লালুর অভাবে দিশাহীন আরজেডি

দলের বৈঠক এবং কর্মসূচিতে হাজির থাকছেন না তিনি। দল চালানোর বিষয়ে নিজের আপত্তির কথা প্রায়শই প্রকাশ্যেই জানাচ্ছেন। এরই মধ্যে পাটলিপুত্র লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন লালুপ্রসাদের বড় মেয়ে মিসা ভারতী

Advertisement

দিবাকর রায়

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৫৪
Share:

দিন কয়েক আগের ঘটনা। পটনায় আরজেডির এক অনুষ্ঠানে দলের সহ-সভাপতি রঘুবংশপ্রসাদ সিংহ ভাষণ দিচ্ছিলেন। তবে ছিলেন না তেজস্বী। রঘুবংশের ভাষণের মাঝেই কর্মী-সমর্থকদের ভিড় থেকে স্লোগান ওঠে ‘মোদী-মোদী’। এমনকী কেউ কেউ ‘লালু চোর হ্যায়’ স্লোগানও দিয়েছেন বলে অভিযোগ। আরজেডি নেতৃত্ব এই ঘটনাকে বিজেপি-আরএসএসের ষড়যন্ত্র বলে প্রকাশ্যেই অভিযোগ করেছেন। তবে এই ঘটনায় আরজেডির অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি সামনে এসে পড়েছে বলে ঘনিষ্ঠ মহলে জানাচ্ছেন তাঁরা। আর সেই লড়াই সামাল দেওয়ার জন্য লালুপ্রসাদকেই দরকার বলে মনে করছেন দলীয় নেতৃত্ব। লালুপ্রসাদের থাকা, না-থাকার ফারাকটা হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছেন নেতা-কর্মী-সমর্থকরা।

Advertisement

সভাপতি লালুপ্রসাদ জেলে যাওয়ায় চরম অব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে আরজেডি। দলের নিচুতলার কর্মী-সমর্থকরা বুঝতেই পারছেন না কী ভাবে কোন কর্মসূচি পালন করা হবে। এমনকী পটনা থেকে কেন্দ্রীয় ভাবে কোনও কর্মসূচি ঘোষণাও করা হচ্ছে না। অথচ লোকসভা নির্বাচন একেবারে দোর গোড়ায়। লোকসভার সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই মাঠে নেমে পড়েছেন। তবে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সেই ‘জোশ’ তৈরিই হয়নি। সকলেই আতঙ্কে, লালুপ্রসাদ না থাকার মূল্য চোকাতে হবে আরজেডিকে।

আসলে যাদব পরিবারের মধ্যেই তৈরি হয়েছে দ্বন্দ্বের বাতাবরণ। তেজপ্রতাপ যাদব বিয়ের পর থেকেই দলের মধ্যে নিজের গুরুত্ব বাড়াতে সক্রিয় হয়েছেন। দলের ছাত্র সংগঠনের ব্যানারে তিনি পৃথক কর্মসূচি নিচ্ছেন। দলের বৈঠক এবং কর্মসূচিতে হাজির থাকছেন না তিনি। দল চালানোর বিষয়ে নিজের আপত্তির কথা প্রায়শই প্রকাশ্যেই জানাচ্ছেন। এরই মধ্যে পাটলিপুত্র লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন লালুপ্রসাদের বড় মেয়ে মিসা ভারতী। দলে ছোটভাই তেজস্বীর গুরুত্ব ক্রমেই বেড়ে যাওয়ায় চিন্তিত তিনি। সে কারণেই পটনা লোকসভা কেন্দ্র নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান মিসা।

Advertisement

প্রায় ১২ দিন ধরে ‘গুরুত্বপূর্ণ কাজে’ পটনার বাইরে ছিলেন তেজস্বী। কালই ফিরেছেন। অভিযোগ দলের নেতা-কর্মীরা তাঁকে নিয়মিত পাচ্ছেন না। তিনিও সময় দিতে পারছেন না। দলের এক নেতা বলেন, ‘‘এর আগে লালুজি জেলে গিয়েছেন। সে সময়ে জেলে তাঁর কাছে গিয়ে আমরা পরামর্শ নিয়ে এসেছি। কোনও সমস্যা হয়নি।’’ কিন্তু এখন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের কোনও উপায় নেই। লালু ঘনিষ্ঠ সেই নেতার আক্ষেপ, ‘‘বাকি নেতারা লালুজির মতো সংগঠন বোঝেন না। নির্বাচনের আগে তিনি জামিন না পেলে সত্যিই সমস্যা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement