Deaths

জুনে দৈনিক মৃত্যু দু’হাজার পার! আশঙ্কা রিপোর্টে

গত কালের পরিসংখ্যান ছাপিয়ে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা ২ লক্ষ ১৭ হাজার ৩৫৩। দৈনিক মৃতও ১২০০ ছুঁইছুঁই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২১ ০৬:০৮
Share:

ফাইল চিত্র।

আগামী জুনের প্রথম সপ্তাহে করোনায় দৈনিক মৃতের সংখ্যা পেরোতে পারে ২৩০০! এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ল্যানসেট কোভিড ১৯ কমিশনের এক রিপোর্টে। ‘ম্যানেজিং ইন্ডিয়া’জ় সেকেন্ড কোভিড ১৯ ওয়েভ: আর্জেন্ট স্টেপস’ শীর্ষক ওই রিপোর্টে করোনার দ্বিতীয় দফার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, ‘টিয়ার টু’ এবং ‘টিয়ার থ্রি’ শহরে সংক্রমণের প্রভাব পড়বে সবচেয়ে বেশি। দেশে করোনার প্রথম দফায় সংক্রমিতের ৭৫ শতাংশই ছিল ৬০ থেকে ১০০ জেলায়। কিন্তু দ্বিতীয় দফার ক্ষেত্রে মোট করোনায় আক্রান্তের ৭৫% ২০ থেকে ৪০টি জেলায়।

Advertisement

দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণের হার অনেক বেশি। তবে উপসর্গহীন কিংবা মৃদু উপসর্গের রোগীর সংখ্যা প্রচুর বাড়ায় প্রথম দফার তুলনায় হাসপাতালে ভর্তির হার এবং মৃত্যুর হার এখনও পর্যন্ত তুলনামূলক কম। তবে সংক্রমণ বৃদ্ধির হারই বাড়াচ্ছে দুশ্চিন্তা। গত কালের পরিসংখ্যান ছাপিয়ে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা ২ লক্ষ ১৭ হাজার ৩৫৩। দৈনিক মৃতও ১২০০ ছুঁইছুঁই।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিকাকরণের উপরেই জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ওই রিপোর্টে। যার অঙ্গ হিসেবে শুধু ৪৫-এর বেশি বয়সি নয়, তরুণ প্রজন্মকেও টিকার আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে। চলতি বছরের ১১ এপ্রিল পর্যন্ত ৪৫ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যে ২৯.৬% প্রতিষেধকের একটি বা দু’টি ডোজ় পেয়েছেন। টিকার উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি জিনোম সিকোয়েন্সের উপরেও জোর দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি দেশ জুড়ে বা রাজ্য জুড়ে লকডাউনের পরিবর্তে স্থানীয় স্তরে লকডাউন, দূরত্ব-বিধি পালনের উপরে জোর দিতে বলা হয়েছে। ১০ জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে ল্যানসেটের রিপোর্টে।

Advertisement

আজ ফিচ সলিউশন জানিয়েছে, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে নানা সংস্কার সত্ত্বেও এখনও করোনা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ ভারত। অবিলম্বে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।

মস্কোয় নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বালা বেঙ্কটেশ আজ জানিয়েছেন, এপ্রিলের মধ্যেই রাশিয়ার প্রতিষেধক স্পুটনিক ভি ভারতে পৌঁছবে। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘আমরা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে শুনেছি, এ মাসের শেষ দিকে প্রথম দফার প্রতিষেধক পাঠানো হবে। এবং ক্রমশ এর পরিমাণ বাড়ানো হবে।’’ দিল্লিতে নিযুক্ত রাশিয়ার উপরাষ্ট্রদূত রোমান বাবুস্কিন বলেছেন, ‘‘স্পুটনিক ভি ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যে বিশেষ অংশীদারির ক্ষেত্রে নতুন দিক খুলে দেবে। শক্তিশালী করবে ভারতের প্রতিষেধক প্রক্রিয়াকেও।’’

ভয়াবহ পরিস্থিতির জেরে রবিবার লকডাউনের ঘোষণা করেছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। তবে বহাল থাকবে জরুরি পরিষেবা। এর পাশাপাশি মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বেরোলে কড়া জরিমানার দাওয়াই দিয়েছে যোগী প্রশাসন। বলা হয়েছে, মাস্ক না-পরলে প্রথম বারে এক হাজার টাকা এবং পরের বারে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।

দিল্লিতে ক্রমশ খারাপ হচ্ছে সংক্রমণ পরিস্থিতি। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে সংক্রমিত হয়েছেন, ১৬,৬৯৯ জন। গত কাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, অধিকাংশ অফিসারকেই বাড়ি থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। ৫০% কর্মী অফিসে আসতে পারবেন। দিল্লির হাসপাতালগুলিতে উপচে পড়ছে করোনা রোগী। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালে একই শয্যায় দু’জন করে রোগীকে দেখা গিয়েছে। শয্যার আকাল এমসেও।

এমনকি শীর্ষ স্তরের আমলারাও পরিজনকে ভর্তি করতে হিমশিম খাচ্ছেন সেখানে। হাসপাতালের শয্যা-সঙ্কটের বিষয়টি সমাধানে আজ বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। আজ এমসে এক বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে চিকিৎসক এবং বাণিজ্যিক সংগঠনগুলি লকডাউনের দাবি জানিয়েছেন। আগামিকাল থেকেই দিল্লিতে শুরু হচ্ছে সপ্তাহান্তের কার্ফু।

আজ রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান সুনীত শর্মা জানিয়েছেন, কোনও রাজ্যের তরফেই এখনও রেল পরিষেবা বন্ধের প্রস্তাব মেলেনি।

বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ সমস্ত ল্যাবরেটরিকে নির্দেশ দিয়েছে, আরটি-পিসিআর পরীক্ষার রিপোর্ট দ্রুত হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্য মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জানাতে হবে।

আজ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। ফের সংক্রমিত হয়েছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা। অবশ্য তিনি টুইট করে জানিয়েছেন, ভাল আছেন। তবে চিকিৎসকদের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে। গত বছর অগস্টেও মুখ্যমন্ত্রীর করোনা ধরা পড়েছিল। আজ কর্নাটক প্রশাসন জানিয়েছে, বিয়ে বাড়িতে খোলা জায়গায় একসঙ্গে ২০০ জনের বেশি এবং ঘরের মধ্যে ১০০ জনের বেশি মানুষ জমায়েত করতে পারবেন না। নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ধর্মীয় জমায়েতে। শেষকৃত্যে সর্বোচ্চ ২৫ জন উপস্থিত থাকতে পারবেন। রাজনৈতিক সমাবেশেও খোলা জায়গায় সর্বোচ্চ ২০০ জন উপস্থিত থাকতে পারবেন। করোনা পরিস্থিতিতে সর্বদল বৈঠক ডেকেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার।

আজ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তেলুগু চিত্রতারকা পবন কল্যাণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন