সঙ্ঘ ও মোদীর সুরই শোনালেন কোবিন্দ

প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বিদায়ের পর সদ্য দেশের নতুন রাষ্ট্রপতি পদে শপথ নিয়েছেন রামনাথ কোবিন্দ। আর সেন্ট্রাল হলে একাধিক বার বেনজির ভাবে স্লোগান উঠল— ‘জয় শ্রী রাম’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৭ ০৫:৫৫
Share:

বর্তমান-প্রাক্তন: রাষ্ট্রপতি পদে শপথ নেওয়ার পরে রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে প্রণব মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি ভবনে। ছবি: এএফপি।

জয় শ্রী রাম। জয় শ্রী রাম।

Advertisement

বিজেপির কোনও সভায় নয়, আওয়াজ উঠল সংসদের সেন্ট্রাল হলে।

প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বিদায়ের পর সদ্য দেশের নতুন রাষ্ট্রপতি পদে শপথ নিয়েছেন রামনাথ কোবিন্দ। আর সেন্ট্রাল হলে একাধিক বার বেনজির ভাবে স্লোগান উঠল— ‘জয় শ্রী রাম’।

Advertisement

বিজেপির এক সাংসদের কথায়, ‘‘উঠবে না-ই বা কেন? বেঙ্কাইয়া নায়ডুর জয়ের পরে দেশের রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি আর প্রধানমন্ত্রী— সকলেই হবেন সঙ্ঘের লোক। এই প্রথম।’’

সেটা বোঝা গেল রাষ্ট্রপতি পদে শপথ নেওয়ার ঠিক পরেই সেন্ট্রাল হলে কোবিন্দের প্রথম বক্তৃতায়। যার পরতে পরতে সঙ্ঘের ভাবনা। সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী সরকারের রোডম্যাপ। যা শুনে কংগ্রেসের এক সাংসদ তো বলেই বসলেন, ‘‘প্রথা অনুযায়ী, বছরের গোড়ায় সংসদের যৌথ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতাটি সরকার লিখে দেয়। কিন্তু নতুন রাষ্ট্রপতির প্রথম বক্তৃতাটিও কি মোদী সরকারেরই লেখা? না কি নাগপুরের?’’

সকালেই দলের সাংসসদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের শুরু করা যাত্রার বড় মাইলফলক আজ রাষ্ট্রপতি পদের শপথ। ৯-১৫ অগস্ট তেরঙ্গা যাত্রা ও ২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ বছর উপলক্ষে ১৫-৩০ অগস্ট সঙ্কল্প যাত্রার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তার ঘণ্টাখানেক পরে কোবিন্দের শপথের পরে প্রথম বক্তৃতাতেও উঠে এল সেই সব প্রসঙ্গই।

মোদীর ধাঁচেই বললেন, ১২৫ কোটি জনতা তাঁর উপরে আস্থা রেখেছে। মোদীর গরিব-ভাবনা থেকে স্বরোজগার, মুদ্রা যোজনা, স্টার্ট-আপ প্রকল্প, ডিজিটাল ভারত— বাদ গেল না কিছুই।

যে ভাবে মোদী জনতার অংশিদারিত্বের কথা বলেন বা মোহন ভাগবত বলেন রাষ্ট্রনির্মাণ একা সরকারের দায়িত্ব নয়— সে ভাবেই কোবিন্দের বক্তৃতাতেও উঠে এল সেই প্রসঙ্গ। শোনালেন ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’-এর কথা। গোটা বিশ্ব এখন আকৃষ্ট হচ্ছে ভারতের সংস্কৃতি ও পরম্পরায়। সন্ত্রাসবাদ থেকে কালো টাকার সমস্যা নিয়ে ভারতের দিকে তাকিয়ে বিশ্ব। পাশাপাশিই বললেন, সহমত না হলেও অন্যের বিচারকে সম্মান করা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।

কিন্তু সর্দার পটেল ছুঁয়ে মহাত্মা গাঁধীর সঙ্গে যে ভাবে দীনদয়াল উপাধ্যায়কেও জুড়ে দিয়েছেন নতুন রাষ্ট্রপতি, তা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে কংগ্রেস। গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘নেহরুর অবদানের কথা না বলে শুধু তাঁর মন্ত্রিসভার পটেলের নাম নেওয়াটা দুর্ভাগ্যের।’’ আর দলিত রাজনীতির অঙ্ক মেনে মায়াবতীর বক্তব্য, সকালে গাঁধী সমাধির পাশাপাশি অম্বেডকরের মূর্তিতেও শ্রদ্ধা জানাতে পারতেন নতুন রাষ্ট্রপতি।

কোবিন্দকে আড়াল করে মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘সব ক্ষেত্রে নেহরুর নাম নেওয়ার রাজনীতি এ বার ছাড়ুক কংগ্রেস। আর অম্বেডকরের ভাবনা তো নিজের বক্তৃতায় রেখেছেন রাষ্ট্রপতি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন