Prime Minister

Narendra Modi's Convoy: সীমান্তপারের সন্ত্রাস, কোর্টে যুক্তি কেন্দ্রের

কৃষক বিক্ষোভে প্রধানমন্ত্রীর কনভয় আটকে যাওয়া নিয়ে গত দু’দিন ধরেই কেন্দ্র বনাম পঞ্জাব সরকার, বিজেপি বনাম কংগ্রেসের চাপানউতোর চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:০৫
Share:

পঞ্জাবে আটকে পড়েছিল প্রধানমন্ত্রীর কনভয়। ফাইল চিত্র।

পঞ্জাবে দেশের প্রধানমন্ত্রীর কনভয় আটকে যাওয়ায় ‘আন্তর্জাতিক মাপের অস্বস্তি’ তৈরি হয়েছে বলে সুপ্রিম কোর্টে যুক্তি দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কেন্দ্রের দাবি, এই ঘটনা ‘অভূতপূর্ব’। এর পিছনে ‘সীমান্ত পারের সন্ত্রাসবাদ’ থাকতে পারে।

Advertisement

উল্টোদিকে পঞ্জাব সরকার আজ সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ তুলেছে, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে এসপিজি। পঞ্জাব সরকার নিজেই গোটা ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু এখন কেন্দ্রীয় সরকার ঘটনায় দায় পঞ্জাবের পুলিশ-প্রশাসনের উপরে চাপাতে চাইছে।

ফিরোজপুরের সরকারি কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে কৃষক বিক্ষোভে প্রধানমন্ত্রীর কনভয় আটকে যাওয়া নিয়ে গত দু’দিন ধরেই কেন্দ্র বনাম পঞ্জাব সরকার, বিজেপি বনাম কংগ্রেসের চাপানউতোর চলছে। আজ সেই বাগ্‌যুদ্ধই শীর্ষ আদালতে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণার বেঞ্চের সামনে উঠে এসেছে। কেন্দ্র ও পঞ্জাব, দুই সরকারই ঘটনার তদন্তে কমিটি গঠন করেছিল। আজ দুই সরকারই একে অপরের কমিটির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে কেন্দ্র বনাম রাজ্যের এই বিবাদে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ মোদী সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে, নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির বিষয়ে কেন্দ্রের কী মতামত। পঞ্জাবের অ্যাডভোকেট জেনারেল ডি এস পাটওয়ালিয়া জানিয়েছেন, তাঁরা নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি চান। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানিয়্ছেন, তাঁরা আগামিকাল নিজেদের উদ্বেগের জায়গাগুলি জানাবেন। তাঁর যুক্তি, এই ঘটনায় তদন্তের ভার সন্ত্রাসবাদের তদন্তের জন্য গঠিত এনআইএ-কে দেওয়া উচিত। মেহতার যুক্তি, ‘শিখ ফর জাস্টিস’ নামে একটি সংস্থা গণ্ডগোল পাকানোর ডাক দিয়েছিল। এর সঙ্গে সীমান্ত পারের সন্ত্রাসবাদের যোগ থাকতে পারে। এটি দেশের প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক স্তরে অস্বস্তিতে পড়ার এক অভূতপূর্ব ঘটনা।

এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সোমবার এ নিয়ে ফের শুনানি হবে। সোমবার পর্যন্ত কেন্দ্র ও রাজ্যের কমিটি কোনও পদক্ষেপ করবে না বলেও মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সফর সংক্রান্ত যাবতীয় নথি সংরক্ষণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে প্রধানমন্ত্রীর সফর সংক্রান্ত যাবতীয় নথি নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। পঞ্জাব পুলিশ, এসপিজি, কেন্দ্র ও রাজ্যের বিভিন্ন সংস্থাকে হাই কোর্টের সঙ্গে সহযোগিতা করতে বলেছেন তিনি। কী কী নথি ও তথ্য সংরক্ষণ করা দরকার, তার সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চণ্ডীগড় পুলিশের ডিজি ও এনআইএ-র ডিজি নির্বাচিত এক আধিকারিককে।

বুধবার পঞ্জাবে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় ত্রুটি নিয়ে ‘লইয়ারস ভয়েস’ নামের একটি সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল। আর্জি ছিল, সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে তদন্ত এবং পঞ্জাবের মুখ্যসচিব, পুলিশের ডিজি-র সাসপেনশন। সংগঠনের তরফে আইনজীবী মনিন্দর সিংহ আজ যুক্তি দেন, কোনওভাবেই প্রধানমন্ত্রীর কনভয় আটকাতে পারে না। এটা নিরাপত্তায় চূড়ান্ত পর্যায়ের বিচ্যুতি। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মেহতাব সিংহ গিলের নেতৃত্বে পঞ্জাব সরকারের তৈরি তদন্ত কমিটি নিয়ে মনিন্দর বলেন, এই ঘটনার পেশাদার তদন্ত হওয়া দরকার। এ ছাড়া, ওই কমিটির প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে। সে কারণে ওই বিচারপতি এক পুলিশ অফিসারকে নিশানা করেছিলেন বলে সুপ্রিম কোর্টও মত দিয়েছিল।

পঞ্জাবের হয়ে পাটওয়ালিয়া পাল্টা যুক্তি দেন, এই মামলার পিটিশনে রাজনীতির গন্ধ রয়েছে। এই মামলার আগেই পঞ্জাব সরকার তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। রাজ্য সরকার বিষয়টিকে লঘু করে দেখছে না। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী নিজে বলেছেন, নরেন্দ্র মোদী আমাদেরও প্রধানমন্ত্রী। বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে কিছু বলার নেই। কিন্তু কেন্দ্রের কমিটিতেও এসপিজি-র আইজি রয়েছেন। যে এসপিজি-র দিকেই ব্যর্থতার অভিযোগের আঙুল। তিনি নিজেই কী ভাবে তদন্ত করবেন?

কেন্দ্রের হয়ে সলিসিটর জেনারেল মেহতা পঞ্জাবের পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে রাস্তায় যান, পুলিশের ডিজি তা পর্যবেক্ষণ করেন। এক্ষেত্রে ডিজি-ই সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কনভয় যাওয়ার আগে পুলিশের একটি ‘ওয়ার্নিং কার’ থাকে। কোনও বিপদ থাকলে সাবধান করার জন্য। এক্ষেত্রে জেলার এসপি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে চা খাচ্ছিলেন। পুলিশের ওয়ার্নিং কার কিছু জানায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন