পুলিনের খোঁজে পুলিশ

সপরিবার আত্মহত্যার আগে সুইসাইড নোট লিখে গিয়েছিলেন প্রশান্ত কুমার। সেই নোটই আপাতত পুলিশের কাছে হোটেলে গণ-আত্মহত্যার তদন্তে প্রধান হাতিয়ার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৪
Share:

সপরিবার আত্মহত্যার আগে সুইসাইড নোট লিখে গিয়েছিলেন প্রশান্ত কুমার। সেই নোটই আপাতত পুলিশের কাছে হোটেলে গণ-আত্মহত্যার তদন্তে প্রধান হাতিয়ার।

Advertisement

উল্লেখ্য, গত কাল গুয়াহাটির গণেশগুড়ির একটি হোটেলের ঘরে প্রশান্ত কুমার, তাঁর স্ত্রী পম্পি কলিতা, শ্যালিকা অনামিকা ও ওই দম্পতির সন্তানের মৃতদেহ উদ্ধার হয়।

আজ সাংবাদিক বৈঠকে পুলিশ কমিশনার হীরেণ নাথ জানান— মুখ্যমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং প্রশান্তের বাবা-মাকে উদ্দেশ্য করে লেখা সুইসাইট নোট মিলেছে। তা থেকে জানা যাচ্ছে, অসম পুলিশ ব্যাটেলিয়নের বরখাস্ত হওয়া জওয়ান পুলিন গগৈয়ের সঙ্গে প্রশান্তর আলাপ হয়েছিল। সরকারি চাকরির আশায় প্রশান্ত প্রথমে পুলিনকে টাকা দেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে করমর্দনের ছবি দেখিয়ে পুলিন নিজেকে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তা হিসেবে দাবি করেছিল। সেই পরিচয়েই দরং জেলা, তিনসুকিয়া, লখিমপুর, শিবসাগর-সহ বিভিন্ন জায়গার বেকার ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল পুলিন। প্রশান্তবাবুর মাধ্যমে দরংয়ের ৬২ জনের কাছ থেকে ৭৭ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করেছিল সে। কিন্তু কেউ চাকরি পায়নি। চাপ বাড়ে প্রশান্তবাবুদের উপরে।

Advertisement

সুইসাইড নোট ও প্রশান্তবাবুর দাদা হেমন্তর বক্তব্য অনুযায়ী, ২৭ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দেবে বলে পুলিন প্রশান্তবাবুকে গুয়াহাটি ডেকে পাঠিয়েছিল। পুলিশ কমিশনার হীরেণবাবু জানান, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে দুর্নীতি ও ঘুষ-কাণ্ডে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় পুলিনকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু বাইরে সে পুলিশের পরিচয় দিত। তদন্তে গুয়াহাটির একটি থানার এক সাব-ইনস্পেক্টরের নামও জড়িয়েছে। অভিযোগ, পুলিনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওই এসআই অনেকের থেকে টাকা নিয়েছেন। টাকা ফেরত চাওয়ায় মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। ওই এসআইয়ের বিরুদ্ধেও তদন্ত করা হবে বলে পুলিশকর্তা জানান।

আদতে শিবসাগরের নাজিরার বাসিন্দা পুলিনের খোঁজে পুলিশ শিবসাগর, ডিব্রুগড়, লখিমপুর, তিনসুকিয়ার বিভিন্ন জায়গায় হানা দেয়। জানা যায়, পুলিনের আরও দুই স্ত্রী আছে। তার বাবার দাবি, ছেলে দু’বছর ধরে বাড়ি আসেনি। ডিমৌয়ের পথালিরাম দিহিঙিয়া গ্রামে দ্বিতীয় স্ত্রী মামুর সঙ্গে থাকছিল সে। গত কাল প্রশান্ত কুমারের আত্মহত্যার খবর জেনেই সে পালায়। সুইসাইড নোটে পুলিনের সঙ্গে কংগ্রেসের এক প্রাক্তন বিধায়কদের ঘনিষ্ঠতার কথা আছে। পুলিশ সে দিকও খতিয়ে দেখছে।

কমিশনার জানান, মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল এই ধরণের ঘটনা ও দুষ্টচক্রের কথা জেনে অসন্তুষ্ট। তিনি দ্রুত ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিনের ব্যাপারে নির্দিষ্ট খবর দিতে পারলে পুরষ্কার দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন কমিশনার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন