রাহুল গাঁধী
তক্ষশীলা বিহারে! মহাত্মা গাঁধীর প্রকৃত নাম মোহনলাল কর্মচন্দ্র! চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য গুপ্ত বংশের রাজা! লোকসভা ভোটের প্রচারে এমন অনেক ভুল বেরিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর মুখ থেকে। যা চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে বিজেপিকে। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেও মোদীর মুখ থেকে এ ধরনের আরও বেশ কিছু ভুল বিড়ম্বনা বাড়িয়েছে দলের। তাঁর গত কালের এক মন্তব্য ও তার সূত্রে কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর টুইট বেজায় বিড়ম্বনায় ফেলে দিয়েছে।
দিল্লিতে দলের নতুন সদর দফতরের ভূমি-পূজন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘ইংরেজ আমলে কংগ্রেসকে যত না সমস্যায় পড়তে হয়েছিল, বিজেপি কর্মীদের তার চেয়ে অনেক বেশি সমস্যার মুখে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয়।’’ কর্মীদের চাঙ্গা করতে ওই মন্তব্য করে মোদী বুঝিয়েছিলেন, স্বাধীনতার পর দেশ গঠনে বিজেপি ও সঙ্ঘের কর্মীরা যে আত্মত্যাগ করেছেন, তা কোনও অংশে কম নয়। ওই মন্তব্যের পরে কালই রে রে করে উঠেছিল কংগ্রেস। অন্য বিরোধীরাও বিঁধতে ছাড়েনি। আজ আসরে নেমে রাহুল টুইটারে রাহুল লিখেছে্ন, ‘‘মোদীজি আপনার জন্য প্রার্থনা: অসতো মা সদগময়/ তমসো মা জ্যোতির্গময়/ মৃত্যোর্মা অমৃত গময়/ ওম শান্তি শান্তি শান্তি।’’ সঙ্গে মোদীর গত কালের বিবৃতিটি জুড়ে দিয়ে শ্লোকটির ব্যাখ্যাও দিয়েছেন রাহুল, ‘অজ্ঞতা থেকে সত্যের পথে নিয়ে যাও, অন্ধকার থেকে আলোর পথে, মৃত্যু থেকে অমরত্বের পথে। সকলের শান্তি হোক’।
প্রধানমন্ত্রীর ওই মন্তব্য যে দলকে বিপাকে ফেলেছে, সেটি বিলক্ষণ বুঝছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাই আজ সন্ধেয় তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপির প্রাক্তন প্রধান মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ। তিনি বলেন, ‘‘আরএসএসের প্রতিষ্ঠাতা কেশব বলিরাম হেডগেওয়ার কলকাতায় থাকার সুবাদে অনুশীলন সমিতির সদস্য ছিলেন। সত্যাগ্রহে অংশ নিয়ে এক বছরের সাজা হয় তাঁর। কংগ্রেসের জেলা স্তরেও ছিলেন তিনি।’’ এর পরেই রবিশঙ্করের মন্তব্য, ‘‘আমরা স্বীকার করি, জনসঙ্ঘের জন্ম স্বাধীনতার আগে হয়নি। কিন্তু এর প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় স্বাধীনতার কিছু বছর পর নিজের জীবন বলিদান দিয়েছেন। জরুরি অবস্থার সময় বিজেপি ও সঙ্ঘের নেতাদের উপর চরম অত্যাচার হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সেটাই বলেছেন।’’
রবিশঙ্করের এই সব কথাতেও বিতর্কের চিঁড়ে ভিজছে কই! বিরোধীরা বলছেন, হেডগেওয়ার সঙ্ঘকে স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে দূরে রেখেছিলেন। দ্বিতীয় সঙ্ঘ-প্রধান গোলওয়াকর সঙ্ঘ কর্মীদের বলেছিলেন, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করে শক্তিক্ষয় কোরো না! বিজেপি নেতারাও এ সব বিলক্ষণ জানেন। অথচ সামনেই উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব ভোট। যার আগে নানা বিতর্কে জর্জরিত দল। এই অবস্থায় কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে গিয়ে মোদীর বক্তব্য দলের সমস্যাই বাড়িয়েছে।