ষা করতে হয়।
এত দিন যাতে অপেক্ষা করতে না হয়, তাই অতীতে আশপাশের দেশে গিয়ে সেখানকার আমেরিকার দূতাবাসে বসে ইন্টারভিউ দিতেন ভারতীয়েরা। অতিমারির সময় সেই প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর নয়, জার্মানিতে গিয়েও সেখানকার দূতাবাস থেকে ইন্টারভিউ দিতেন ভারতীয় এনআইভি ভিসার আবেদনকারীরা। এমনটাই জানিয়েছেন এক ভ্রমণকারী সংস্থার এজেন্ট। তিনি জানিয়েছেন, ওই সব দেশে গিয়ে ১০দিন থেকে পাসপোর্টে ভিসার স্ট্যাম্প নিয়ে ফিরতেন তাঁরা। এই কাজে ব্রাজ়িলের রিও ডি জেনেইরোতেও গিয়েছেন কিছু ভারতীয়। কিন্তু নতুন ভিসা নীতির কারণে তা আর সম্ভব হবে না।
তবে এই নীতির ব্যতিক্রম আছে। আমেরিকার বিদেশ দফতর জানিয়েছে, যে সব দেশে আমেরিকা সরকার এনআইভি অভিযান চালায় না, সে সব দেশের নাগরিকদের নির্ধারিত দেশে আমেরিকার দূতাবাস বা কনসুলেটে গিয়ে গিয়ে ভিসার জন্য ইন্টারভিউ দিতে হবে। যেমন আফগানিস্তানের লোকজনকে এই ভিসা পেতে গেলে ইসলামাবাদে আমেরিকার দূতাবাসে গিয়ে ইন্টারভিউ দিতে হয়। ইরানের লোকজনকে দুবাইয়ে এবং রাশিয়ার লোকজনকে কাজাকস্তানের রাজধানী আস্তানা, পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে যেতে হয়।