জ্যোতি মলহোত্রার বাবা হরিশ মলহোত্রা। — ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ইউটিউবার জ্যোতি মলহোত্রা। তবে মেয়ের পাক যোগ নিয়ে এখনও অন্ধকারে জ্যোতির পরিবার। এমনকি, মেয়ে যে আদতে পাকিস্তানে ঘুরতে গিয়েছিলেন, তা-ও জানতেন না জ্যোতির বাবা। জানতেন না ইউটিউব বা অন্যান্য সমাজমাধ্যমে মেয়ের অ্যাকাউন্ট থাকার কথাও!
সোমবার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জ্যোতির বাবা হরিশ মলহোত্রা দাবি করেছেন, মেয়ের প্রতিবেশী দেশে ভ্রমণ সম্পর্কে তাঁরা কিছুই জানতেন না। মেয়ে যে ইউটিউবে ভিডিয়ো বানানোর জন্য সুপরিচিত ছিলেন, সে সবও তাঁরা জানতেন না বলেই দাবি হরিশের। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, হরিয়ানার হিসারের বাসিন্দা জ্যোতি অন্তত দু’বার পাকিস্তান সফর করেছিলেন। তবে হরিশ বলছেন অন্য কথা। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়ে আমাকে বলত যে ও দিল্লি যাচ্ছে। আমাকে এ সব বিষয়ে কখনও কিছুই বলেনি।’’ এর আগে শনিবার হরিশই জানিয়েছিলেন, ভিডিয়ো বানানোর জন্য পাকিস্তানে গিয়েছিলেন জ্যোতি। তবে সোমবার নিজের বয়ান বদলে তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে বাড়িতেই ভিডিয়ো বানাত। করোনা অতিমারির আগে জ্যোতি দিল্লিতে কাজ করত। কিন্তু পরে চাকরি ছেড়ে দিয়ে ভিডিয়ো বানানো শুরু করে। তবে পাকিস্তান যাওয়ার বিষয়ে কখনও কিছু বলেনি।’’
জ্যোতির ইউটিউব চ্যানেলের নাম ‘ট্রাভেল উইথ জো’। অনুগামীর সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৩২ হাজার। সেখানে ৪৫০-রও বেশি ভিডিয়ো রয়েছে। কিছু ভিডিয়োয় রয়েছে তাঁর সাম্প্রতিক পাকিস্তান সফরের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনাও। জ্যোতির গ্রেফতারির পর থেকে ‘পাকিস্তানে ভারতীয় মেয়ে’, ‘ভারতীয় মেয়ের লাহৌর ঘুরে দেখা’, ‘পাকিস্তানে বিলাসবহুল বাসে চড়া’ ইত্যাদি ক্যাপশন-সহ পোস্ট করা সেই ভিডিয়োগুলি সমাজমাধ্যমে কয়েক লক্ষ মানুষ দেখে ফেলেছেন। কোনও ভিডিয়োয় জ্যোতি লাহৌরের রেস্তরাঁয় গল্প করতে করতে খাচ্ছেন, কখনও আবার কথা বলছেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ় শরিফের কন্যা তথা পঞ্জাব প্রদেশের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম শরিফের সঙ্গে। সে সব ছবি-ভিডিয়ো নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে। জ্যোতির ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউব চ্যানেলের অন্যান্য ভিডিয়ো ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, মাস দুয়েক আগে, অর্থাৎ পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর ঘটনার কিছু দিন আগেই পাকিস্তান গিয়েছিলেন তিনি। অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত পেরিয়ে ও পারে যাওয়া, লাহৌরের আনারকলি বাজার, পাক পঞ্জাবের কটাস রাজ মন্দির ঘুরে দেখার ভিডিয়োও রয়েছে। পাকিস্তানের খাবার এবং ভারত-পাকিস্তানের সংস্কৃতির তুলনা করে একাধিক ভিডিয়ো বানিয়েছিলেন ওই ইউটিউবার। সেই সব নিয়েই এখন চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে।