Rajasthan Crisis

রাহুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ নয়, জানিয়ে দিলেন পাইলট

গতকাল থেকে দিল্লিতে রয়েছেন সচিন পায়লট। তাঁর মান ভাঙাতে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব চেষ্টা চালিয়ে গেলেও, রাহুল গাঁধীর তরফে এ ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ চোখো পড়েনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২০ ২০:২৪
Share:

—ফাইল চিত্র।

আপাতত রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বৈঠকে বসার কোনও পরিকল্পনা নেই তাঁর। জানিয়ে দিলেন রাজস্থানের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা প্রদেশ কংগ্রেসের প্রধান সচিন পাইলট। অশোক গহলৌতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে গতকালই দিল্লি এসে পৌঁছন সচিন তিনি। যাবতীয় অভাব-অভিযোগ নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন তিনি। সোমবার বিকেল পর্যন্ত যদিও সনিয়ার সঙ্গে বৈঠক হয়নি তাঁর। তবে সনিয়া ঘনিষ্ঠ আহমেদ পটেল এবং দলের অন্য শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। রাহুল ও প্রিয়ঙ্কাও তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু আপাতত রাহুলের সঙ্গে বসার কোনও পরিকল্পনা তাঁর নেই বলে সংবাদমাধ্যমে জানিয়ে দিলেন পাইলট।

Advertisement

অনুগামীদের নিয়ে সচিন পায়লট দিল্লিতে এসে পৌঁছনোর পর থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে নানা জল্পনা সামনে এসেছে। কিন্তু বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন না বলে এ দিন সাপ জানিয়ে দেন সচিন। তাতেই মনে বল পায় কংগ্রেস। বিদ্রোহী নেতার উদ্দেশে সমঝোতার বার্তা পাঠাতে শুরু করে। সনিয়া গাঁধী এবং রাহুল গাঁধী তাঁর সঙ্গে আলোচনায় রাজি বলে দলের তরফে জানানো হয়। রাহুল ও তাঁর মধ্যে যে নিয়মিত কথা হয়, তাঁরা একে অপরকে কতটা শ্রদ্ধা ও স্নেহ করেন, তা-ও প্রচার করা হয়। কিন্তু তাতে যে চিঁড়ে ভিজবে না, পায়লটের বার্তায় তা স্পষ্ট। সনিয়ার সঙ্গে বৈঠক নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও, রাহুলের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা নেই, তা জানিয়ে দিলেন তিনি।

রাহুলের সঙ্গে বৈঠক না করার কোনও কারণ যদিও খোলসা করেননি সচিন পাইলট। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল থেকে দিল্লিতে রয়েছেন সচিন পায়লট। তাঁর মান ভাঙাতে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব চেষ্টা চালিয়ে গেলেও, রাহুল গাঁধীর তরফে এ ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ চোখো পড়েনি। তাঁর সঙ্গে দেখা করা তো দূর, সচিন পাইলটের উদ্দেশে সরাসরি কোনও বার্তাও দেননি রাহুল। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণ শানিয়ে গেলেও, রাজস্থানের পরিস্থিতি নিয়ে টুইটারে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি। তাতেই তাঁর অখুশি সচিন পাইলট।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘গরিষ্ঠতার প্রমাণ দিন রাজ্যপালের কাছে’, চ্যালেঞ্জ সচিনের​

আরও পড়ুন: ডিজিটাল ইন্ডিয়া: ভারতে ৭৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে গুগল​

তবে সচিন পাইলটের সঙ্গে দেখা করে রাহুল গহলৌত শিবিরকে চটাতে চাইছেন না বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ। তাঁদের মতে, গহলৌতকে সরিয়ে সচিন পাইলটের হাতে প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন রাহুল। দলের তরুণ শিবিরকে আরও বেশি করে জায়গা করে দিতেই এমন পদক্ষেপ করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই পায়লট এখন বিদ্রোহ ঘোষণা করায় অস্বস্তিতে রাহুল। শুধু তাই নয়, এ দিন জয়পুরে পরিষদীয় দলের বৈঠকে ১০২ বিধায়ক হাজির করে তাঁর পাল্লা ভারী, সে কথা বুঝিয়ে দিয়েছেন গহলৌত। সে ক্ষেত্রে পাইলটের সঙ্গে দেখা করতে গেলে দলের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তাই আলাদা করে পায়লটের সঙ্গে দেখা করা থেকে রাহুল নিজেকে বিরত রেখেছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কংগ্রেসের একটি অংশ আবার সচিন পায়লটের বুদ্ধিমত্তা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন। তাঁদের দাবি, গহলৌতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে নিজের পায়ে কুড়ুল মেরেছেন পাইলট। দলের হয়ে কাজ করার চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদটির দিকেই যে তাঁর নজর, তা এখন প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে। গহলৌত ঠিক এমনই চেয়েছিলেন বলে দাবি করছেন অনেকে। বলা হচ্ছে, ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনের সময় গহলৌতের বয়স গিয়ে দাঁঢ়াবে ৭৩-এ। তাতে কংগ্রেস জিতলে মুখ্যমন্ত্রী অবশ্যম্ভাবী ভাবে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসবেন সচিন পাইলট। কিন্তু তাঁর পরে সচিন পাইলট মুখ্যমন্ত্রী পদটির দাবিদার হোন, তা কখনওই চাননি গহলৌত। বরং নিজের ছেলে বৈভবকেই উত্তরসূরি হিসেবে তুলে আনতে চেয়েছিলেন তিনি।

কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনে বাবার কেন্দ্র জোধপুর থেকে দাঁড়িয়েও পরাজিত হন বৈভব। তাই সময় নিচ্ছিলেন তিনি। গত মাসে রাজ্যসভা নির্বাচন তাঁকে সেই সুযোগ করে দেয়। দলীয় সূত্রে খবর, রাজ্যসভা নির্বাচনে ২০০ আসনের বিধানসভায় কংগ্রেসের দুই প্রার্থী ১২৩ বিধায়কের সমর্থন পান। ১০৭ জন কংগ্রেস বিধায়ক ছাড়াও নির্দলদের থেকে ১৩টি এবং ছোট দলগুলির কাছ থেকে আরও ৩ জনের সমর্থন আসে তাঁদের কাছে। তাতেই মনে বল পান গহলৌত। মধ্যপ্রদেশের জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মতো পাইলট যদি নিজের অনুগামীদের নিয়ে বেরিয়েও যান, তাতে তাঁর সরকার টলবে না, এমন বিশ্বাস জন্মায় তাঁর। তার পর থেকেই ইচ্ছাকৃত ভাবে এমন পরিস্থিতি তৈরি করছিলেন, যাতে পাইলট নিজে থেকে বেরিয়ে যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন