দিল্লি বিস্ফোরণে ব্যবহৃত সেই হুন্ডাই আই ২০ এবং তার চালক উমর উন-নবি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ছ’দিন পর দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডের তদন্তে বড়সড় সাফল্য! এ বার ধরা পড়লেন ‘ঘাতক’ সেই গাড়ির চালক উমর উন-নবির মূল সহযোগী। তদন্তকারীদের দাবি, উমরকে সাদা রঙের হুন্ডাই আই২০ গাড়িটি জোগাড় করে দিয়েছিলেন তিনিই। শুধু তা-ই নয়, দেশের বিভিন্ন শহরে ধারাবাহিক বোমা হামলার ছক কষতে উমরকে সাহায্যও করেছিলেন ওই ব্যক্তি।
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ধৃত যুবকের নাম আমির রাশিদ আলি। রবিবার দিল্লি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, বার কয়েক হাতবদলের পর শেষবার ‘ঘাতক’ গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছিল এই আমিরেরই নামে। হরিয়ানার এক ব্যক্তির কাছ থেকে গাড়িটি কিনে উমরের হাতে তুলে দিয়েছিলেন তিনি।
তদন্তকারী সূত্রে জানা গিয়েছে, ফরিদাবাদের আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক উমরের সঙ্গে মিলে বিস্ফোরণের ছক কষেছিলেন আমিরও। আমিরের বাড়ি কাশ্মীরের পাম্পোরের সম্বুরা এলাকায়। উমরের জন্য গাড়ি কেনার ব্যবস্থা করতে দিল্লি যান ওই যুবক। পরে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য সেই গাড়িটিকে বেছে নেওয়া হয়। এনআইএ আরও জানিয়েছে, ফরেন্সিক তদন্তে এবং ডিএনএ পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে যে উমরই ঘাতক গাড়িটিতে ছিলেন। উমরের আর একটি গাড়িও বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা। গোটা ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৭৩ জন সাক্ষীর বয়ান সংগ্রহ করা হয়েছে। দিল্লি, জম্মু-কাশ্মীর, হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গে যৌথ ভাবে তদন্ত এগোচ্ছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে এনআইএ। পাশাপাশি, গোটা দিল্লি জুড়ে ৩৪টি বেওয়ারিশ গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। বিভিন্ন চেকপোস্টে চলছে লাগাতার তল্লাশি।
বিস্ফোরণে ব্যবহৃত সাদা রঙের ওই হুন্ডাই গাড়িটির নম্বর ছিল HR 26 CE 7674। ২০১৪ সালে নাদিম নামে এক ব্যক্তি গুরুগ্রামের এক শোরুম থেকে গাড়িটি কিনেছিলেন। ওই বছরই গুরুগ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ সলমনের কাছে সেটি বিক্রি করে দেন নাদিম। রেজিস্ট্রেশনের নথি ঘেঁটে শুরুতেই সলমনকে আটক করে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গাড়িটি ওখলার বাসিন্দা দেবেন্দ্রের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলেন তিনি। দেবেন্দ্রর খোঁজ মিলতেই জানা যায়, গাড়িটি ফরিদাবাদের অমিত পটেলের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন তিনিও! গত ২৯ অক্টোবর অমিতের থেকে ফের গাড়িটি কেনেন আমির। তাঁর হাত থেকেই গাড়ি যায় উমরের হাতে। এ বার সেই আমিরকে ধরল এনআইএ।