(বাঁ দিক থেকে) ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’ শুরুর আগে একমঞ্চে রাহুল গান্ধী, লালুপ্রসাদ যাদব, মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং তেজস্বী যাদব। ছবি: পিটিআই।
ভোট ‘চুরি’ এবং বিহারে ‘বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা’ (এসআইআর) নিয়ে বিতর্কের আবহেই রবিবার থেকে নীতীশ কুমারের রাজ্যে ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’ শুরু করছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। পদযাত্রা শুরুর আগে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বিহারের মানুষের ভোট চুরি করতে দেবেন না!
পদযাত্রায় শুধু কংগ্রেস নয়, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র নেতানেত্রীরা যোগ দেবেন। ১৬ দিন ব্যাপী এই পদযাত্রা ১ সেপ্টেম্বর শেষ হবে পটনায়। ১,৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ হেঁটে বিহারের মানুষের কাছে এসআইআর নিয়ে বার্তা দেওয়ার উদ্দেশেই এই কর্মসূচি। ভোট বিশেষজ্ঞদের মতে, এই কর্মসূচি বিহারের নির্বাচনের আগে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার প্রয়াসও বটে। রবিবার যাত্রা শুরুর আগে বিহারের সাসারামে এক সমাবেশে বক্তৃতা করেন রাহুল। সেই সমাবেশে ছিলেন আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব, তাঁর পুত্র তথা বিহার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং বিরোধী জোটের অন্য নেতানেত্রীরা।
নীতীশ কুমার নেতৃত্বাধীন বিহারের এনডিএ সরকারের সমালোচনা করে রাহুল বলেন, ‘‘আসল ভোটারদের নাম কেটে নতুন ভোটারদের জুড়ে এসআইআর করে নির্বাচন জেতার চেষ্টা করছে ওরা। কিন্তু বিহারের মানুষ তাদের ভোট চুরি করতে দেবে না। আমরা আগে জানতাম না যে নির্বাচন কমিশন কী ভাবে ভোট চুরি করে। তবে এখন সবাই সব জেনে গিয়েছেন। আমরা তাদের চুরি ধরব।’’ লোকসভার বিরোধী দলনেতার কথায়, ‘‘এটি সংবিধান বাঁচানোর লড়াই। আরএসএস এবং বিজেপি সমগ্র ভারতে সংবিধান মুছে ফেলার চেষ্টা করছে।’’
রাহুলের সুরে সুর মেলান লালু থেকে তেজস্বী। লালুর কথায়, ‘‘যে কোনও মূল্যে বিজেপিকে, যারা ভোট চুরি করে, তাদের (ক্ষমতায়) আসতে দেওয়া উচিত নয়। সকলের ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।’’ তেজস্বীর অভিযোগ, ‘‘বিজেপি যে কাজ নিজেরা করতে পারছে না, সেটাই কমিশনকে দিয়ে করাচ্ছে। আপনাদের থেকে আপনাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বিহারবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে এ ভাবে।’’
সূত্রের খবর, ১৬ দিনের এই সফরে গয়া, মুঙ্গের, ভাগলপুর, কাটিহার, পূর্ণিয়া, মধুবনী, দ্বারভাঙা, পশ্চিম চম্পারণ-সহ ২০টির বেশি জেলা ঘুরবেন রাহুল। সঙ্গে থাকবেন লালু-পুত্র তেজস্বী যাদবও। কর্মসূচি চলাকালীন ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারেন কংগ্রেস সাংসদ। রাহুল জানিয়েছেন, এটি শুধু একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিই নয়, এটি গণতন্ত্র এবং সংবিধান রক্ষার আন্দোলন। এই ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’য় শামিল হওয়ার জন্য জনতাকে আহ্বান জানিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ। শুধু তা-ই নয় এই যাত্রায় শামিল হয়ে নিজেদের অধিকার নিয়ে সরব হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
গত ৭ অগস্ট রাহুল অভিযোগ তোলেন বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে লোকসভা ভোটে কারচুপি করেছে নির্বাচন কমিশন। শুধু তা-ই নয়, আরও দাবি করেন, ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটার নথিভুক্ত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কর্নাটক, মহারাষ্ট্রের বিধানসভায় কংগ্রেসের ফলাফলের প্রসঙ্গও টেনে এনেছিলেন রাহুল। তবে কমিশনও কংগ্রেস নেতার অভিযোগের পাল্টা জবাব দেয়। রাহুলকে হলফনামা দাখিল করে তাঁর অভিযোগের প্রমাণ দিতে বলা হয়।