Siddique Kappan

৫ মাসেও জামিন পাননি কাপ্পান, বাক্যহারা মা

কাপ্পানের পরিবারের বক্তব্য, পাঁচ মাস পরেও কাপ্পানের জামিন তো মঞ্জুর হয়ইনি, উল্টে প্রত্যেক বার শুনানির সময়ে নতুন ধারায় অভিযোগ আনা হচ্ছে।

Advertisement

চৈতালি বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:২২
Share:

অসুস্থ কাপ্পানের মা। -নিজস্ব চিত্র

উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ঘটনায় দলিত পরিবারের খবর সংগ্রহ করতে যাওয়ার পথে মথুয়ার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন কেরলের সাংবাদিক কাপ্পান সিদ্দিকি। দিল্লির সাংবাদিক মনদীপ পুনিয়া সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হয়ে সাংবাদিকদের স্বাধীনতা ও সিদ্দিকি কাপ্পানের মুক্তির দাবিতে সরব হন। কাপ্পানের পরিবারের বক্তব্য, পাঁচ মাস পরেও কাপ্পানের জামিন তো মঞ্জুর হয়ইনি, উল্টে প্রত্যেক বার শুনানির সময়ে নতুন ধারায় অভিযোগ আনা হচ্ছে।

Advertisement

রবিবার সাংবাদিকের স্ত্রী রেহানাথ সিদ্দিকি বলেন, ‘‘ওঁকে জামিন দেওয়া হচ্ছে না। পাঁচ মাস ধরে আইনি লড়াইয়ে সাহায্য করছেন কেরলের সাংবাদিকদের ইউনিয়ন।’’ কেরলের মল্লপুরমের বাড়ি থেকে তিন সন্তানকে নিয়ে গত পাঁচ মাস ধরে একাই জীবনযুদ্ধ লড়ছেন রেহানাথ। কাপ্পানের বৃদ্ধা মাকে প্রতিনিয়ত মিথ্যে আশ্বাস দিতে দিতে তিনি ক্লান্ত। মালয়ালম ছাড়া অন্য ভাষায় স্বচ্ছন্দ নন। তবু পরিবারের অন্যদের সাহায্য নিয়ে, ভাঙা ইংরেজিতে বললেন, ‘‘আর কত দিন ওকে জেলে আটকে থাকতে হবে? অন্তত ওর মৃতপ্রায় মায়ের কাছে ফিরে আসার সুযোগ দেওয়া হোক!’’

দিল্লির মালয়ালম কাগজে কর্মরত কাপ্পানের সঙ্গে সেপ্টেম্বর মাসে শেষ বার ফোনে কথা হয়েছিল মায়ের। তার পর থেকে বহু বার নবতিপর মা ছেলের খোঁজ করেছেন। জবাব পাননি। তাঁকে সত্যি কথাটা জানানোর সাহস পায়নি পরিবার। বর্তমানে তিনি এতটাই অসুস্থ যে, আর কথা বলার অবস্থাতেও নেই, জানাচ্ছেন কাপ্পানের দাদা হানজা সিদ্দিকি। বললেন, ৫ ফেব্রুয়ারি ভিডিয়ো কলে মায়ের সঙ্গে দেখা করানো হয়েছিল কাপ্পানের। হানজা হতাশ গলায় বলছেন, ‘‘মা শুধু কিছুক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে থাকলেন। কোনও কথা বলতে পারেননি।’’

Advertisement

কাপ্পানের পরিবার এখনও জানে না, খবর সংগ্রহে গিয়ে কী এমন ভুল করেছিলেন যে ইউএপিএ-ধারায় মামলা করল যোগী আদিত্যনাথ সরকারের পুলিশ।

হানজা সিদ্দিকি বলছেন, ‘‘আমার ভাই সুপ্রিম কোর্টে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট বলেছে প্রয়োজনে হলে ও পলিগ্রাফ টেস্ট করাতেও রাজি। ও সত্যি বলেছে না মিথ্যা, প্রমাণ হয়ে যাবে। ভাই বলেছে, দরকার হলে ওর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেনের যাবতীয় তথ্য খতিয়ে দেখা হোক। কিন্তু সে সব কিছুই হচ্ছে না। শুনানির তারিখ অকারণে দীর্ঘ করা হচ্ছে। ফের মার্চ মাসের ৯ তারিখ শুনানি।’’

তাঁর আরও অভিযোগ, ঘটনার পর থেকে কাপ্পানের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি ওঁদের। হানজা বলেন, ‘‘ভাই ফোনে ওর স্ত্রীকে জানিয়েছে, পুলিশ হেফাজতে ওকে মারধর করা হয়েছিল। কিন্তু তার কোনও প্রমাণ আমাদের কাছে নেই। তিন সন্তানকে নিয়ে রেহানাথ কী ভাবে আছে, আমরাই জানি। সকলে ওর পাশে আছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন