জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। —ফাইল চিত্র।
জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর দাবিতে ফের সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের মর্যাদা পাবে কি না, তা নিয়ে কি এ বার পাকিস্তান বা পহেলগাঁওয়ের জঙ্গিরা সিদ্ধান্ত নেবে? ইসলামাবাদের নাম না-করে শুক্রবার স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে এই প্রশ্নই তুললেন ওমর। ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবারই জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা ফেরানো সংক্রান্ত মামলায় পহেলগাঁওয়ের প্রসঙ্গ উঠেছে সুপ্রিম কোর্টে। এর পরেই জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
শুক্রবার স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে ওমর বলেন, “আমাদের বলা হয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীরকে দেশের অন্য অংশের সঙ্গে সমতুল্য করে তোলা হবে। আজ আমি জানতে চাই, সত্যিই কি তা হয়েছে? জম্মু ও কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ বদলাতে গেলে প্রথম পদক্ষেপ হতে হবে রাজ্যের মর্যাদা। আগামী ৮ সপ্তাহ, আমরা জম্মু ও কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর জন্য স্বাক্ষর সংগ্রহ করব। সুপ্রিম কোর্ট মন্তব্য করেছে, (জম্মু ও কাশ্মীরকে) রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় পহেলগাঁও (হামলা) বিবেচনা করা উচিত। এটি দুর্ভাগ্যজনক। এ বার কি জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদার বিষয়ে পহেলগাঁওয়ের হত্যাকারীরা এবং পড়শি রাজ্য সিদ্ধান্ত নেবে?” সরাসরি কোনও দেশের নামোল্লেখ না করলেও পড়শি দেশ বলতে তিনি যে পাকিস্তানকেই বুঝিয়েছেন, তা মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গবই এবং বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের ডিভিশন বেঞ্চে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। সেই শুনানিতেই পহেলগাঁও হামলার প্রসঙ্গে তুলে আদালত জানায়, বাস্তবকে অস্বীকার করা যাবে না। কেন্দ্রকে নোটিস পাঠিয়ে আট সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। এ বার ওমরও জানিয়ে দিলেন, আগামী আট সপ্তাহ ধরে তিনি জম্মু ও কাশ্মীর ঘুরে ঘুরে রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করবেন।
২০১৯ সালের ৫ অগস্ট সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করা হয়। রাজ্যের তকমা হারায় জম্মু ও কাশ্মীর। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে ভেঙে দু’টি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হয়— জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ। গত বছর জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা ভোট হয়েছে। সরকার গঠিত হয়েছে। তার পর থেকে আরও জোরালো হয়েছে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর দাবি। গত বছরে বিধানসভা ভোটের আগে জম্মু ও কাশ্মীরে আঞ্চলিক দলগুলির অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল, ক্ষমতায় এলে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফেরানো হবে। এমনকি, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের প্রচারে জম্মুতে গিয়েও এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি আশ্বস্ত করেছিলেন, বিধানসভা ভোটের পরে রাজ্যের মর্যাদাও ফেরানো হবে। তবে লোকসভা ভোট এবং জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা ভোট মিটে গেলেও এখনও পর্যন্ত পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পায়নি জম্মু ও কাশ্মীর।