পাথর ছোড়ায় ধৃত বিজেপি যুব নেতা

নিজের রাজ্যে এমন হামলার পরেও চুপ প্রধানমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদীর এই নীরবতা দেখে দিল্লিতে রাহুল আজ বললেন, ‘‘মোদী আর বিজেপি-সঙ্ঘের রাজনীতির এটাই ধরন। নিজেই এই কাজ করলে কী করে নিন্দা করেন?’’ আর কংগ্রেসের তরফে বলা হল, ‘‘১৯৪৮ সালে সফল হয়নি ‘গডসেবাদ’, ২০১৭-তে সফল হবে না ‘মোদীবাদ’। হিংসা, ভয়, বিরোধীদের শারীরিক নিগ্রহ— সঙ্ঘ-বিজেপির এই রাজনীতি দমাতে পারবে না কংগ্রেসকে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৭ ০৪:০৬
Share:

ক্ষোভ: রাহুলের উপর হামলার প্রতিবাদে নয়াদিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরের বাইরে বিক্ষোভ কংগ্রেস সমর্থকের। ছবি: এএফপি।

গাড়ির কাচ নামিয়েই চলছিলেন রাহুল গাঁধী। প্রায় দেড় কেজির কংক্রিটের পাথরটা যদি লাগত, রীতিমতো প্রাণঘাতী হতে পারত। নিশানা ফস্কে লাগল পিছনের কাচে।

Advertisement

নিজের রাজ্যে এমন হামলার পরেও চুপ প্রধানমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদীর এই নীরবতা দেখে দিল্লিতে রাহুল আজ বললেন, ‘‘মোদী আর বিজেপি-সঙ্ঘের রাজনীতির এটাই ধরন। নিজেই এই কাজ করলে কী করে নিন্দা করেন?’’ আর কংগ্রেসের তরফে বলা হল, ‘‘১৯৪৮ সালে সফল হয়নি ‘গডসেবাদ’, ২০১৭-তে সফল হবে না ‘মোদীবাদ’। হিংসা, ভয়, বিরোধীদের শারীরিক নিগ্রহ— সঙ্ঘ-বিজেপির এই রাজনীতি দমাতে পারবে না কংগ্রেসকে।’’ গোটা দেশে আজ এই নিয়ে আন্দোলনও করেছে দল।

গত কাল গুজরাতের বনসকঁঠা জেলার ধনেরা-য় রাহুলের গাড়িতে পাথর ছোড়ার অভিযোগে জয়েশ দার্জি ওরফে অনিল রাঠৌর নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কংগ্রেসের দাবি, জয়েশ ওই জেলায় বিজেপির যুব মোর্চার সম্পাদক। জেলার এসপি নীরজ বদগুজর বলেন, ‘‘কংগ্রেস কর্মীরা জয়েশের নামে অভিযোগ করেছিলেন। জেরায় আরও নাম উঠে আসতে পারে।’’ জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পৃথ্বীরাজ কাঠওয়াড়িয়ার বক্তব্য, ‘‘পাথরটা জয়েশই ছুড়েছিলেন। এই ষড়যন্ত্রে জড়িত আরও তিন জনের নাম পুলিশকে জানিয়েছি।’’

Advertisement

রাহুলের গাড়িতে থাকা এসপিজি-র এক জওয়ান কাল সামান্য জখম হন। এফআইআরে তাই প্রাণঘাতী হামলার চেষ্টা, সরকারি সম্পত্তি নষ্টের পাশাপাশি কর্তব্যরত সরকারি কর্মীকে আঘাত করার অভিযোগও রাখা হয়েছে। তদন্ত করছেন এক এডিজি। যদিও এর আগে এফআইআর দায়ের করা নিয়ে গড়িমসির অভিযোগ তুলে গত কাল সারা রাত থানার সামনে ধর্না দিয়েছিলেন কংগ্রেস কর্মীরা। দুপুরে রাহুলই তাঁদের টুইটারে আবেদন করেন, ‘আর ধর্না না দিয়ে বন্যাত্রাণে সাহায্য করুন।’

আজ সকালে সংসদে যখন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন চলছে, সেই সময়ে রাহুলের গাড়িতে ছোড়া পাথরের একটি অংশ সংসদ চত্বরে নিয়ে আসেন কংগ্রেস নেতারা। সেটি দেখিয়ে তাঁরা দাবি করেন, এই পাথর গুজরাতের ওই এলাকায় পাওয়া যায় না। বাইরে থেকে আনা হয়েছে। একটি মোড়ের মাথায় গাড়ির গতি কম হতেই সুপরিকল্পিত হামলা হয়েছে।

বিজেপি আজও বলেছে, ঘটনাটি ‘মানুষের আক্রোশের প্রতিফলন’। রাহুলকে তা বুঝতে হবে। তার থেকেও বড় প্রশ্ন, গুজরাত সরকার বুলেটপ্রুফ গাড়ি দিলেও তা ব্যবহার করলেন না কেন রাহুল? ঘরোয়া মহলে বিজেপি বলছে, প্রধানমন্ত্রীর উচিত এসপিজি-র জবাবদিহি চাওয়া। রাহুলকে নির্দিষ্ট নিরাপত্তা বলয়ে থাকতে বাধ্য করা। এই প্রসঙ্গে গুলাম নবি আজাদের বক্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর জনতার থেকে বিচ্ছিন্ন। রাহুলের মতো নেতারা জনতার মধ্যে থাকেন। বুলেটপ্রুফ গাড়ির কাচ নামানো যায় না। মানুষ চান তাঁদের নেতাকে দেখতে। না হলে অহঙ্কারী ভাবেন।’’

কংগ্রেসের যুক্তি, শুধু একটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি দিয়েই এসপিজি নিরাপত্তা পাওয়া এক নেতার নিরাপত্তার দায় শেষ হয় না। রাস্তার দু’ধারের নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করাও কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ দায়িত্ব। আগামী দিনে রাহুলের সভা আরও বাড়বে। তখনও কি এমন গলদ থাকবে নিরাপত্তায়?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন