প্রদেশ সভাপতি ও উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সচিন পাইলটকে সরিয়ে দিল কংগ্রেস

সচিন এবং তাঁর অনুগামী বিধায়কেরা মঙ্গলবারও কংগ্রেস নেতৃত্বের নির্দেশ উপেক্ষা করে জয়পুরে পরিষদীয় দলের বৈঠকে গরহাজির ছিলেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

জয়পুর ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ১৪:০৩
Share:

অশোক গহলৌতের সঙ্গে সঙ্ঘাতের জেরে উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ এবং দলের পদ হারালেন সচিন পাইলট।

অশোক গহলৌতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করায় দলের কড়া শাস্তির মুখে পড়লেন সচিন পাইলট। তাঁকে রাজস্থানের উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পাইলটকে রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতির পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা। পাশাপাশি সচিন ঘনিষ্ঠ রাজ্যের দুই মন্ত্রী বিশ্ববেন্দ্র সিংহ ও রমেশ মিনাকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবারই পাইলট-সহ ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাবনা পাশ হয় জয়পুরে কংগ্রেস পরিষদীয় দলের বৈঠকে। ওই বৈঠকে ফের রাজস্থানের পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচিত হন গহলৌত। তার পরেই পাইলটকে সরানোর সিদ্ধান্ত হয়। অন্য দিকে রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা। এর পর তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করার মতো কঠোর সিদ্ধান্তের পথেও কংগ্রেস হাইকম্যান্ড হাঁটতে পারে বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর।

মঙ্গলবার দলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘সচিন পাইলট তাঁর কিছু অনুগামী ভারতীয় জনতা পার্টির ষড়যন্ত্রে শামিল হয়ে রাজস্থানের মানুষের দ্বারা নির্বাচিত কংগ্রেস সরকারকে ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত করেছেন। এটা কোনও দলই মেনে নিতে পারবে না। তাই আক্ষেপের সঙ্গে এবং ভারাক্রান্ত মনে কংগ্রেস কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথমত, রাজস্থানের উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সচিন পাইলটকে এবং বিশ্ববেন্দ্র সিংহ ও রমেশ মিনাকে মন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল।’’ সচিন পাইলটের জায়গায় গোবিন্দ সিংহ দোতাসরাকে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সুরজেওয়ালা।

Advertisement

আরও পড়ুন: বিধায়ক আত্মঘাতী, ইঙ্গিত পোস্টমর্টেমে, জানালেন স্বরাষ্ট্রসচিব

মুখ্যমন্ত্রী গহলৌতের বিরুদ্ধে কার্যত ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করে সচিন পাইলট দিল্লি আসার পর চতুর্থ দিনে এসে নাটকীয় মোড় নিল রাজস্থানের রাজনৈতিক টানাপড়েন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় দলের ১০২ জন বিধায়ককে হোটেলবন্দি করেছে কংগ্রেস। ২০০ আসনের রাজস্থান বিধানসভায় যা ম্যাজিক ফিগারের চেয়ে বেশি। এর পর গতকাল এক দফা পরিষদীয় দলের বৈঠক করে কংগ্রেস। তাঁর দাবি বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে সচিন পাইলটকে জয়পুরে ফিরে ওই বৈঠকে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল দলের হাই কম্যান্ড। কিন্তু তাতে কার্যত কর্ণপাত করেননি রাজস্থানের নাম্বার-টু।

এর পর মঙ্গলবার ফের পরিষদীয় দলের বৈঠকে যোগ দিতে বলা হয় তাঁকে। কিন্তু তিনি জয়পুরে ফেরেননি। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে ছাড়াই পরিষদীয় দলের বৈঠক হয় এবং সেখানে গহলৌতকেই ফের পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচন করেন তাঁর অনুগামী বিধায়করা। তার পরেই পাইলট ও তাঁর অনুগামী বিধায়ক যাঁরা বৈঠকে গরহাজির ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাবনা পাশ হয় ওই বৈঠকে। শেষ পর্যন্ত তাঁকে উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয় দলের হাইকম্যান্ড। একই সঙ্গে দলীয় পদ থেকেও তাঁকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয় দল।

আরও পড়ুন: নেপালের মানচিত্রে এ বার রামজন্মভূমিকেও ঢুকিয়ে ফেললেন ওলি

কংগ্রেসে এই ‘মরুঝড়’-এর সুযোগ নিয়ে ময়দানে নেমেছে বিজেপিও। তাদের বক্তব্য, আস্থা ভোট ছাড়া রাজস্থান বিধানসভায় আর কোনও বিকল্প খোলা নেই। পদ্ম শিবির সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই জয়পুরে রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্ব এক দফা বৈঠক করেছেন। দিল্লি থেকে জয়পুর যাচ্ছেন রাজস্থানে দলের পর্যবেক্ষক ওম মাথুর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন