গুজরাতে প্রৌঢ়াকে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করে প্রতারণার অভিযোগ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম। গ্রাফিক সহায়তা: এআই।
এক চিকিৎসককে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করে ১৯ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রতারকদের বিরুদ্ধে। গুজরাতের গান্ধীনগরের ওই প্রৌঢ়াকে ১০২ দিন ধরে প্রতারণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সাইবার প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে তাঁদের দাবিমতো টাকা মেটানোর জন্য নিজের বেশ কয়েকটি স্থায়ী আমানত (ফিক্স়ড ডিপোজ়িট) ভাঙেন চিকিৎসক। শুধু তা-ই নয়, ঋণও নেন তিনি। প্রৌঢ়ার থেকে হাতানো ১৯ কোটি টাকা ৩০টি ভিন্ন ভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় ইতিমধ্যে এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকিদেরও খোঁজ চলছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত মার্চ মাসে। প্রথমে এক অচেনা নম্বর থেকে তাঁর কাছে ফোন আসে। ফোনের অপর প্রান্তে এক মহিলা কণ্ঠস্বর। তিনি নিজেকে টেলি যোগাযোগ দফতরের আধিকারিক বলে পরিচয় দেন। এর পরে পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর পরিচয়ে আরও এক জনের ফোন আসে। শেষে আরও তিনটি ফোন আসে— দু’জন আইনজীবী এবং এক জন নোটারি অফিসারের পরিচয় দেন। সকলেরই বক্তব্য একই। ওই মহিলা চিকিৎসকের মোবাইল নম্বর থেকে নাকি একটি আপত্তিকর মেসেজ পাঠানো হয়েছে। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র নাম করে ভুয়ো নথিও দেখানো হয় তাঁকে। মামলার ভয় দেখিয়ে মহিলা আধার কার্ড থেকে শুরু করে সম্পত্তির নথিপত্র চাওয়া হয় তাঁর থেকে।
সব নথিপত্র দেখে প্রতারকেরা ওই চিকিৎসককে জানায়, তাঁর প্রায় ২০ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। তদন্তের জন্য সমপরিমাণ টাকা জমা রাখতে হবে। বিভিন্ন দিক থেকে চাপের মুখে সেই ফাঁদে পড়ে যান প্রৌঢ়া। প্রতারকদের দাবিমতো টাকা জোগাড় করতে নিজের বেশ কিছু স্থায়ী আমানত ভাঙেন। সোনার গয়না বিক্রি করে দেন। তাতেও পুরো অর্থ জোগাড় না-হওয়ায় ঋণও নেন। সব মিলিয়ে প্রায় ১৯ কোটি টাকা তিনি প্রতারকদের দেওয়া ভিন্ন ভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন। পরে প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে গত সপ্তাহেই থানায় অভিযোগ জানান তিনি।
মামলার তদন্তে ইতিমধ্যে লালজি জয়ন্তিভাই বলদনিয়া নামে এক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রতারণার টাকা সরাতে যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি ব্যবহার হয়েছে, তার সঙ্গে এই ব্যক্তির যোগ পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। বাকি অভিযুক্তদেরও খোঁজ চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। একই সঙ্গে প্রৌঢ়ার থেকে হাতিয়ে নেওয়া টাকাও উদ্ধারের চেষ্টা করছে পুলিশ।