ছবি: এএফপি।
বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া। আর তার জবাবে বাহিনীর ছররা। কাশ্মীরে এই ঘটনা থামার কোনও লক্ষণ যে দেখা যাচ্ছে না তা ফের প্রমাণিত শোপিয়ানে।
গত কাল শোপিয়ানের কুন্দালানে জঙ্গি দমন অভিযান রুখতে বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়েন স্থানীয়দের একাংশ। বাহিনীর ছররা গুলিতে আহত ১২ জনকে শ্রীনগরের শ্রী মহারাজা হরি সিংহ হাসপাতালে আনা হয়েছে।
হাসপাতালে বসে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিলেন জারিফা বেগম। বললেন, ‘‘আমার স্বামীকে ওরা অন্ধ করে দিল।’’ জারিফার স্বামী রফিক আহমেদ মালিকের চোখে ছররা লেগেছে। এ দিন তাঁর চোখে অস্ত্রোপচারও করেছেন চিকিৎসকেরা। ছররায় আঘাতের অভিজ্ঞতা যাঁদের নেই তাঁরা বার বার চিকিৎসকদের কাছে জানতে চাইছিলেন, আহতদের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না। চিকিৎসকেরা স্পষ্ট জবাব দেননি।
পরে চক্ষুবিশেষজ্ঞ মুনির কুরেশি জানান, ছররার আঘাতের পরে কেউ পুরোপুরি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাননি। শ্রী মহারাজা হরি সিংহ হাসপাতালের আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে ছররায় আহত মুজফ্ফর হুসেনকে। চিকিৎসক তুফেল জানালেন, মুজফ্ফরের ফুসফুসে ও মাথার মধ্যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তবে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হবেন বলেই আশা চিকিৎসকদের।
শোপিয়ানের ঘটনা ফের ২০১৬ সালের গ্রীষ্মের কথা মনে করাচ্ছে কাশ্মীরবাসীকে। হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পরে দীর্ঘদিন ধরে অশান্ত কাশ্মীর। তার জেরে এখনও পর্যন্ত শ্রীনগরের হাসপাতালে ভর্তি ছররায় আহত প্রায় ৯ হাজার জন। তাঁদের মধ্যে ১১০০ জনের চোখে আঘাত লেগেছে। ছররা ব্যবহার নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের সমালোচনার মুখেও পড়েছে সরকার।
২০১০ সালের বিক্ষোভের সময়ে চোখে ছররা লেগেছিল শ্রীনগরের বাসিন্দা আমির কবীর বেগের। তাঁর মতে, ‘‘ছররায় অন্ধ হয়ে গেলে মানুষের সমস্ত স্বাধীনতা চলে যায়।’’