সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাকযুদ্ধ উত্তাপ ছড়াতে পারে রাজ্য় রাজনীতিতে। ফাইল ছবি।
ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে কনকনে ঠান্ডার দাপটে কাঁপছে কলকাতা। কিন্তু সেই শীতল আবহেই সোমবার রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়ানোর সম্ভাবনা প্রবল। সপ্তাহের প্রথম দিনেই কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের বিএলএ-দের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সভা করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, সেই সভার জবাব দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফলে সোমবার শহরে রাজনৈতিক সংঘাতের আবহ।
সূত্রের খবর, সোমবার দুপুরে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কলকাতা ও তৎসংলগ্ন জেলার বাছাই করা বিধানসভার বিএলএ-দের নিয়ে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতার ১১টি বিধানসভা কেন্দ্রের পাশাপাশি উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলি জেলার বাছাই করা কিছু বিধানসভা কেন্দ্রের বিএলএ-দের ডাকা হয়েছে এই বৈঠকে। ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (এসআইআর) প্রক্রিয়া নিয়ে তৈরি হওয়া পরিস্থিতিই এই বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয় বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
এসআইআরের পর প্রথম পর্যায়ে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর সারা রাজ্যে প্রায় সাড়ে ৫৮ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ পড়েছে। শতাংশের বিচারে সবচেয়ে বেশি ভোটার বাদ যাওয়ার নজির গড়েছে কলকাতার ১১টি বিধানসভা কেন্দ্র। সেই তালিকায় মুখ্যমন্ত্রীর নিজের কেন্দ্র ভবানীপুরও রয়েছে। যদিও ভবানীপুরের বিএলএ-দের নিয়ে গত সপ্তাহেই কালীঘাটের বাসভবনে বৈঠক করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, বিএলএ-দের নিয়ে আরও বৃহত্তর পরিসরে আলোচনা হবে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, সোমবারের সভামঞ্চ থেকে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে সরব হতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপিকেও তাঁর নিশানায় রাখার সম্ভাবনা প্রবল। ফলে মমতার বক্তব্যে কী বার্তা উঠে আসে, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
সোমবার প্রায় সেই সময় বিধানসভায় উপস্থিত থাকবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওইদিন বিধানসভায় দলের একাধিক বিধায়ককে তলব করেছেন তিনি। নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের উপর নজর রাখবে বিজেপির পরিষদীয় দল। মমতা বিজেপি নেতৃত্ব বা কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করলেই বিধানসভার বাইরে সাংবাদিক বৈঠক করে পাল্টা জবাব দেবেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। এর আগেও একাধিকবার দেখা গিয়েছে, নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্যমন্ত্রীর সভার পরপরই পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন শুভেন্দু। ফলে সোমবার শীতের হিমেল হাওয়াকে ছাপিয়ে মমতা-শুভেন্দুর রাজনৈতিক দ্বৈরথ রাজ্যের রাজনীতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।