India Pakistan Conflict

পাকিস্তান যুদ্ধের জন্যেও তৈরি, শান্তির জন্যেও প্রস্তুত, একটা বেছে নিক ভারত, দাবি পাক প্রধানমন্ত্রী শরিফের

সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি ছাড়াও শরিফের কথায় উঠে এসেছে কাশ্মীর সমস্যা, পহেলগাঁও কাণ্ডের তদন্তের প্রসঙ্গ। তিনি জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়ম অনুযায়ী কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করতে হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২৫ ২৩:১২
Share:

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। —ফাইল চিত্র।

পাকিস্তান যুদ্ধের জন্যেও তৈরি, শান্তির জন্যেও প্রস্তুত। যে কোনও একটা বেছে নিতে হবে ভারতকে। বুধবার এমনটাই বললেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। তাঁর দাবি, ভারতের বিরুদ্ধে অনেক ধৈর্যশীল ছিল পাকিস্তান। একই সঙ্গে বলেন, জল বন্ধ করা হলে তার জন্য লড়াই চলবে। পহেলগাঁওয়ের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য প্রথম থেকে পাকিস্তান যে দাবি জানিয়ে এসেছিল, ভারত তা এড়িয়ে গিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন শরিফ।

Advertisement

পাক প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য উদ্ধৃত করেছে সে দেশের সংবাদমাধ্যম ডন। শরিফ ভারতের উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘যদি আপনারা আমাদের জল বন্ধ করেন, সেটা কিন্তু ‘রেড লাইন’। জল আমাদের অধিকার। আমাদের বীর সৈনিকেরা এই অধিকারের জন্য লড়াই করবে।’’ সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি ছাড়াও শরিফের কথায় উঠে এসেছে কাশ্মীর সমস্যা, পহেলগাঁও কাণ্ডের তদন্তের প্রসঙ্গ। তিনি জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়ম অনুযায়ী কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করতে হবে। পহেলগাঁও কাণ্ডের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভারত এবং পাকিস্তানের বাণিজ্য বন্ধ। তা নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা হবে বলে জানান শরিফ। তিনি বলেছেন, ‘‘বাণিজ্য নিয়েও আলোচনা হবে। তবে বাণিজ্যের আলোচনা বিচ্ছিন্ন ভাবে সম্ভব নয়। নির্দিষ্ট কথোপকথনের মাধ্যমে ওই আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’’

গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছিল। তাতে মৃত্যু হয় ২৬ জনের। সেই ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করে ভারত। স্থগিত করা হয় সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি। এ ছাড়া, পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল, সীমানা বন্ধ, আকাশসীমা বন্ধের মতো পদক্ষেপ করা হয়। পাল্টা ইসলামাবাদও একই পদক্ষেপ করে। বন্ধ করে দেয় ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য। পাকিস্তান প্রথম থেকেই পহেলগাঁও কাণ্ডের নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছে। শরিফ বুধবার বলেন, ‘‘পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু ভারত তার পরিবর্তে অন্ধকার রাতে হামলা চালিয়েছে। নিরপেক্ষ তদন্তের প্রস্তাবকে ইচ্ছাকৃত ভাবে এড়িয়ে গিয়েছে ভারত। ওদের কাছে কোনও প্রমাণ নেই। মিথ্যা অজুহাতে, অহংকারের উপর ভিত্তি করে ওরা আক্রমণ করেছে। যোগ্য জবাব পেয়েছে। পাকিস্তানের নিরপরাধ সাধারণ মানুষের উপর ভারতের এই ধরনের হামলা অত্যন্ত লজ্জাজনক।’’

Advertisement

ভারতের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারির সুরে শরিফ এর পর বলেন, ‘‘পাকিস্তানের জলের উৎস নীলম ঝিলমে হামলা চালিয়েছে ভারত। কিন্তু পাক সরকার ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। ভারতের বাগলিহার এবং অন্য জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলি ধ্বংস করার মতো শক্তি পাক ফৌজের আছে।’’ আসলে পাক সেনাবাহিনী ভারতকে চূড়ান্ত মানসিক আঘাত করেছে বলে দাবি পড়শি দেশের প্রধানমন্ত্রীর। তিনি বলেন, ‘‘শত্রু আমাদের চেয়ে বড়। তারা গর্ব করত এই ভেবে যে, তাদের কাছে কোটি কোটি টাকা দামের সামরিক সরঞ্জাম রয়েছে। কিন্তু ওদের ঔদ্ধত্য ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে আমাদের সেনা।’’

উল্লেখ্য, পহেলগাঁওয়ের ঘটনার প্রত্যাঘাতে পাকিস্তানে ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করেছিল ভারত। তাতে একাধিক পাকিস্তানি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। পাল্টা পাকিস্তানও জবাব দিয়েছে এবং ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় গোলাবর্ষণ করেছে। টানা চার দিন এই সংঘর্ষ চালু ছিল। গত শনিবার ভারত ও পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়। আমেরিকার দাবি, তাদের হস্তক্ষেপেই সম্মত হয় দু'পক্ষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement