Hindenburg Research Report on Adani Group

আদানিদের বিরুদ্ধে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের যাবতীয় অভিযোগ বাতিল! অনিয়ম হয়নি, আড়াই বছর পরে ক্লিনচিট দিল সেবি

২০২৩ সালে আদানিদের বিরুদ্ধে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল হিন্ডেনবার্গ। দাবি করা হয়েছিল, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কারচুপি করে নিজেদের নথিভুক্ত সংস্থাগুলির শেয়ার দর বাড়িয়েছে আদানি গোষ্ঠী। সেবি এত দিনে তাদের ক্লিনচিট দিল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:৫৬
Share:

গৌতম আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট ভিত্তিহীন। —ফাইল চিত্র।

মার্কিন শেয়ার বিশ্লেষক সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ যে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিল ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে, তা ভিত্তিহীন। দু’বছর পরে আদানি গোষ্ঠীকে ক্লিনচিট দিল ভারতের বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি (সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া)। আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে তারা।

Advertisement

২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি আদানিদের বিরুদ্ধে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল হিন্ডেনবার্গ। তাতে দাবি করা হয়েছিল, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কারচুপি করে নিজেদের নথিভুক্ত সংস্থাগুলির শেয়ার দর বাড়িয়েছে আদানি গোষ্ঠী। সেবির বিধিকে ফাঁকি দিতে ভুঁইফোঁড় বিদেশি সংস্থার মাধ্যমে নিজেদের সংস্থার শেয়ার কিনিয়েছে তারা। উদ্দেশ্য, অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ হাতে রাখা। এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর দেশের অভ্যন্তরে তো বটেই, আন্তর্জাতিক বাজারেও মুখ পোড়ে আদানির। তাঁর সংস্থাগুলির শেয়ার হু হু করে পড়তে থাকে। বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তির তালিকাতেও এক ধাক্কায় অনেকটা নেমে গিয়েছিলেন আদানি।

আদানিদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করছিল সেবি। আড়াই বছরের বিস্তারিত তদন্তের পর বৃহস্পতিবার পৃথক ভাবে দু’টি ভাগে ভাগ করে বিশদ বিবৃতি দিয়েছে তারা। তাতে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ লেনদেন, বাজারে কারসাজি, শেয়ারবাজারের নিয়ম লঙ্ঘনের যে সমস্ত অভিযোগ আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তোলা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত। হিন্ডেনবার্গের দাবি ছিল, অর্থ পাচারের জন্য আদানিরা অ্যাডিকর্প এন্টারপ্রাইস প্রাইভেট লিমিটেড, মাইলস্টোন ট্রেডলিঙ্ক্‌স প্রাইভেট লিমিটেড এবং রেহ্‌ভার ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড নামক সংস্থাকে ব্যবহার করেছে। কিন্তু সেবি জানিয়েছে, যে সময়ে এই সংস্থার মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে, সে সময়ে ওই সংক্রান্ত আইন ছিল না। ফলে আইন লঙ্ঘিত হয়নি। আইন পরে সংশোধিত হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সেবি-র বিবৃতি উল্লেখ করে জানিয়েছে, আদানিরা সমস্ত ঋণ পরিশোধ করেছেন, সঠিক জায়গায় বরাদ্দ অর্থ ব্যবহার করেছেন এবং কোথাও কোনও অনিয়ম করেননি। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি ভিত্তিহীন।

Advertisement

হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের ফলে বড়সড় আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছিল আদানি গোষ্ঠী। প্রায় ১৩ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছিল। প্রথম থেকেই আদানিরা এই অভিযোগগুলিকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করে আসছিলেন। এই সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে একটি বিশেষজ্ঞদের প্যানেল গঠিত হয়। আদানি সম্পর্কে তাদের অনুসন্ধানের ফলাফলও ছিল সেবি-র অনুরূপ। ওই প্যানেলও তেমন কোনও অনিয়মের প্রমাণ খুঁজে পায়নি। বৃহস্পতিবার সেবি ক্লিনচিট দেওয়ার পর গৌতম আদানি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘আমরা সবসময় বলে এসেছি, হিন্ডেনবার্গের দাবি ভিত্তিহীন। এত দিনের তদন্তের পর সেবি-ও সেটাই বলল। স্বচ্ছতা এবং সততাই আদানি গোষ্ঠীর সম্পদ। এই ভুয়ো রিপোর্টটির জন্য যাঁদের ক্ষতি হয়েছে, যাঁরা টাকা হারিয়েছেন, আমরা তাঁদের জন্য গভীর ভাবে দুঃখিত। যাঁরা এ ভাবে ভুয়ো খবর ছড়ান, দেশের কাছে তাঁদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। ভারতের জনগণের প্রতি আমরা সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement