জলাধারে ছাত্র-মৃত্যু নিয়ে মন্ত্রীও দুষলেন স্কুলকে

স্কুলের জলাধার থেকে উদ্ধার হয়েছিল প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রের দেহ। আর সেই ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত গাফিলতির ইঙ্গিত দিল ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:৩৪
Share:

দেবাংশ কাকোরা

স্কুলের জলাধার থেকে উদ্ধার হয়েছিল প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রের দেহ। আর সেই ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত গাফিলতির ইঙ্গিত দিল ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট। যা দেখে দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী (যিনি কি না শিক্ষা দফতরও সামলান) মণীশ সিসৌদিয়ার মন্তব্য, ‘‘রিপোর্ট দেখলেই বোঝা যাচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ নৃশংস অপরাধ করেছেন।’’ মৃত শিশুটির বাবা-মায়ের অভিযোগ যে প্রাথমিক তদন্তের সময় আমলই দেওয়া হয়নি, সে নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মণীশ।

Advertisement

এ দিকে, আজই মৃত ওই শিশুর বাবা অভিযোগ করেছেন, তাঁর ছেলের উপর যৌন নিগ্রহ করার পরে তাঁকে খুন করা হয়েছে। যদিও পুলিশের এক সিনিয়র অফিসার জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্ত থেকে জানা গিয়েছে, ওই ছাত্র যৌন নিগ্রহের শিকার হয়নি।

৩০ জানুয়ারি দক্ষিণ দিল্লির বসন্ত কুঞ্জ এলাকার একটি স্কুলের জলাধার থেকে উদ্ধার হয় দেবাংশ কাকোরা নামে প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রের দেহ। সেই ঘটনা নিয়ে শোরগোল শুরু হয় দেশ জুড়ে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে বিষয়টির ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেয় দিল্লি সরকার। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয়েছিল প্রিন্সিপ্যাল-সহ স্কুলের পাঁচ কর্মীকে। তাঁরা এখন প্রত্যেকেই জামিনে মুক্ত। স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই প্রশাসনিক অফিসারকে এ নিয়ে নোটিস পাঠিয়েছে পুলিশ। ওই স্কুল বিল্ডিং তৈরির ক্ষেত্রে পুরসভার সব নিয়ম মানা হয়নি বলেও ইঙ্গিত রয়েছে রিপোর্টে।
দিল্লি পুলিশের এক অফিসারের কথায়, ‘‘এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। পুরসভার আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলা হবে।’’

Advertisement

রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেবাংশ যে দীর্ঘ ক্ষণ নিখোঁজ, তা খেয়ালই করেননি তার ক্লাস টিচার। ঠিক কোন সময় থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, তা-ও মনে করতে পারেননি ওই শিক্ষিকা। উল্টে গোটা ঘটনার দায় মৃত শিশুটির উপরই চাপানোর চেষ্টা করেছেন প্রিন্সিপ্যাল। দেবাংশকে ‘বিশেষ শিশু’ বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, ক্লাস থেকে মাঝে মধ্যেই আচমকা বেরিয়ে যাওয়ার অভ্যাস ছিল ওই ছাত্রের। রিপোর্টে আরও এক মারাত্মক অভিযোগ আনা হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। বলা হয়েছে, স্কুলের কর্মীরা যখন দেবাংশের দেহ জলাধারে ভাসতে দেখেন, কেউই তার দেহ জল থেকে তুলে আনার চেষ্টা করেননি। স্কুলেরই একাদশ শ্রেণির এক ছাত্র, প্রোজ্জ্বল শেরাওয়াত জলাধারে নেমে দেবাংশের দেহ তুলে আনে। এই ঘটনায় ষোলো বছরের ওই ছাত্রের জীবনও কর্তৃপক্ষ বিপন্ন করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ছেলের মৃত্যুর পরই দেবাংশের বাবা রামহিত অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর ছেলের গোপনাঙ্গে তুলো দেওয়া ছিল। তাঁর বক্তব্য ছিল, এর থেকেই প্রমাণিত হয় মৃত্যুর আগে যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছিল সে। আজ তিনি জানিয়েছেন, খুন করা হয়েছে তাঁর ছেলেকে। গোটা ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘অবিলম্বে ওই স্কুলের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হোক। আমি চাই না স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে কোনও বাবা-মা তাঁদের সন্তান হারান।’’ ঘটনা নিয়ে যাতে তাঁরা হইচই না করেন, সে জন্য স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল তাঁদের হুমকি দিয়ে এসেছেন বলেও জানান রামহিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement