গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর। হাসপাতালে যাওয়ার পথে। ছবি সৌজন্য: টুইটার।
জম্মু ও কাশ্মীরের সোপিয়ান জেলায় কাশ্মীর পুলিশের এক স্পেশ্যাল পুলিশ অফিসারকে গুলি করে মারল জঙ্গিরা। শনিবার দুপুরে ওই পুলিশ অফিসারের বাড়ির সামনেই এই হামলার ঘটনাটি ঘটে। অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীরাই এই কাজ করেছে বলে জানা যাচ্ছে সংবাদমাধ্যম সূত্রে।
নিহত পুলিশ অফিসারের নাম খুশবু জান। দুপুর দুটো চল্লিশ মিনিট নাগাদ এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটায় জঙ্গিরা। দক্ষিণ কাশ্মীরের সোপিয়ান জেলার ভেহিল গ্রামে খুশবু জানের বাড়ির সামনেই হামলা চালায় বন্দুকবাজেরা। সঙ্কটজনক অবস্থায় তাঁকে একটি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানান, হাসপাতালে পৌঁছনের আগেই মারা গিয়েছেন খুশবু জান।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ‘ওঁর আঘাত খুবই গুরুতর ছিল। আমরা এই সন্ত্রাসের নিন্দা করি। এই কঠিন সময়ে আমরা ওঁর পরিবারের পাশে আছি।’
আরও পড়ুন: আমরা সবাই সুস্থ, ভাল আছি, বালাকোট বোমাবর্ষণে কোনও ক্ষতি হয়নি: মাসুদ আজহার
ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা। হত্যাকাণ্ডের পরই টুইট করে তিনি বলেছেন, ‘একজন মহিলা পুলিশ অফিসারকে তাঁর বাড়ির সামনেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার তীব্র নিন্দা করছি। একই সঙ্গে তাঁর পরিবার এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশে তাঁর সহকর্মীদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’’
এই জঙ্গি হামলার পরই পুরো এলাকা ঘিরে ফেলেছে ভারতীয় সেনা, জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ এবং সিআরপিএফ জওয়ানদের যৌথবাহিনী। জঙ্গিদের খুঁজে বের করতে শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান।
আরও পড়ুন: বালাকোটের সময়েই মায়ানমারে ঢুকে জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়ে এসেছিল ভারতীয় সেনা
গত চারদিনে এই নিয়ে পরপর তিন বার আঘাত হানল জঙ্গিরা। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগে ফারুক আবদুল্লার ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের এক কর্মীর উপর গুলিচালায় জঙ্গিরা।তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। একই দিনে ত্রাল-এ এক সাধারণ মানুষকে খুন করে জঙ্গিরা। বুধবার পুলওয়ামার ডোগরিপোরা এলাকায় এক স্থানীয় বাসিন্দাকে বাড়িতে ঢুকে অপহরণ করে কাশ্মীরি জঙ্গিরা। পরে একটি স্থানীয় জঙ্গল থেকে মেলে তাঁর মৃতদেহ।
এই ঘটনার পরে এসপিও-দের নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে। খুব সামান্য বেতনে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশে এসপিও-দের নিয়োগ করা হয়। বর্তমানে রাজ্য পুলিশে ৪৩০ জন মহিলা এসপিও রয়েছেন বলে সরকারি সূত্রে খবর। এসপিও-দের কাছে অস্ত্রও থাকে না। অথচ স্থানীয় গোয়েন্দা-তথ্য সরবরাহ করার ক্ষেত্রে তাঁরাই যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন তা স্বীকার করেন বাহিনীর কর্তারা। গত বছরে বেশ কয়েক জন এসপিও-র হত্যার পরে তাঁদের নিরাপত্তা ও কাজের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কয়েক জন চাকরিও ছাড়েন। তার পরে সরকার বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেয়। কিন্তু এসপিও-দের দাবি, অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি।