সমঝোতা বিস্ফোরণে বেকসুর অসীমানন্দেরা

২০০৭-এর ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে দিল্লি থেকে লাহৌরের উদ্দেশে ছাড়া সমঝোতা এক্সপ্রেস পানিপথে পৌঁছলে দু’টি কামরায় বিস্ফোরণ হয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৯ ০৩:১২
Share:

স্বামী অসীমানন্দ-সহ চার অভিযুক্তকে বেকসুর মুক্তি দিল এনআইএ-র বিশেষ আদালত।—ছবি পিটিআই।

সমঝোতা এক্সপ্রেসে বোমা বিস্ফোরণের মামলায় আরএসএসের প্রাক্তন প্রচারক নবকুমার সরকার ওরফে স্বামী অসীমানন্দ-সহ চার অভিযুক্তকে বেকসুর মুক্তি দিল এনআইএ-র বিশেষ আদালত। এঁদের সকলের নামই চার্জশিটে ছিল। মামলার তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র কৌঁসুলি রাজন মলহোত্র জানিয়েছেন— অসীমানন্দ, লোকেশ শর্মা, কমল চৌহান এবং রাজিন্দর চৌধরিকে বিচারক সমঝোতা-বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছেন।

Advertisement

২০০৭-এর ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে দিল্লি থেকে লাহৌরের উদ্দেশে ছাড়া সমঝোতা এক্সপ্রেস পানিপথে পৌঁছলে দু’টি কামরায় বিস্ফোরণ হয়। কামরা দু’টি কার্যত দু’টুকরো হয়ে যায়। মৃত ৬৮ জনের অধিকাংশই ছিলেন পাকিস্তানি নাগরিক। হরিয়ানা পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও পরে তা এনআইএ-র হাতে দেওয়া হয়। তদন্তের পরে ৮ জনের নামে চার্জশিট দিয়ে এনআইএ জানায়, ভারতের বিভিন্ন মন্দিরে বোমা হামলার পাল্টা হিসেবে অভিযুক্তরা লাহৌরগামী ট্রেনটিতে বোমা বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র করে। অজমেরের দরগা এবং হায়দরাবাদে মক্কা মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের চক্রান্তেও অসীমানন্দের নাম উঠে আসে। হরিদ্বারে গঙ্গার ধারে একটি আশ্রম থেকে আদতে হুগলির গোঘাটের বাসিন্দা অসীমানন্দকে গ্রেফতার করা হয়। ধরা পড়েন আরও চার অভিযুক্তও। কিন্তু বাকি চার অভিযুক্তের তিন জন ফেরার। হামলার প্রধান হিসাবে চার্জশিটে নাম থাকা সুনীল জোশী মধ্যপ্রদেশের দেওয়াসে রহস্যজনক ভাবে খুন হয়ে যান।

কেন্দ্রে মোদী সরকার আসার পর থেকেই তথাকথিত ‘হিন্দু সন্ত্রাসবাদী’-দের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তে ঢিলেমির অভিযোগ ওঠে। হায়দরাবাদ ও অজমেরের বিস্ফোরণ মামলায় ইতিমধ্যেই বেকসুর খালাস পেয়ে গিয়েছেন অসীমানন্দ। পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক এ দিন ভারতের হাই কমিশনার অজয় বিশারিয়াকে ডেকে জানায়, সমঝোতা হামলার ৪ অভিযুক্ত মুক্তি পাওয়ায় তারা হতাশ।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

গত বৃহস্পতিবারই এই মামলার রায় দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হামলায় নিহত এক পাকিস্তানি নাগরিকের স্বজন আদালতে জানান, পাকিস্তানের অধিবাসী কয়েক জন সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ না করে রায় দেওয়াটা অবিচার হবে। সে দিন রায়দান পিছিয়ে দিলেও এ দিন বিচারক জগদীপ সিংহ ওই আবেদন খারিজ করে দেন। তার পরে ৪ অভিযুক্তকেই মুক্তি দেন।

কামারপুকুরের কাছে গোঘাটে তাঁর বাড়িতে অসীমানন্দের মা প্রমীলা সরকার দাবি করেন তাঁর ছেলে নির্দোষ। তিনি বলেন, ‘‘সত্যের জয় হল।’’ ভাই সুশান্ত সরকার বলেন, ‘‘কংগ্রেস মিথ্যা মামলা সাজিয়ে দাদার এতগুলো বছর নষ্ট করে দিল। সারা জীবন আদিবাসী ও গরিব মানুষদের পাশে থেকে কাজ করে গিয়েছেন দাদা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন