Arunachal Woman Harassed

১৮ ঘণ্টা খাবার নেই! শুধু শৌচাগারে যাওয়ার অনুমতি, সাংহাই বিমানবন্দরে আর কী হয়েছিল ভারতীয় তরুণীর সঙ্গে

ঘটনায় প্রতিক্রিয়ায় চিনের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, কোনও ধরনের হেনস্থা করা হয়নি ওই তরুণীকে। সীমান্তকর্মীরা ‘আইন এবং বিধি’ মেনেই কাজ করেছেন। বিমান সংস্থা তাঁকে জল, খাবারও দিয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৫ ১১:৫৪
Share:

চিনের সাংহাই বিমানবন্দরে হেনস্থা ভারতীয় তরুণীকে। — ফাইল চিত্র।

খাবার, জল নেই। এ ভাবে টানা ১৮ ঘণ্টা একই চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়েছিল তাঁকে। মাঝে মাঝে অবশ্য শৌচাগারে যেতে দেওয়া হচ্ছিল। এ ভাবেই দীর্ঘ ক্ষণ ধরে তাঁকে হেনস্থা করা হয়। চিনের সাংহাই বিমানবন্দরে কার্যত ‘বন্দি’ হয়ে থাকার সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন অরুণাচল প্রদেশের তরুণী।

Advertisement

মঙ্গলবার পেমা ওয়াংজম থংডক নামের ওই তরুণীর অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগ, বৈধ পাসপোর্ট থাকা সত্ত্বেও কেবল অরুণাচল প্রদেশে জন্মানোর কারণে তাঁকে হেনস্থা করা হয় চিনের বিমানবন্দরে। সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পেমা জানিয়েছেন, সাংহাই বিমানবন্দরে ট্রানজ়িটের সময় তাঁকে আটকান চিনের অভিবাসন দফতরের কর্তারা। তাঁকে বলা হয়, তাঁর পাসপোর্টটি অবৈধ। শুধু তা-ই নয়, ‘অরুণাচল প্রদেশ চিনের অংশ’— এ কথাও বলা হয় তাঁকে। পেমা বলেন, ‘‘অভিবাসন দফতরের আধিকারিকদের কাছে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার পর আমায় লাইন থেকে বার করে একপাশে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর দীর্ঘ ক্ষণ বসিয়ে রাখা হয় আমাকে। সেখানে খাবারের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। একটি ছোট চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। মাঝে মাঝে শৌচাগারে যেতে দেওয়া হচ্ছিল।’’

মহিলার দাবি, একজন আধিকারিক তাঁকে প্রশ্ন করেন, কেন পেমা চিনা পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেননি। পেমার কথায়, ‘‘আগেও একবার সাংহাই দিয়ে যাতায়াত করেছি। সে বার কোনও সমস্যায় পড়তে হয়নি। আমি চিনা ভাষা বলতে পারি না। চিনে আমার জমি নেই, ভোটের অধিকারও নেই। আমি কী ভাবে সেখানকার নাগরিক হলাম? আমি একজন গর্বিত ভারতীয় নাগরিক এবং ভবিষ্যতেও তা-ই থাকব। অরুণাচল প্রদেশ যে চিনের অংশ, এমন কথা কখনও শুনিনি।’’ সমাজমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে চলতে থাকা ব্যঙ্গাত্মক পোস্টগুলির জবাবে পেমা আরও বলেন, ‘‘আমি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে সর্বক্ষণের কর্মী হিসাবে চাকরি করি। এসব ব্যঙ্গবিদ্রূপের উত্তর দেওয়ার আমার সময় নেই। তবে যাঁরা আমাকে সমর্থন করছেন, তাঁদের সকলকে ধন্যবাদ। আমি নিজে ভারতে থাকি না। যদি এই ঘটনার পর ভারত সরকার কোনও পদক্ষেপ করে, তা হলে তা আমার জন্য নয়, বরং বাকি অরুণাচলবাসীদের জন্যই সুবিধাজনক হবে। চলুন, একই দেশের নাগরিক হিসাবে আমরা একে অপরের পাশে দাঁড়াই।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, ঘটনায় প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবারই চিনের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, কোনও ধরনের হেনস্থা করা হয়নি ওই তরুণীকে। সীমান্তকর্মীরা ‘আইন এবং বিধি’ মেনে কাজ করেছেন। বিমান সংস্থা তাঁকে জল, খাবারও দিয়েছে। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের তরফে আরও বলা হয়েছে, ‘‘জাংনান (অরুণাচলকে এই নামেই ডাকে চিন) আমাদের দেশেরই অংশ। চিন কখনই ভারতের অবৈধ ভাবে দাবি করা অরুণাচল প্রদেশকে মানে না।’’ সেই বিবৃতির প্রতিক্রিয়া হিসাবে রাতে চিনের নিন্দা করেছে ভারত। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, অরুণাচল প্রদেশের এক ভারতীয় নাগরিককে ইচ্ছাকৃত ভাবে আটক করার বিষয়ে চিনা বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতি নিন্দনীয়। রণধীর এও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, অরুণাচল ভারতের ‘অবিচ্ছেদ্য অংশ’। বরং চিন যা করেছে, তা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement