জম্মু ও কাশ্মীরের কুলগাঁওয়ে সেনার সঙ্গে জঙ্গিদের গুলির লড়াই চলছে। —ফাইল চিত্র।
রাতভর সেনা-জঙ্গি গুলির লড়াই চলছে জম্মু ও কাশ্মীরের কুলগাঁওয়ের জঙ্গলে। টানা ন’দিন ধরে জঙ্গির খোঁজে ওই এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে ভারতীয় সেনা এবং জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। এই অভিযানের পোশাকি নাম ‘অপারেশন অখল’। জানা গিয়েছে, শনিবার রাতভর জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে চার জওয়ান গুরুতর আহত হন। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেনা সূত্রের খবর, তাঁদের মধ্যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
১ অগস্ট থেকে দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগাঁও জেলার অখল জঙ্গলে অভিযান শুরু করেছে ভারতীয় সেনা। প্রথম দিনেই তিন জঙ্গিকে নিকেশ করেছিল নিরাপত্তাবাহিনী। পরে গত আট দিনে আরও বেশ কয়েক জন জঙ্গিকে শেষ করেছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং সিআরপিএফের যৌথ বাহিনী। জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে এখনও পর্যন্ত ১০ জন জওয়ান আহত হয়েছেন বলে খবর।
অখল জঙ্গলে ঘাঁটি করেছে জঙ্গিরা, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান শুরু হয়। ওই ঘন জঙ্গলে ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে কয়েকটি গুহা। সেনাবাহিনীর অনুমান, ওই গুহার মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে জঙ্গিরা। কোথায় কোথায় তারা রয়েছে, তার খোঁজে ড্রোন এবং হেলিকপ্টার ব্যবহার করছেন সেনাবাহিনী।
কুলগাঁও থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে ছোট্ট গ্রাম অখল। এই গ্রাম কুলগাঁও জেলার অন্তর্গত। গোয়েন্দা সূত্রে সেখানেই জঙ্গিদের অবস্থানের খোঁজ পেয়েছিল সেনা। এর পর ‘অপারেশন অখল’-এর পরিকল্পনা করা হয়। নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে প্রথমে জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছিল। জওয়ানদের লক্ষ্য করে জঙ্গিরা গুলি চালালে শুরু হয় সংঘর্ষ।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছিল। তাতে মৃত্যু হয়েছিল ২৬ জনের। তার পর পাকিস্তানের সঙ্গে সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ভারত, যার ফলে এখনও দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তলানিতে। পহেলগাঁও হামলার তিন মাস পর সম্প্রতি ওই ঘটনায় জড়িত তিন জঙ্গিকে হত্যা করেছে সেনা। সেই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অপারেশন মহাদেব’। সেনার গুলিতে মৃত্যু হয় সুলেমন ওরফে আসিফের, যে পহেলগাঁও হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ বলে অভিযোগ। এ ছাড়া তার দুই সঙ্গী জিব্রান এবং হামজ়া আফগানিকেও হত্যা করা হয়েছে। তিন জনেই পাকিস্তানের নাগরিক। তার কিছু দিনের মধ্যে কুলগাঁওয়ে নতুন অভিযান শুরু করে নিরাপত্তাবাহিনী।