ফুলপুর ও গোরক্ষপুরে উপনির্বাচনে হারের মুখ দেখার পরে উত্তরপ্রদেশে ফের পরীক্ষার মুখে বিজেপি। তৃতীয় লিটমাস পরীক্ষাটি হবে ২৮ মে, কৈরানা লোকসভা আসনে। বিজেপি সাংসদ বিজেপির হুকুম সিংহের মৃত্যুতে উপনির্বাচন হচ্ছে এখানে। সাম্প্রতিক দু’টি উপনির্বাচনের মতোই এখানেও বিজেপিকে হারাতে বিরোধী শিবিরে তৎপরতা এখন তুঙ্গে। সূত্রের খবর, বিএসপি নেত্রী মায়াবতী ওই কেন্দ্রে প্রার্থী দেবেন না বলে এসপি নেতৃত্বকে কথা দিয়েছেন। এসপির প্রার্থীকে সমর্থন শুধু নয়, একসঙ্গে প্রচারও করবে বিএসপি। তবে বেসুরো গাইছেন জাঠ নেতা অজিত সিংহ।
এরই জেরে বিজেপি-বিরোধী জোটের প্রার্থী কে হবেন তা নিয়ে চলছে দড়ি টানাটানি। আরএলডি নেতা অজিত সিংহ চাইছেন তাঁর ছেলে জয়ন্ত চৌধুরিকে এই কেন্দ্রে প্রার্থী করতে। যিনি রাজ্য আরএলডির সভাপতিও বটে। অখিলেশ যাদব এই প্রস্তাবে রাজি নন। তিনি চান, নিজেদের প্রার্থী দিতে। সমাধান সূত্র বার করার জন্য তাই বৈঠক চলছে দফায় দফায়।
মায়াবতী–অখিলেশ জোটের কাছে কিছু দিন আগেই ফুলপুর ও গোরক্ষপুরে ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। এখন যখন লোকসভা নির্বাচন কড়া নাড়ছে, তার মধ্যে গোবলয়ের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই রাজ্যে বিজেপি যদি জেতা আসনও ধরে রাখতে না পারে, জাতীয় স্তরেও তার প্রভাব পড়বে। মায়াবতী–অখিলেশ মডেলের সাফল্য বারবার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অর্থ যোগী আদিত্যনাথ তথা মোদী-অমিত শাহের নেতৃত্ব নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠে যাওয়া। তাই মায়াবতী-অখিলেশ কেউই চাইছেন না কোনও ভাবেই বিরোধী ঐক্যে চিড় ধরুক।
গত লোকসভা ভোটে কৈরানায় বিজেপি জিতলেও এসপি ছিল দু’নম্বরে। প্রবল মোদী হাওয়ায় বিজেপির হুকুম সিংহ পেয়েছিলেন ৫ লক্ষ ৬৫ হাজার ভোট। এসপির নাহিদ হাসান ৩ লক্ষ ৩০ হাজার। অখিলেশরা এই হিসেবটিকেও সামনে রাখতে চাইছেন অজিতদের সঙ্গে দর কষাকষিতে।
এটা ঘটনা কৈরানা নির্বাচনী এলাকাটি জাঠ অধ্যুষিত। ১৭ লক্ষ ভোটারের মধ্যে সংখ্যালঘু মাত্র ৩ লক্ষ। জাঠ ভোটব্যাঙ্কের কথা তুলেই অজিত সিংহ ছেলেকে প্রার্থী করতে চাইছেন এখানে। সেই যুক্তি উড়িয়ে অখিলেশের দলের এক নেতা বলেন, ‘‘লোকসভা ও
উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার সর্বশেষ নির্বাচনে দেখা গিয়েছে, অজিত সিংহের আগের সেই প্রভাব আর নেই। তাঁর দলের ভোট লক্ষ্যণীয় ভাবে কমেছে। জাঠ ভোট বিজেপি শিবিরে চলে গিয়েছে। আমরা প্রার্থী দিলে বিজেপি মেরুকরণের রাজনীতিও করতে পারবে না।’’
কিন্তু আরএলডি শিবিরের বক্তব্য, জয়ন্তকে প্রার্থী করার জন্য তারা শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবে। তবে একান্তই তা না হলে যে তারা বিরোধী জোট ভেঙে বিজেপিকে সুবিধা করে দেবে, এমনও নয়। উত্তরপ্রদেশে আরএলডির মুখপাত্র অনিল দুবের কথায়, ‘‘নিজেদের প্রার্থী দিয়ে ভোটে লড়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি ঠিকই। কিন্তু বিজেপি-বিরোধী শিবির যাতে অটুট এবং শক্তিশালী থাকে সেটা নিশ্চিত করার দিকেও নজর রাখা হচ্ছে।’’