Ladakh

প্যাংগংয়ে শান্তি ফেরাতে ঐকমত্যে ভারত-চিন, সেনা পিছনোর যৌথ নজরদারি আকাশপথে

ডিসএনগেজমেন্ট এবং ডিএসক্যালেশন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের জন্য যৌথ ভাবে চালকহীন বিমান ব্যবহারের বিষয়ে দু’তরফই সম্মত হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২০ ১৬:১৪
Share:

প্যাংগং হ্রদ— ফাইল চিত্র।

পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) উত্তেজনা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্য হয়েছে ভারত এবং চিনা সেনার। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানাচ্ছে, গত শুক্রবার (৬ নভেম্বর) কোর কমান্ডার স্তরের অষ্টম দফার বৈঠকে প্যাংগং হ্রদ লাগোয়া অঞ্চলে ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট) এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন) সংক্রান্ত তিনটি পদক্ষেপের বিষয়ে ‘ইতিবাচক আলোচনা’ হয়েছে।

Advertisement

প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, গত এপ্রিল-মে মাসের আগের অবস্থানে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে দু’দেশের প্রতিনিধিরা বৈঠকে একমত হয়েছেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্যাংগং এলাকায় ডিসএনগেজমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু সিদ্ধান্তও নেন তাঁরা। পূর্ব লাদাখের ওই এলাকায় দু’বাহিনী এখন ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া গাড়ি (ইনফ্যান্ট্রি ফাইটিং ভেহিকল্‌)-সহ নানা ভারী সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে সেগুলি পিছিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

দ্বিতীয় পর্যায়ের পদক্ষেপের মূল বিষয়, প্যাংগং হ্রদের উত্তর তীরে ডিএসক্যালেশন প্রক্রিয়া। একটি সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থার দাবি, সেখান থেকে প্রতিদিন ৩০ শতাংশ করে সেনা সংখ্যা কমানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে দু’পক্ষ। আলোচনায় স্থির হয়েছে, ভারতীয় ফৌজ তাদের ধন সিংহ থাপা পোস্ট লাগোয়া উঁচু অবস্থানে থাকবে। চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) ফিঙ্গার এরিয়া-৮-এর কিছুটা পূর্বে সরে যাবে। প্রসঙ্গত, প্যাংগং হ্রদের উত্তরে ফিঙ্গার-৫ থেকে ফিঙ্গার-৮ পর্যন্ত এলাকায় ভারতীয় সেনা যাতে আগের মতো টহল দিতে পারে, সেই দাবি শুক্রবারের বৈঠকে। এপ্রিল পর্যন্ত ওই পথে টহল দিত ভারতীয় সেনা। কিন্তু এরপর চিনা সেনা হ্রদের তীর বরাবর ফিঙ্গার-৫ পেরিয়ে এগিয়ে আসে।

Advertisement

তৃতীয় পর্যায়ে ‘সঙ্ঘাতের নয়া ক্ষেত্র’, প্যাগংয়ের দক্ষিণ তীরের বিভিন্ন এলাকা থেকে সেনা পিছনোর বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে বলে ওই খবরে দাবি। অগস্ট মাসে ওই এলাকায় এলএসি লাগোয়া রেচিন লা, রেজাং লা, কালা টপ-সহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ‘স্ট্র্যাটেজিক পজিশন’-সহ উঁচু গিরিশিয়াগুলিতে অবস্থান নিয়েছিল ভারতীয় সেনা। ফলে প্যাংগংয়ের দক্ষিণে স্পাংগুর হ্রদ লাগোয়া উপত্যকায় মোতায়েন চিনা বাহিনীও চলে এসেছে ‘নাগালে’। চাপে পড়েছে পিএলএ।

আরও পড়ুন: নীতীশ কুমারই মুখ্যমন্ত্রী, প্রতিশ্রুতি পালন করবে বিজেপি, ঘোষণা সুশীল মোদীর

গত শুক্রবার এলএসি-র চুসুল লাগোয়া মলডোয় অষ্টম পর্যায়ের বৈঠকে প্রথম বার ভারতের হয়ে বৈঠকে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ১৪ নম্বর কোরের নতুন কমান্ডার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল পি জি কে মেনন। চিনের সঙ্গে এর আগের সাত বার হওয়া এই বৈঠকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মেননের পূর্বসূরি লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরেন্দ্র সিংহ। সম্প্রতি হরেন্দ্রকে বদলি করা হয়েছে। গত ১৪ অক্টোবর সপ্তম দফার বৈঠকে হরেন্দ্রর সহকারী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেনন। ওই বৈঠকে কেন্দ্রের তরফে অসামরিক আধিকারিক হিসেবে বিদেশ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব নবীন শ্রীবাস্তব যোগ দিয়েছিলেন। সেনাবাহিনী ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস’-এর প্রতিনিধি হিসেবে হাজির ছিলেন, ব্রিগেডিয়ার আর ঘাই।

আরও পড়ুন: বিহারের বিধানসভা ভোটে অপ্রত্যাশিত ‘স্ট্রাইকিং রেট’ তিন বাম দলের

বৈঠকে তিন দফা ডিসএনগেজমেন্ট এবং ডিএসক্যালেশন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের জন্য যৌথ ভাবে চালকহীন বিমান ব্যবহারের বিষয়ে দু’তরফই সম্মতি দিয়েছে। তবে গালওয়ান পর্বের কথা মাথায় রেখে শান্তি প্রক্রিয়ায় অগ্রগতির বিষয়ে তাড়াহুড়ো করতে চাইছে না নয়াদিল্লি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন