এক দিকে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে অশোভন ব্যবহার, অন্য দিকে হরিয়ানায় জমি চুক্তিতে বাড়তি ফায়দা লোটার অভিযোগ সিএজি-র। দুই মিলিয়ে কংগ্রেসকে নতুন করে অস্বস্তিতে ফেললেন সনিয়া গাঁধীর জামাই রবার্ট বঢরা।
গত কাল একটি পাঁচতারা হোটেলে বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের এক সাংবাদিক রবার্টকে জমি কেলেঙ্কারি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি খেপে ওঠেন। সাংবাদিকের হাতে ধরা মাইকটি আচমকা ঝটকা মেরে নামিয়ে দেন। ওই ছবি সম্প্রচার হওয়ার পরেই বিতর্ক শুরু হয়। জামাইয়ের ব্যবহার নিয়ে গাঁধী পরিবার চুপ থাকলেও কংগ্রেস সূত্রের খবর, রবার্টের আচরণে ক্ষুব্ধ সনিয়া ও রাহুল। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ রবার্টের সঙ্গে দেখা করেন সনিয়া। প্রকাশ্যে রবার্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনও উপায় নেই। কারণ তিনি কংগ্রেসের সদস্য নন। তাই তাঁর সঙ্গে দেখা করে সংযত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সনিয়া গাঁধী, এমনটাই মনে করছে দল।
আবার এর মধ্যেই কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) খসড়া রিপোর্টে জানিয়েছে, হরিয়ানার জমি চুক্তি থেকে প্রায় ৪৪ কোটি টাকা মুনাফা হয়েছে রবার্টের সংস্থা স্কাইলাইট হসপিটালিটির। আগে হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা দাবি করেন, নিয়ম মেনেই ওই লেনদেন হয়েছিল। কিন্তু সিএজি জানিয়েছে, হরিয়ানার তৎকালীন কংগ্রেস সরকার নিয়ম ভেঙে রবার্টকে ওই জমি পাইয়ে দিয়েছিল। সিএজি জানিয়েছে, সরকারের থেকে কম দামে জমি কিনে তা বেশি দামে ডিএলএফ-কে বিক্রি করে বঢরার সংস্থা স্কাইলাইট হসপিটালিটি। বিষয়টি সামনে আসতেই আজ হরিয়ানার নতুন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টার জানিয়েছেন, আইন নিজের পথে চলবে। কেন্দ্র ও হরিয়ানায় বিজেপি সরকার আসায় রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগের যে নতুন করে তদন্ত শুরু হবে, তা বুঝতে পারছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশ। তাই রবার্টকে বিদেশি নাগরিকত্ব নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তাতে রাজি হননি তিনি।
এরই মধ্যে গত কাল মারমুখী রবার্টের ভিডিও সংবাদমাধ্যমে আসার পর রবার্ট প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায় কংগ্রেস শিবির। দ্বিগ্বিজয় সিংহের মতো নেতারা রবার্টের পাশে দাঁড়ান। তাঁর কথায়, “কেন এক জন নাগরিককে অযথা নিশানা বানানো হবে? রবার্ট বঢরার সামান্য একটি ঘটনাকে কেন এত বাড়তি গুরুত্ব দেবে সংবাদমাধ্যম? বঢরা আইন ভেঙে থাকলে তার বিচার হোক। কিন্তু সাংবাদমাধ্যমের অহেতুক কৌতূহল মোটেই যৌক্তিক নয়।” রবার্ট প্রশ্নে ভিন্ন সুর শোনা গিয়েছে কংগ্রেসের অন্দরমহল থেকেই। প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ সন্দীপ দীক্ষিত বলেন, “সংবাদমাধ্যম মাঝে মধ্যেই নিজেদের সীমা লঙ্ঘন করে থাকে, এটা ঠিক। কিন্তু আমাদের দু’পক্ষেরই সৌজন্য দেখানো উচিত। ওঁর ওই আচরণের ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত।”