(বাঁ দিকে) দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তকে হামলার অভিযোগে ধৃত রাজেশ সাকরিয়া (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
নিজের বাসভবনে তখন বাসিন্দাদের অভাব-অভিযোগ শুনছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, ছিলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরাও। সেই ভিড়ের মধ্যেই উপস্থিত ছিলেন গুজরাতের রাজকোটের বাসিন্দা রাজেশভাই খিমজিভাই সাকরিয়া। হঠাৎ তিনি উঠে কিছু কাগজপত্র নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে যান। অভিযোগ, আচমকাই চিৎকার করে গালিগালাজ শুরু করে দেন। এমনকি, মুখ্যমন্ত্রীর চুল টেনে ধরে তাঁকে চড় মারেন ওই যুবক!
হামলার সঙ্গে সঙ্গেই রাজেশকে ধরে ফেলে উপস্থিত জনতা। তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। কেন রেখাকে আক্রমণ করলেন রাজেশ, তা নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ‘জনশুনানি’তে বুধবার ঠিক কী ঘটেছিল, তা নিয়েও নানা দাবিও ঘুরছে।
ধৃতের পরিচয়, ঠিকানা জানতে পেরেছে পুলিশ। যোগাযোগ করা হয়েছে ধৃতের মায়ের সঙ্গে। সূত্রের খবর, রাজেশের মা ভানু দাবি করেন, তাঁর পুত্র কুকুরপ্রেমী। পথকুকুরদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশে বিরক্ত ছিলেন তিনি। সুপ্রিম-নির্দেশের পর দিল্লি-এনসিআর থেকে কুকুরদের সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর বিষয়ে ক্ষুব্ধ হন রাজেশ। তবে রাজেশ যে দিল্লি যাবেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে পৌঁছে যাবেন— তার কোনও ধারণা ছিল না বলেই দাবি ধৃতের মায়ের। আরও একটি সূত্রে দাবি, ৪১ বছর বয়সি রাজেশের এক আত্মীয় কোনও এক মামলায় গ্রেফতার হয়ে তিহাড় জেলে বন্দি। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। সেই আত্মীয়ের মুক্তির দাবি নিয়েই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যান রাজেশ।
বিজেপির দাবি, রেখার বাসভবনে ঢুকে একটি কাগজ দেওয়ার নাম করে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে এগিয়ে যান রাজেশ। তার পরে হঠাৎই রেখার চুল টেনে ধরে তাঁকে চড়ও মারেন ওই যুবক। বিভিন্ন সূত্রের দাবি, অভিযুক্ত যুবকের কাছে আদালত সম্পর্কিত কিছু নথি পাওয়া গিয়েছে। তবে ঠিক কী ঘটেছিল, কেন রেখাকে মারধর করলেন রাজেশ— সব দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি, এই হামলার নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা-ও রয়েছে পুলিশের আতশকাচের নীচে।
কোনও কোনও সূত্রে খবর, রেখাকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়। তবে বিজেপির দাবি, এই ঘটনায় রেখার মাথায় চোট লেগেছে। তবে সেই দাবি অস্বীকার করেছে পুলিশ। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টি। আপ নেত্রী তথা দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আতিশী মার্লেনা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর উপর এই হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয়। গণতন্ত্রে মতবিরোধ এবং প্রতিবাদ থাকবে, কিন্তু তাই বলে হিংসার কোনও জায়গা নেই। আশা করি দিল্লি পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে।’’