Himachal Flash Floods

মধ্যরাতে কুকুরের চিৎকার বাঁচিয়ে দিল ৬৭ জনকে! হড়পা বানে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল হিমাচলের মন্ডীর আস্ত গ্রাম

হিমাচলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মন্ডী জেলা। সবচেয়ে বেশি মেঘভাঙা বৃষ্টি, হড়পা বান হয়েছে এই জেলাতেই। গত ২০ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত হিমাচলে ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ অনেকে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫ ১৩:৪১
Share:

হিমাচল প্রদেশে কুকুরই বাঁচিয়ে দিল ২০টি পরিবারকে। ছবি: সংগৃহীত।

রাত তখন ১টা। বাড়ির দোতলায় কুকুরটা খুব চিৎকার করছিল। কুকুরের ডাকে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল নরেন্দ্রর। বাইরে তখন অঝোরে বৃষ্টি চলছে। কুকুরের ডাক ক্রমেই কেমন যেন সন্দেহজনক হয়ে উঠছিল। ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায় কুকুরটিকে চুপ করাতে তিনতলা থেকে নীচে নেমে এসেছিলেন নরেন্দ্র। হঠাৎ তিনি ঘড়ঘড় করে কিছু এগিয়ে আসার শব্দ পান। তার পরই বাড়ির দেওয়ালে চোখ পড়তেই আঁতকে ওঠেন। দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। আর সেই ফাটল ক্রমে চওড়া হচ্ছে। বাড়ির সকলকে জাগিয়ে তুলে দ্রুত বাইরে বেরিয়ে আসেন।

Advertisement

কিসের শব্দ ওটা? নরেন্দ্রর কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে বিষয়টি বুঝে ওঠার জন্য।তার পরই বুঝতে পারেন ভয়ানক বিপদ এগিয়ে আসছে। চিৎকার করে গ্রামের অন্য বাসিন্দাদের জাগিয়ে তোলেন। নরেন্দ্র জানিয়েছেন, কুকুরটিও তাঁর পিছু পিছু যাচ্ছিল। আর সমানে ডেকে চলেছিল। গ্রামে মোট ২০টি পরিবার। নরেন্দ্রর চিৎকার শুনে এক এক করে সকলেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন। নরেন্দ্র সকলকে জানান, পাহাড় থেকে কিছু নেমে আসছে। দ্রুত অন্য কোথাও আশ্রয় নিতে হবে। তার পরই সকলে মিলে একটি উঁচু মন্দিরে আশ্রয় নেন। তাঁরা আশ্রয় নেওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিশাল জলরাশি আর পাথর নিয়ে পাহাড় থেকে হড়পা বান নেমে এসে। একের পর এক বাড়ি চোখের সামনে গুঁড়িয়ে যেতে শুরু করল। ভেসে গেল বেশ কয়েকটি বাড়ি।

নিজেদের হাতে তিল তিল করে গড়ে তোলা সেই বাড়়ি হড়পা বানের সঙ্গে মিশে যেতে দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারছিলেন না বাসিন্দারা। এমনই জানিয়েছেন নরেন্দ্র। অনেকে সেই দৃশ্য দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েন। একটি, দু’টি বাড়ির ভগ্নাবশেষ ছাড়া গোটা গ্রামটাই নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। নরেন্দ্র জানিয়েছেন, ওখানে যে তাঁদের একটি গ্রাম ছিল, কয়েকটি পরিবারের বাস ছিল, তা বুঝে ওঠা দায়। হড়পা বান গিলে খেয়েছে গোটা গ্রামটিকে। গত ৩০ জুন ঘটনাটি ঘটেছে হিমাচলের মন্ডীর ধরমপুর এলাকার সিয়াথি গ্রামে। নরেন্দ্র জানিয়েছেন, কুকুরটি যদি না চিৎকার করত, তা হলে ২০টি পরিবারের ৬৭ জনেরই মৃত্যু হত। কিন্তু কুকুরের চিৎকারই তাঁদের প্রাণ বাঁচাল। নরেন্দ্রদের ঠিকানা এখন একটি মন্দির। সেখানেই গত এক সপ্তাহ ধরে রয়েছেন।

Advertisement

হিমাচলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মন্ডী জেলা। সবচেয়ে বেশি মেঘভাঙা বৃষ্টি, হড়পা বান হয়েছে এই জেলাতেই। গত ২০ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত হিমাচলে ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ অনেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement