ভাই এবং মায়ের সঙ্গে হিতেশ কুমার।
খবরটা যখন এসেছিল, সে সময় হিতেশ কুমারের বয়স মাত্র ছয়। ‘বাবা নেই!’, ছোট্ট একটা খবর যে দুনিয়া ওলটপালট করে দিতে পারে, তা হিতেশ বুঝেছিল তার নিজের জীবনের লড়াই দিয়ে। উনিশ বছর পর, কার্গিল শহিদের ছেলে হিতেশের জীবনে একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ হল। সেনাবাহিনীর যে ব্যাটালিয়নে বাবা করতেন, ঠিক সেখানেই সম্প্রতি লেফটেন্যান্ট পদে যোগ দিয়েছেন হিতেশ কুমার।মুজফ্ফরনগরের সিভিল লাইন্স এলাকায় তিনি প্রয়াত বাবার প্রতি শ্রদ্ধাও জানিয়েছেন।
এতদিন সম্বল ছিল ফোটোফ্রেমে বন্দি সেনা-উর্দিতে বাবা বচন সিংহের ছবি। অবশেষে দেহরাদূনের মিলিটারি অ্যাকাদেমি থেকে পাশ করে সেই উর্দি গায়েই হিতেশের মুখে স্বপ্নপূরণের হাসি। তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে নিয়ে মায়ের স্বপ্ন ছিল। সেনাবাহিনী নিয়ে আমার স্বপ্ন ছিল। এবার সততা এবং গর্বের সঙ্গে দেশের জন্য কাজ করব।’’
রাজপুতানা রাইফেলস-এর সেকেন্ড ব্যাটালিয়নে হিতেশকে স্বাগত জানাতে গিয়ে স্মৃতির সরণি ধরে হাঁটতে হাঁটতে যেন কার্গিল যুদ্ধের সময়ে পৌঁছে গেলেন তাঁর বাবার সহকর্মী ঋষিপাল সিংহ।তাঁর কথায়, ‘‘দিনটা ছিল ১৯৯৯ সালের ১২ জুন।কার্গিল যুদ্ধ তখন চূড়ান্ত পর্যায়ে।কার্গিলের তোলোলিং এলাকায় আমাদের ব্যাটালিয়ন হামলার মুখে পড়ে। উনিশ জনের মৃত্যু হয়।বুলেট লেগেছিল ল্যান্স নায়েক বচন সিংহের মাথায়। ওঁকে বাঁচানো যায়নি।’’
আরও পড়ুন: গোরক্ষনাথ মন্দিরের কাছে গুলি সেই কাফিল খানের ভাইকে
আরও পড়ুন: বন্ধ ঘরে হোক কথা, কাশ্মীর নিয়ে ভারতকে প্রস্তাব পাকিস্তানের
এরপর? উনিশ বছরের দীর্ঘ লড়াই। অন্তহীন কালের বিচারে উনিশটা বছর আর এমন কী! কিন্তু যন্ত্রণা সহ্য করে যাদের লড়তে হয়, তাদের কাছে এক একটা বছরই তো যুগের সামিল। হিতেশের মায়ের বক্তব্য, ‘‘স্বামীর মৃত্যুর পর দুই ছেলেকে মানুষ করার জন্য অনেক কষ্ট সহ্য করেছি। হিতেশ ওর বাবার ব্যাটালিয়নে যোগ দিয়েছে বলে আমি খুব খুশি।’’ হিতেশের পর তাঁর ভাই হেমন্ত-ও সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চান বলে জানিয়েছেন তাঁর মা।