শবরীমালা মন্দিরে বুধবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ছবি: পিটিআই।
শবরীমালার মন্দিরে বুধবার পুজো দিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এর আগে কোনও মহিলা রাষ্ট্রপতি এই মন্দির দর্শনে যাননি। সত্তরের দশকে এই মন্দির দর্শনে গিয়েছিলেন ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি। সে দিক থেকে, দ্রৌপদী দেশের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি, যিনি শবরীমালায় গেলেন।
পাহাড়ের মাথায় শবরীমালা মন্দিরে পূজিত হন ঈশ্বর আয়াপ্পা। তিনি ব্রহ্মচারী। আগে এই মন্দিরে রজঃস্বলা মহিলারা (১০ থেকে ৫০ বছর বয়সি) প্রবেশ করতে পারতেন না। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট এই বিধিকে অসাংবিধানিক আখ্যা দেয়। সব বয়সের মহিলাদের প্রবেশাধিকার দেওয়ার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। সেই নিয়ে তখন বিতর্ক তৈরি হয়। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদীর এই শবরীমালা মন্দির দর্শন ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করা হচ্ছে। মঙ্গলবার চার দিনের সফরে কেরল গিয়েছেন তিনি। বুধবার পুজো দিলেন শবরীমালায়।
দ্রৌপদীর এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন বিজেপি সাংসদ বান্দি সঞ্জয় কুমার। তিনি নিজের এক্স অ্যাকাউন্টে লেখেন, ‘‘তাঁর (দ্রৌপদী মুর্মু) বয়স ৬৭। তিনি কোনও বিধি ভাঙেননি। কোনও বিশ্বাসেও আঘাত করেননি। শুধুই সে সবকে সম্মান করেছেন। তিনিই প্রথম রাষ্ট্রপতি, যিনি ইরুমুণ্ডি নিয়ে আয়াপ্পার সামনে মাথা নত করেছেন।’’ তিনি আরও লেখেন, কারও ভক্তি চিৎকার করে প্রকাশ করতে হয় না।
বুধবার সকাল ১১টায় বেসক্যাম্পে পৌঁছোন রাষ্ট্রপতি। পম্পা নদীতে পা ধুয়ে গণপতির মন্দিরে পুজো দিয়ে যাত্রা শুরু করেন। তাঁর পরনে ছিল কালো শাড়ি। মাথায় ছিল ইরুমুণ্ডি (অর্ঘ্য)। এর পরে বিশেষ গাড়িতে চেপে মন্দিরে পৌঁছোন তিনি। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান মন্দিরের প্রধান পুরোহিত। তার পরে ১৮টি সিঁড়ি পেরিয়ে রাষ্ট্রপতি পৌঁছোন মন্দিরে।
২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে বহু মহিলা শবরীমালা মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আয়াপ্পার দর্শন হয়নি। মন্দিরে প্রবেশে বাধা দিয়েছেন আয়াপ্পার ‘ভক্ত’রা। প্রতিবাদ-বিক্ষোভে আটকে দেন মন্দিরে প্রবেশের রাস্তা। শেষে ২০১৯ সালের জানুয়ারি দুই মহিলা প্রবেশ করেন। সেই শবরীমালায় এ বার গেলেন রাষ্ট্রপতি মুর্মু। তবে বিজেপির দাবি, তিনি কারও বিশ্বাসে আঘাত করেননি।