রামবিলাস পাসোয়ান।
আর্থিক ভাবে অনগ্রসর উচ্চবর্ণের মানুষদের জন্য সংরক্ষণের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে ঘরোয়া বিবাদে জড়িয়ে পড়লেন লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি) প্রধান এবং কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান। লালুপ্রসাদের রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) এই সংরক্ষণের বিরোধিতা করায় নাম না করে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ী দেবীকে ‘অঙ্গুঠা ছাপ’ মুখ্যমন্ত্রী বলে কটাক্ষ করেছিলেন রামবিলাস। এর পরই এই মন্তব্যের জন্য রামবিলাস পাসোয়ানকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তুললেন তাঁরই মেয়ে আশা পাসোয়ান। ক্ষমা না চাইলে এলজেপি অফিসের সামনে ধর্ণায় বসার হুমকিও দিয়েছেন তিনি।
আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া উচ্চবর্ণের মানুষদের জন্য সংরক্ষণ নিয়ে শুরু থেকেই বিজেপির পাশে আছে কেন্দ্রে এনডিএ জোট শরিক এলজেপি। আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিহারে নীতীশ কুমারের জনতা দল (ইউনাইটেড) এবং বিজেপির সঙ্গে জোট গড়েই লড়বে এলজেপি, সেই সিদ্ধান্তও এখন পাকা। অন্য দিকে এনডিএ জোটের সামনে বিহারে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে আসা লালুপ্রসাদের আরজেডি শুরু থেকেই এই সংরক্ষণের বিপক্ষে। তা নিয়েই শুক্রবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে আরজেডি-র সমালোচনা করছিলেন রামবিলাস। তখনই তিনি মন্তব্য করে বসেন, ‘‘ খামোকা স্লোগান দেওয়া এবং ‘অঙ্গুঠা ছাপ’ মুখ্যমন্ত্রী বানানো ছাড়া আর কোনও কাজ নেই আরজেডি-র। ’’
নাম না করলেও রামবিলাসের মন্তব্যে স্পষ্ট, তিনি আসলে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ী দেবীকে উদ্দেশ্য করেই এই মন্তব্য করেছেন। ১৯৯৭ সালে গোখাদ্য কেলেঙ্কারির অভিযোগে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবকে গ্রেফতার করা হলে তাঁর জায়গায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেছিলেন রাবড়ী দেবী। এর পর প্রায় আট বছর বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার সামলেছিলেন রাবড়ী।
শনিবার রামবিলাসের এই মন্তব্যের পর প্রতিবাদ এল তাঁর নিজের ঘর থেকেই। রামবিলাসের বড় মেয়ে আশা পাসোয়ানের দাবি, ‘‘ বাবা রাবড়ী দেবীর প্রতি অসম্মানজনক মন্তব্য করেছেন। আমার মা-ও নিরক্ষর। হয়তো সেই কারণেই আমার মায়ের সঙ্গে থাকেন না বাবা। এই অসম্মানজনক মন্তব্যের জন্য বাবাকে ক্ষমা চাইতেই হবে। নয়তো আমি বাবার এলজেপি অফিসের সামনে ধর্ণায় বসবো।’’
আরও পড়ুন: বিজেপির রক্তচাপ বাড়িয়ে জোট ঘোষণা মায়াবতী, অখিলেশের
আশা পাসোয়ান রামবিলাসের প্রথম পক্ষের স্ত্রী-র বড় মেয়ে। দীর্ঘ দিন আগেই প্রথম পক্ষের স্ত্রী রাজকুমারী দেবীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় রামবিলাসের। নিজের দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে চিরাগ পাসোয়ানের হাতেই দলের দায়িত্বভার দিতে মনস্থির করেছেন রামবিলাস। তা নিয়ে বিভিন্ন সময় অভিযোগও তুলেছেন তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রীর ছেলেমেয়েরা। যদিও দলের উত্তরাধিকার এখন চিরাগের হাতেই। এর প্রতিবাদে গত বছরই এলজেপি ছেড়়ে প্রতিপক্ষ আরজেডি শিবিরে নাম লিখিয়েছেন আশা। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, বাবার বিরুদ্ধে ভোটেও দাঁড়াতে পারেন তিনি। হয়তো তারই মহড়া বাবাকে দেওয়া মেয়ের এই হুঁশিয়ারি।
আরও পড়ুন: দুর্বল সরকার গড়ার চেষ্টা চলছে, বিরোধীদের জোট রাজনীতিকে কটাক্ষ মোদীর
ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।