তিন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী হেমন্তের

রাজধর্ম পালন করলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী। দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যোগসাজসে অভিযুক্ত রাজ্য মন্ত্রিসভার প্রভাবশালী তিন মন্ত্রীকে আড়াল করার বদলে, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিলেন হেমন্ত সোরেন। তিন মন্ত্রীর এক জন হেমন্তের দল জেএমএমের প্রবীণ নেতা, হাজি হুসেন আনসারি। তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তেও সম্মতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্য দু’জন, রাজ্য সরকারের জোট শরিক কংগ্রেসের যোগেন্দ্র সাহু ও আরজেডি-র সুরেশ পাসোয়ান।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

রাঁচি শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৪৮
Share:

রাজধর্ম পালন করলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যোগসাজসে অভিযুক্ত রাজ্য মন্ত্রিসভার প্রভাবশালী তিন মন্ত্রীকে আড়াল করার বদলে, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিলেন হেমন্ত সোরেন। তিন মন্ত্রীর এক জন হেমন্তের দল জেএমএমের প্রবীণ নেতা, হাজি হুসেন আনসারি। তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তেও সম্মতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্য দু’জন, রাজ্য সরকারের জোট শরিক কংগ্রেসের যোগেন্দ্র সাহু ও আরজেডি-র সুরেশ পাসোয়ান।

গত সপ্তাহে হাজারিবাগে ‘ঝাড়খণ্ড টাইগার’ নামে একটি জঙ্গি সংগঠনের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় ধৃত জঙ্গিরা জানায়, ওই জঙ্গি সংগঠন গড়েছেন ঝাড়খণ্ডের কৃষি মন্ত্রী যোগেন্দ্র। মাঝেমধ্যে সংগঠন চালানোর খরচও দেন মন্ত্রী।

Advertisement

খবর রটতেই চাঞ্চল্য ছড়ায়। সরব হয় বিরোধীরা। এমন পরিস্থিতিতে যোগেন্দ্রর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিলেন হেমন্ত। পুলিশ জানিয়েছে, কৃষি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দু-এক দিনের মধ্যেই এফআইআর রুজু করা হবে। রাজ্য পুলিশের আইজি (সিআইডি) সত্যনারায়ণ প্রধান জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই সিআউডি ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

অন্য দিকে, অগস্টের শেষ সপ্তাহে রাঁচিতে জাতীয় পর্যায়ের এক মহিলা খেলোয়াড় অভিযোগ তোলেন, ভুয়ো পরিচয়ে বিয়ে করার পর জোর করে তাঁর ধর্ম বদলের চেষ্টা করছে এক যুবক। অভিযুক্তের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের বড় বড় লোকেদের পরিচয় রয়েছে।

মহিলা জানিয়েছিলেন, তাঁর বিয়েতে ঝাড়খণ্ডের সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী হাজি হুসেন আনসারি, পযর্টন মন্ত্রী সুরেশ পাসোয়ান হাজির ছিলেন। দুই মন্ত্রী প্রথমে সে কথা অস্বীকার করেন। কিন্তু ভিডিও-ফুটেজে অভিযোগের সত্যতাই ধরা পড়ে। সাধারণ মানুষের ক্ষোভের দিকে তাকিয়ে, জেএমএমের প্রথম সারির নেতা তথা মন্ত্রিসভার সদস্য আনসারি এবং আরজেডি মন্ত্রী সুরেশ পাসোয়ানের বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন হেমন্ত। একই সঙ্গে সিবিআই তদন্তেও তিনি রাজি হয়েছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, গত কাল হাজি আনসারিকে ঘন্টাখানেক জেরা করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েছেন সুরেশও।

বিধানসভা ভোটের মুখে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্তের এ পদক্ষেপে দলের তরফে ভোটারদের কাছে ‘সুশাসনের’ সুস্পষ্ট বার্তা গিয়েছে বলে মনে করছেন জেএমএম নেতৃত্ব। দলের প্রথম সারির এক নেতার কথায়, “পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা করতে পারেননি, আমাদের নেতা তা-ই করে দেখালেন।”

বস্তুত, গত কয়েক মাসে পশ্চিমবঙ্গে বার বার এর বিপরীত ছবিটাই দেখা গিয়েছে। পাড়ুই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অভিযোগের আঙুল উঠেছে বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। কিন্তু তদন্তের নির্দেশ দূর, অনুব্রতের পাশে থাকার স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। ঘরে ঢুকে সিপিএমের মহিলাদের ‘রেপ’ করিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে রেহাই পেয়েছেন শাসক দলের সাংসদ তাপস পাল। আদালতের সমালোচনার মুখে পড়লেও, দলের ওই নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি তৃণমূল।

রাজনীতি ভুলে এ বার সংবিধানকেই এগিয়ে রাখলেন হেমন্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন