‘পদ্মাবত’ প্রতিবাদের জেরে বুধবার বন্ধ চিতোর দুর্গ।
‘পদ্মাবত’-এর মুক্তি আটকাতে বিক্ষোভ এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, বন্ধ করে দিতে হল রাজস্থানের চিতোরদুর্গ। বুধবারের আগেও এক বার বন্ধ রাখতে হয়েছে এই দুর্গকে। তবে, সেটাও এই পদ্মাবতের মুক্তি নিয়েই। গত বছরের নভেম্বরের পর ফের চিতোর দুর্গ এমন ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হল। ইতিহাসে এর আগে এমন করে এই দুর্গ বন্ধ রাখতে হয়েছে বলে কেউই মনে করতে পারছেন না।
এনডিটিভি-র খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাতে জোর করে চিতোর দুর্গে প্রবেশের চেষ্টা করেন করণী সেনার সদস্যরা। কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বন্ধ করে দেওয়া হয় দুর্গ।
পদ্মাবতের মুক্তি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই কড়া অবস্থান নিয়েছে। সমস্ত রাজ্যে ওই সিনেমার মুক্তি নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকারগুলিকে নির্দেশও দেয় শীর্ষ আদালত। আগামিকাল ছবির মুক্তির দিন। কিন্তু রাজস্থানে ওই ছবি আদৌ মুক্তি পাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বুধবারও রাজপুত করণী সেনার প্রধান লোকেন্দ্র সিংহ কালভি হুমকি দিয়েছেন, ‘‘রাজস্থানে এই ছবি আমরা প্রদর্শন করতে দেব না’’।
রাজস্থানের বেওয়ারে করণী সেনার বিক্ষোভ। ছবি: পিটিআই।
প্রথমে সঞ্জয় লীলা ভন্সালী পরিচালিত এই ছবি ‘পদ্মাবতী’ নামে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল ১ ডিসেম্বর ২০১৭-য়। ঠিক তার ১২ দিন আগে, গত ১৮ নভেম্বর প্রথম বার করণী সেনার প্রতিবাদের জেরেই বন্ধ ছিল রাজস্থানেরএই দুর্গ। করণী সেনার সদস্যরা সেদিন দুর্গের বাইরে ধর্নায় বসেছিলেন। সঞ্জয় লীলা ভংসালী ও দীপিকার কুশপুতুল পুড়িয়েছিলেন। শূন্যে গুলি চালানোরও অভিযোগ উঠেছিল। প্রায় আড়াই মাস পর ফের ‘পদ্মাবত’-এর কারণেই দ্বিতীয় বার বন্ধ হল এই ঐতিহাসিক স্থান।
আসলে, এই ছবি মুক্তি পেলে আত্মাহুতির হুমকি দিয়েছিলেন রাজপুত মহিলারা। গত রবিবার রাজস্থানের চিতোরগড়ে প্রায় ৫০০ রাজপুত মহিলা একটি ‘স্বাভিমান’ মিছিল বের করেন। সেখানেই তাঁরা স্লোগান তুলেছিলেন ‘পদ্মাবত’ মুক্তি বন্ধ করতে হবে।না হলে তাঁদের ‘জহর’ ব্রত বা আগুনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করারঅনুমতি দিতে হবে। মঙ্গলবার করণী সেনার এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রায় ১৯০০ মহিলা ‘জহর’ ব্রত করতে রাজি হয়েছেন।
আরও পড়ুন, ‘পদ্মাবত’ রোষ, হলে ভাঙচুর-আগুন-স্লোগান
আরও পড়ুন, দরবার বিফল দুই রাজ্যের
ছবির শুটিং শুরুর সময় থেকেই এই ছবির মুক্তি নিয়ে প্রতিবাদ শুরু করেছিল রাজপুতদের এই সংগঠনটি। শুটিং সেটে পরিচালককে মারধর, ভাঙচুরের মতো ঘটনাও ঘটেছিল। এর পর সেই বিক্ষোভের জল গড়ায় গোটা দেশে। মুক্তির এক দিন আগেও যে বিক্ষোভের ঝাঁঝ একটুও কমেনি। যার জেরে চিতোরগড় দুর্গ দু’বার বন্ধ রাখার মতো নজিরবিহীন সিদ্ধান্তও নিতে হল কর্তৃপক্ষকে।
রাজস্থানের পাশাপাশি এ দিন গুজরাত, হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রেরও বিক্ষোভ হয়। রাস্তা অবরোধ, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে প্রতিবাদ চলে।