এইচডি দেবগৌড়া।
২৫ ডিসেম্বর উদ্বোধন হয়ে গেল অসমের ব্রহ্মপুত্রের উপর তৈরি দেশের দীর্ঘতম দোতলা ব্রিজ বগিবিল। উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু যাঁর জমানায় এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়েছিল, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সেই দেবেগৌড়াকেই ডাকা হল না বগিবিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে!
১৯৯৭ সালে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার আমলে বগিবিলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়। সেই ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেছিলেন তিনি। নানা কারণে মাঝে কেটে গিয়েছে ২০টি বছর। ২১ বছরের মাথায় ২০১৮-তে সম্পূর্ণ রূপ পেল বগিবিল। ঘটা করে উদ্বোধনও হল। কিন্তু তাঁকে আমন্ত্রণ না জানানোয় প্রচন্ড হতাশ হলেন দেবগৌড়া।
তাঁর জমানাতেই সূচনা হওয়া সেতুর উদ্বোধন হচ্ছে, কেমন অনুভব হচ্ছে? সাংবাদিকরা যখন তাঁকে এই প্রশ্ন করেন দেবগৌড়া বলেন, “প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন কাশ্মীরে রেল পরিষেবা, দিল্লি মেট্রো এবং বগিবিলের মতো প্রকল্পগুলো অনুমোদন পেয়েছিল। প্রত্যেকটি প্রকল্প এবং তাদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য ১০০ কোটি টাকা করে বরাদ্দ করেছিলাম। সে সব মানুষ সব ভুলে গিয়েছে।”
আরও পড়ুন: ‘অখিলেশ জিন্দাবাদ’ বলায় প্রতিবন্ধীর মুখে লাঠি ঢোকালেন বিজেপি নেতা!
তাঁকে কি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে? একটু মুচকি হেসে উত্তর দেন, “আইয়ো রামা! কে আমাকে মনে রাখবে? কিছু সংবাদপত্রে হয়ত এ ব্যাপারে লেখালেখি হয়ে থাকতে পারে।”
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন— দুটোই তাঁর জমানাতে হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও এত সময় লেগে গেল সেতুটি তৈরি হতে? এ প্রসঙ্গে দেবগৌড়া হাসান-মাইসুরু প্রকল্পের উদাহরণ তুলে দরেন। সেই প্রকল্প তিনি ১৩ মাসের মধ্যে শেষ করিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, আরও দুটো সেতু সময়ের মধ্যে শেষ করেছিলেন। বলেন, “গিয়ে দেখে আসুন কৃষ্ণা নদীর উপর দাঁড়িয়ে থাকা ব্রিজটা। সেটাও আমারই জমানায় তৈরি!”
আরও পড়ুন: ডিব্রুগড়-ধেমাজি, জুড়ল ব্রহ্মপুত্রের দু’পার
আরও পড়ুন: নেই কোনও নাট-বোল্ট, তীব্র ভূমিকম্পও সইতে সক্ষম দেশের দীর্ঘতম এই দোতলা ব্রিজ
উত্তর কর্নাটকের জন্য কোনও কাজ করেননি, এমন অভিযোগ উঠেছে দেবগৌড়ার বিরুদ্ধে। এই অভিযোগকে সরাসরি খারিজ করে দেন তিনি। বলেন, “ওই অঞ্চলের অনেকেই এমন অভিযোগ তুলছেন ঠিকই, কিন্তু সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি দেখলে বুঝতে পারবেন উন্নয়ন হয়েছে কিনা!”
বগিবিল সেতু সূত্রধর ছিলেন তিনিই, আর সেই সূত্রধরকে এমন ‘অবহেলা’ করায় হতাশাই ঝরে পড়েছিল দেবগৌড়ার গলায়।