মন্দসৌরে নিহত আরও ১ কৃষক, বিক্ষোভ অন্যত্রও

মধ্যপ্রদেশে গিয়ে রাহুল গাঁধী ক্ষেত্র প্রস্তুত করে এসেছিলেন। তাঁরই নির্দেশে আজ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আক্রমণাত্মক আন্দোলনে নেমেছে কংগ্রেস। কৃষকদের সমস্যা নিয়ে রাহুল নিজেও এ বারে বেরোচ্ছেন রাজ্য সফরে। অন্য বিরোধী দলগুলিও যোগ দিচ্ছে কৃষক আন্দোলনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৭ ০৩:৪৭
Share:

পাকড়াও: বিক্ষোভ চলাকালীন এক আন্দোলনকারী কৃষককে ধরে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। শুক্রবার ভোপালের ফন্দা গ্রামে। ছবি: পিটিআই।

মারা গেলেন পুলিশের লাঠির ঘায়ে আহত আরও এক কৃষক। বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন আরও এক জন।

Advertisement

ক্রমশ অন্য রাজ্যেও ছড়াচ্ছে মন্দসৌরের কৃষক অসন্তোষের আঁচ। গত কাল মধ্যপ্রদেশে গিয়ে রাহুল গাঁধী ক্ষেত্র প্রস্তুত করে এসেছিলেন। তাঁরই নির্দেশে আজ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আক্রমণাত্মক আন্দোলনে নেমেছে কংগ্রেস। কৃষকদের সমস্যা নিয়ে রাহুল নিজেও এ বারে বেরোচ্ছেন রাজ্য সফরে। অন্য বিরোধী দলগুলিও যোগ দিচ্ছে কৃষক আন্দোলনে।

মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান পরিস্থিতি সামাল দিতে আজ থেকে বাংলো ছেড়ে ময়দানে উপবাসে বসছেন। কৃষকদের সমস্যার কথাও শুনবেন তিনি। মন্দসৌরে আজ কার্ফু কিছুটা শিথিল করা হয়। কিন্তু মন্দসৌরের গণ্ডি পেরিয়েই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ভোপাল, সীহোর, শাজাপুরে। রায়সেনে এক কৃষকের আত্মহত্যার পর উত্তাপ আরও বেড়েছে। আর মন্দসৌরেই পুলিশের লাঠিতে সে দিন জখম এক কৃষক আজ মারা গিয়েছেন।

Advertisement

কৃষক আন্দোলনের আঁচ ক্রমশ তীব্র হচ্ছে মহারাষ্ট্র, গুজরাত, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, অন্ধ্রপ্রদেশেও। তামিলনাড়ুর যে কৃষকরা মাস কয়েক আগে যন্তর-মন্তরে ধর্নায় বসেছিলেন, আজ থেকে ফের চেন্নাইয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন তাঁরা। ফের দিল্লিতে আসার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা। এরই মধ্যে রাহুলের নির্দেশে আজ গুজরাত-সহ নানা রাজ্যের পাশাপাশি দিল্লিতেও বিক্ষোভ দেখায় যুব ও মহিলা কংগ্রেস। দিল্লিতে রেল-রোকোও করে তারা। কংগ্রেস সূত্রের মতে, কৃষক অসন্তোষ নিয়ে এ বারে রাজ্য সফরে বেরোবেন রাহুল। মধ্যপ্রদেশের পর তাঁর গন্তব্য উত্তরপ্রদেশ। ক্ষোভ প্রশমনে এ দিনই রাজ্যের ৮৬ লক্ষ কৃষকের ঋণ মকুবের জন্য ব্যাঙ্কগুলিকে পর্যাপ্ত টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।

এর মধ্যেই মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস বিধায়ক শকুন্তলা খটিকের একটি ভিডিও প্রচার করে বিজেপি দেখাতে চেষ্টা করেছে, মন্দসৌরে পুলিশের ওপর চড়াও হওয়ার জন্য উস্কানি দিয়েছেন তিনি। কংগ্রেসের পাল্টা দাবি, তাঁদের নেত্রীর কেন্দ্র ঘটনাস্থল থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে গ্বালিয়রে। খটিক সে দিন মন্দসৌরে ছিলেনই না। পুরনো ভিডিও প্রচার করে বিজেপি নজর ঘোরাতে চাইছে।

রাজনাথ সিংহ, বেঙ্কাইয়া নায়ডুর মতো মোদী সরকারের মন্ত্রীরা অবশ্য কৃষক-দরদি ভাবমূর্তি জিইয়ে রাখতে লাগাতার চেষ্টা করছেন। কিন্তু কংগ্রেসের সচিন পায়লটের প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী চুপ কেন? আর তাদের শরিক শিবসেনাই বা কেন দ্বিমুখী অবস্থান নিচ্ছে? কৃষকদের পাশে থাকতে হলে বিজেপি সরকার ছেড়ে বেরিয়ে আসুক তারা। সরকারের অস্বস্তি আজ বাড়িয়ে তুলেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।

সংগঠনের নেতা সুরেন্দ্র জৈন বলেছেন, কৃষকদের অসন্তোষ তীব্র হয়ে উঠেছে। লোকসভা ভোটের সময় বিজেপি স্বামীনাথন কমিটির সুপারিশের পক্ষে কথা বলেছিল। সেটি রূপায়ণ হলে আজ এই কৃষক-বিক্ষোভ হতো না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন