রান্নার সময়ে কী কী ভুল হয়? ছবি: সংগৃহীত।
রান্নার সময়ে কত উপকরণ দিচ্ছেন, কতখানি দিচ্ছেন, কেবল তার উপরই স্বাদ নির্ভর করে না। রন্ধনশৈলীর বড় অংশ জুড়ে রয়েছে সময় এবং তাপমাত্রা বোঝার ক্ষমতা। কোন মশলা কখন রান্নায় মেশাচ্ছেন, অথবা মশলা বা উপকরণের তাপমাত্রা কত রয়েছে, এমনই অনেক কিছু খাবারের স্বাদের সমীকরণ বদলে দিতে পারে। কিছু সাধারণ ভুলের ফলেই স্বাদ ভারসাম্য হারায়, অতিরিক্ত মশলাদার বা তিতকুটে হয়ে যায়, কাঙ্ক্ষিত স্বাদ তৈরিই হয় না, অথবা পুষ্টির অভাব বা খাবারে ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণও ঘটতে পারে।
রান্নার সময়ে কোন কোন ভুল করেন আপনি? ছবি: সংগৃহীত।
মুম্বইয়ের রন্ধনশিল্পী স্বপ্নিল দেশাই ভারতীয় রান্নার এমনই ৬টি ভুলের কথা উল্লেখ করেছেন নিজের ইনস্টাগ্রামের পোস্টে। কী কী সেগুলি?
১. সর্ষের দানা পুড়িয়ে ফেলা: সর্ষের দানা ফোড়ন দিলে অনেক ক্ষেত্রেই ছোট ভুল হয়ে যায়। গরম কড়াইয়ে ঠিক কত ক্ষণ সর্ষে নাড়াচাড়া করা উচিত, তা অনেকের কাছেই অজানা। ফলে একাধিক সময়ে দেখা যায়, সর্ষে অতিরিক্ত ভাজা হয়ে গিয়েছে। তাতে সর্ষের তেতো স্বাদ তীব্র হয়ে ওঠে। রান্নায় মেশালে গোটা খাবারের স্বাদে তিতকুটে ভাব চলে আসে।
২. ফ্রিজে রাখা নারকেল দুধ ব্যবহার: নারকেলের দুধ রান্নার ঢালার আগে সেটির তাপমাত্রা কেমন, তা যাচাই করে নেওয়া দরকার। অনেকেই ফ্রিজে রাখা শিশি থেকে গরম রান্নায় সরাসরি নারকেলের দুধ মিশিয়ে দেন। এর ফলে দুধ নষ্ট যাবে রান্নার মধ্যেই। তাই সর্বদা রান্নায় মেশানোর আগে নারকেলের দুধকে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় নিয়ে আসা দরকার।
৩. পেঁয়াজে নুনের ব্যবহারের সময়: তেলে পেঁয়াজ ভাজার পর পরই অনেকে নুন মিশিয়ে দেন। তাতে পেঁয়াজের স্বাভাবিক মিষ্টি স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। তাই পেঁয়াজ ভাজার সময়ে সেগুলি হালকা বাদামি রং ধরার পর নুন মেশানো উচিত।
৪. কাঁচা টম্যাটো দিয়ে ফোড়ন: বিভিন্ন রান্নায় টম্যাটো ফোড়ন দেওয়ার অভ্যাস রয়েছে অনেকের। টম্যাটো ফোড়ন দেওয়ার মূল নিয়ম হল, তেলে হালকা ভেজে নিয়ে তার পর ফোড়ন হিসেবে ব্যবহার করা উচিত। কিন্তু অনেকেই কাঁচা টম্যাটো ফোড়ন হিসেবে দিয়ে ফেলেন কড়াইয়ে। এতে টম্যাটোর প্রকৃত স্বাদ ফুটে ওঠে না।
৫. রসুন পুড়িয়ে ফেলা: রান্নার সময়ে রসুন সর্বদা সোনালি রং ধারণ করবে, বাদামি হয়ে গেলে তা রান্নার ভুল। গরম তেলে ঠিক তত ক্ষণই রসুনের কুচি রান্না করা উচিত, যত ক্ষণ না সোনালি রং ধরে। রং ধরার সঙ্গে সঙ্গেই আঁচ থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে, বা আগুন বন্ধ করে দিতে হবে কিংবা অন্য আনাজ বা মশলা মিশিয়ে দিতে হবে। বাদামি হয়ে যাওয়া মানেই রসুন পুড়ে গিয়েছে। এতে রসুনের স্বাদ তিতকুটে হয়ে যায়।
৬. গরম রান্নায় ঠান্ডা জল: গরম তেলে মশলা কষানোর পর ঝোল তৈরির জন্য জলের প্রয়োজন। আর সেখানেই গণ্ডগোল হয়ে যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে। সরাসরি জলের বোতল বা কাপে করে জল কড়াইয়ে ঢেলে দেওয়ার মতো ভুল অভ্যাস রয়েছে অনেকের। ফলে খাবারের স্বাদ ও গড়ন, সবই ওলটপালট হয়ে যায়।