ভারতের জন্য এখনও বন্ধ রয়েছে পাকিস্তানের আকাশপথ। —ফাইল চিত্র।
ভারতীয় বিমানগুলির জন্য এখনও বন্ধ রয়েছে পাকিস্তানের আকাশসীমা। অর্থাৎ, এখনও পাকিস্তানের আকাশপথ ব্যবহার করতে পারছে না ভারতীয় কোনও বিমানসংস্থা। এই বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও বৃদ্ধি করা হতে পারে। পাক সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ়ের রিপোর্ট উল্লেখ করে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। এই সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বুধবার বা বৃহস্পতিবার।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করেছিল ভারত। তার পাল্টা হিসাবে পাকিস্তানও বেশ কিছু বিধিনিষেধের কথা ঘোষণা করে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল আকাশসীমা বন্ধের নির্দেশ। ইসলামাবাদ বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেয়, পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারবে না ভারতের কোনও বিমানসংস্থা। এর ফলে এয়ার ইন্ডিয়া-সহ ভারতের বিভিন্ন সংস্থাগুলির উপর চাপ বেড়েছিল। যাত্রীদের ভোগান্তিও বেড়ে গিয়েছিল। কারণ পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করতে না পেরে ঘুরপথে যেতে হচ্ছিল ভারতীয় বিমানগুলিকে। ফলে অনেকটা বাড়তি পথ অতিক্রম করতে হচ্ছিল। বাড়তি জ্বালানিও খরচ হচ্ছিল। এই ঘোষণার কিছু দিনের মধ্যে ভারতও পাল্টা পাকিস্তানের বিমানগুলির জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়। পরে ভারত-পাক সংঘর্ষ তীব্র আকার নিলে সব দেশের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করেছিল ইসলামাবাদ।
গত ১০ মে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে ভারত এবং পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তার পর অন্য দেশের জন্য আকাশসীমা খুলে দিয়েছিল পাকিস্তান। তবে ভারতের জন্য এখনও তা বন্ধই রয়েছে। পিটিআই জানিয়েছে, ভারতের জন্য পাক আকাশসীমা প্রাথমিক ভাবে বন্ধ করা হয়েছিল ২৩ মে পর্যন্ত। কারণ, আন্তর্জাতিক অসামরিক বিমান পরিবহণ সংস্থা (আইসিএও)-র নিয়ম অনুযায়ী, কোনও দেশের জন্য আকাশপথ এক বারে এক মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ করে রাখা যায় না। এই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পাকিস্তান নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারে।
পহেলগাঁওয়ের ঘটনার জবাবে গত ৬ মে মধ্যরাতে পাকিস্তানে প্রত্যাঘাত করে ভারত। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি। তার পর পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালায়। টানা চার দিন ধরে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ চলেছে। গত ১০ মে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন্স (ডিজিএমও) ‘হটলাইনে’ আলোচনা করেন এবং সংঘর্ষবিরতির সিদ্ধান্ত নেন। তবে ভারত এবং পাকিস্তান একে অপরের বিরুদ্ধে অন্য যে পদক্ষেপগুলি করেছিল, সেগুলির বিষয়ে এখনও কোনও সুরাহা হয়নি। এখনও সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত রেখেছে ভারত। একই ভাবে পাকিস্তানও আকাশসীমা খুলে দেওয়ার পথে এখনই হাঁটছে না।