ছিল ‘কমিটি’, এল ‘কাউন্সিল’। সঙ্গী সংশয়।
ভারতীয় রেলের উন্নতির লক্ষ্যে প্রযুক্তি-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী ভাবনার জোগান দিতে কমিটি তৈরি হয়েছে একের পর এক। কেন্দ্রে নিয়মিত সরকার বদলেছে। কিন্তু ওই সমস্ত কমিটির একটিও সুপারিশ কার্যকর করেনি রেল মন্ত্রক। এ বার ‘কমিটি’ নামের মোড়ক পাল্টে রেল মন্ত্রক তৈরি করল ‘কায়া কল্প’ নামে একটি পরিষদ, যার শীর্ষে আনা হল শিল্পপতি রতন টাটাকে।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ রেল বাজেটে রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু এই পরিষদ তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন। বৃহস্পতিবার সেই পরিষদ আত্মপ্রকাশ করল। রেলের দুই ইউনিয়নের সর্বভারতীয় সম্পাদক শিবগোপাল মিশ্র ও এম রঘুভাইকেও এই পরিষদে রাখা হয়েছে। যদিও অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, এই ধরনের কমিটি বা পর্ষদের সুপারিশ মানা আইনত বাধ্যতামূলক করা না গেলে তা গঠনের যৌক্তিকতা কী?
রেল সূত্রের খবর, স্বাধীনতার পর থেকে রেলের কাজকর্ম জোরদার করার লক্ষ্যে যে সমস্ত কমিটি গঠন হয়েছে, সেগুলির যাবতীয় সুপারিশ স্রেফ ফাইলবন্দি হয়ে রয়েছে। এমনকী সাম্প্রতিক অতীতে অনিল কাকোদকর বা স্যাম পিত্রোদার নেতৃত্বে যে কমিটিগুলি গড়া হয়েছিল, সেগুলির রিপোর্টে উল্লিখিত একটিও বিষয় কার্যকর করা হয়নি। মজার কথা, নীতীশ কুমার রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে যে কমিটি গড়া হয়েছিল, তার শীর্ষে ছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর রাকেশ মোহন। রেল মন্ত্রকের এক অফিসার জানালেন, রাকেশ মোহন তাঁর রিপোর্টে পরিষ্কার লেখেন, ‘অতীতে কোনও কমিটিরই সুপারিশ মানা হয়নি। আমার সুপারিশও কত দূর মানা হবে জানি না।’
বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদের ভবিষ্যদ্বাণী মিলে গিয়েছিল। কাজেই মোদী জমানায় টাটা সন্সের চেয়ারম্যান এমেরিটাসের নেতৃত্বে কাউন্সিল গড়া হলেও সুপারিশ মানার ক্ষেত্রে পুরনো রেওয়াজটাই বজায় থাকবে কি না, সেই সংশয় কিন্তু রয়ে যাচ্ছে।