লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে লেহতে বিক্ষোভ। ছবি: পিটিআই।
লাদাখকে রাজ্য হিসাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। লাদাখকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতাভুক্ত করে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হোক। এমনই দাবি জানিয়ে বুধবার লাদাখের লেহতে বিক্ষোভ শুরু হয়। সেই বিক্ষোভ ধীরে ধীরে সহিংসতার চেহারা নেয়। স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্তাকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত চার জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত প্রায় ৭০ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কার্ফু জারি করা হয়েছে।
আগামী ৬ অক্টোবর লাদাখের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে কেন্দ্রের। তার আগে বুধবার লেহ শহরে বিক্ষোভ দেখান একদল যুবক। অভিযোগ, বিক্ষোভ চলাকালীনই লেহতে বিজেপির পার্টি অফিসে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। শুধু তা-ই নয়, পার্টি অফিসের সামনে থাকা একটি পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো হয়। তার পরই পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ এবং নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। লাঠিচার্জও করা হয়। লাদাখের বুধবারের বিক্ষোভ নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন সোনম ওয়াংচুক। তাঁর দাবি, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হেরে গেল সহিংসতার কাছে। তবে তিনি এ-ও জানান, লাদাখের রাজনৈতিক দলগুলি অযোগ্য। তারা তরুণ প্রজন্মকে সঠিক দিশা দেখাতে ব্যর্থ। ওয়াংচুকের কথায়, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে জমতে থাকা আগুনেরই বহিঃপ্রকাশ’’ তবে তিনি স্পষ্ট জানান, কোনও সহিংস আন্দোলনকে সমর্থন করেন না।
লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে গত কয়েক বছর ধরেই আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলনের অন্যতম মুখই ওয়াংচুক। তাঁর বক্তব্য, লাদাখকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতাভুক্ত করে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হোক। লাদাখের জন্য একটি পৃথক পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন করা হোক। সেই সঙ্গে লেহ এবং কার্গিল জেলার জন্য পৃথক পৃথক লোকসভা আসনের বন্দোবস্ত করা হোক। এমনই নানা দাবি নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন বাস্তব জীবনের ‘র্যাঞ্চো’। তিনি বেশ কয়েক বার অনশনেও বসেছেন।
বুধবারের প্রতিবাদের ডাক দিয়েছিল লেহ অ্যাপেক্স বডি (এল এবি)-র যুব শাখা। ওই সংস্থার চেয়ারম্যান থুপস্তান সোয়াং বলেন, ‘‘লাদাখে মূলত চারটি দাবিতে আমরা দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছি। কিছু ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে আন্দোলন সহিংসতার চেহারা নেয়। সেই সময় আমাদের কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে। আমরা লাদাখের জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই, মৃত তরুণদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না।’’ ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের কথাও জানান সোয়াং।