ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকায় অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন না ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেপ্টেম্বরের ২৩ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত নিউ ইয়র্কে ওই সম্মেলন হবে। ভারতের তরফে বক্তা হিসাবে রাষ্ট্রপুঞ্জের তালিকায় মোদীর নাম রাখা হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে অন্য প্রতিনিধিকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাউথ ব্লক। প্রধানমন্ত্রীর পরিবর্তে নিউ ইয়র্কে ভারতের প্রতিনিধি হিসাবে যাবেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। রাষ্ট্রপুঞ্জের সম্মেলেন তিনিই মোদীর হয়ে ভাষণ দেবেন।
রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও যোগ দেওয়ার কথা। আমেরিকার তরফে বক্তা হিসাবে রাষ্ট্রপু়ঞ্জের তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে। মোদী গেলে একই মঞ্চে আবার ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁকে দেখা যেত। অনেকে বলছেন, সে ক্ষেত্রে ট্রাম্প এবং মোদীর দ্বিপাক্ষিক একটি বৈঠকের সম্ভাবনাও জোরালো ছিল। কিন্তু তা হচ্ছে না। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর ব্রাজ়িলের ভাষণের মাধ্যমে রাষ্ট্রপুঞ্জের সম্মেলন শুরু হবে। তার পরে আমেরিকার প্রতিনিধি ভাষণ দেবেন। তালিকা অনুযায়ী ভারতের ভাষণের সময় ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ইজ়রায়েল-হামাস সংঘাত এবং পশ্চিম এশিয়ার সঙ্কট নিয়ে এই সম্মেলনে আলোচনা হতে পারে।
রাশিয়ার কাছ থেকে খনিজ তেল কেনার কারণে সম্প্রতি ভারতের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে আমেরিকা। দুই দেশের বাণিজ্য তাতে ধাক্কা খেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মোদী কিছু দিন আগে চিনে গিয়েছিলেন এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতে। সেখানে তাঁর সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের পৃথক বৈঠক হয়েছে। চিন এবং রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের এই ঘনিষ্ঠতা ভাল চোখে দেখেননি ট্রাম্প। তা ছাড়া, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা এবং তৎপরবর্তী পাকিস্তানের সঙ্গে সেনা সংঘাত নিয়েও ট্রাম্পের সঙ্গে নয়াদিল্লির মতানৈক্য রয়েছে। ট্রাম্প বার বার দাবি করেছেন, তিনি ভারত ও পাকিস্তানের সংঘর্ষ থামিয়েছেন। ভারত তা মানেনি। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকায় গেলে ট্রাম্পের সঙ্গে কিছু না হলেও অন্তত হাত মেলাতে হত মোদীকে। অনেকের মতে, তাতে জনমানসে ভুল বার্তা যেতে পারত। এই মুহূর্তে সাউথ ব্লক তা চাইছে না। অনেকে আবার বলছেন, মোদী গেলে ট্রাম্পের সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলে বাণিজ্য সমস্যার সমাধান করতে পারতেন। জয়শঙ্কর গেলে তা না-ও হতে পারে।
শুক্রবার মোদী, পুতিন এবং জিনপিঙের একটি ছবি পোস্ট করে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘ভারত এবং রাশিয়াকে আমরা চিনের অন্ধকারে হারিয়ে ফেলেছি।’’ তবে তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মতবদল করে মার্কিন প্রেসি়ডেন্ট জানান, ভারতকে হারাননি। বরং মোদীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুব ভাল। শুধু রাশিয়ার থেকে তেল আমদানি নিয়ে তিনি কিছুটা হতাশ। ট্রাম্পের মতবদল ভারত ও আমেরিকার সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলল বলে মনে করছেন অনেকে।